দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কর্মসূচি রয়েছে বাংলায়। জানা যাচ্ছে, ওই দিন সরকারি কোনও প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন মোদী। ফলে তার পরেই ভোট ঘোষণা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু এর মধ্যেই খবর, আজ শুক্রবার রাত থেকেই রাজ্যে আসছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
সূত্রের খবর আজ রাতেই রাজ্যে আসছে ১২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। ২৫ তারিখের মধ্যে রাজ্যে আসবে ১২৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। এর মধ্যে থাকছে সিআরপিএফ, সিআইএসএফ, বিএসএফ। এছাড়াও থাকছে এসএসবি, আইটিবিপি।
গতকালও নামখানা থেকে অমিত শাহ বলেছিলেন এবার বাংলায় ভোটের দিন দিদির গুণ্ডারা রাস্তায় থাকবে না। সবাই নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। তাছাড়া রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম যেদিন দিল্লি গিয়ে শাহের সঙ্গে দেখা করেন সেদিন রাতে ফিরে জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কথা দিয়েছেন, এবার বাংলার ভোট হবে সন্ত্রাসমুক্ত।
রাজ্যের ৩৫টি পুলিশ জেলায় পাঠানো হবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। বিভিন্ন এলাকায় রুটমার্চ করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা সাধারণ মানুষকে বল-ভরসা যোগাবেন।
স্বাভাবিকভাবেই এই খবরে জোর জল্পনা তৈরি হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, খুব তাড়াতাড়িই ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হতে চলেছে। সূত্রের খবর, আগামী রবিবার থেকেই বিভিন্ন জায়গায় এরিয়া ডোমিনেশন, ভোটারদের মনোবল বাড়ানোর কাজ শুরু হবে। এক পুলিশ কর্তা বলেছেন, ‘অ্যাডভান্স ফোর্স হিসাবেই এরা আসছেন।’
গত দুমাসে উপ মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার সুদীপ জৈন দুবার রাজ্য সফরে এসেছেন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরার নেতৃত্বে কমিশনের ফুল বেঞ্চও রাজ্যে এসেছিল। ভোট ঘোষণা হতে যখন এখনও কয়েকদিন বাকি তখন রাজ্যে আসতে শুরু করছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
বাংলায় নির্বাচনের দিন সন্ত্রাসের ইতিহাস বহু পুরনো। কংগ্রেস আমল, বাম জমানা বা তৃণমূলের রাজত্ব– সেই রক্তাক্ত ভোটের কোনও পরিবর্তন হয়নি বলেই মত অনেকের। গত পঞ্চায়েত ভোটে মৃত্যুর পর মৃত্যু হয়েছিল রাজ্যে। এখন দেখার একুশের ভোটে ঠিক কতটা সন্ত্রাসমুক্ত থাকে বাংলা।
সম্প্রতি সামনে যে যে রাজ্যেগুলিতে ভোট রয়েছে সেখানে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভল্লার সঙ্গে বৈঠকে বসেন নির্বাচন কমিশনের কর্তারা। কলকাতায় ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন আসার আগেই বৈঠক এই বৈঠক হয়েছিল। নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের তরফে চিফ ইলেকশন কমিশনার সুনীল অরোরা আগেই বলেছিলেন, ‘নির্বাচন কমিশন জানে, কী ভাবে এবারের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট করাতে হবে।’ একদা মাও অধ্যুষিত জেলা যেমন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ায় জেলাগুলিতে প্রথম থেকেই বেশি বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে বলেই খবর।
গত লোকসভা ভোটে এই সংখ্যাটা বাহিনী সংখ্য়া ছিল ৭৫০। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, লোকসভা ভোটের থেকেও বেশি সংখ্যক আধাসেনা রাজ্যে আনা হবে। জেলা পুলিশের কর্তারা বলছেন, এরিয়া ডমিনেশনের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে বেশি করে টহলদারির কথা বলা হয়েছে। মূলত, সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয় থাকলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা তা কাটানোর জন্য কথা বলবেন। সঙ্গে থাকবেন জেলা পুলিশও।