দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ মাঝরাতে বিশাল পুলিশ বাহিনী এল এসএসসি আন্দোলনের মঞ্চে! অনশনকারীদের জানানো হল, অনশন প্রত্যাহার না করলে ‘ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে।

বুধবার সন্ধেবেলাতেই ঘুরে গেছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। সহানুভূতি প্রকাশ করে আশ্বাস দিয়েছেন, জুন মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু সঠিক পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি না-পাওয়া পর্যন্ত অনশন ভাঙতে রাজি হননি এসএসসি-চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁরা সাফ জানিয়ে দেন, পাকা প্রতিশ্রুতি পাওয়ার আগে অনশন এখনই বন্ধ করছেন না।

এর পরেই রাত পৌনে বারোটা নাগাদ প্রেস ক্লাবের সামনে অনশনকারীদের কাছে পৌঁছন ডিসি সাউথ মীরাজ খালিদ-সহ বিশাল পুলিশবাহিনী। অনশন প্রত্যাহার করে নেওয়ার নির্দেশ দেন ডিসি নিজে। ডিসি-কে অনশনকারীরা সাফ জানিয়ে দেন, পাকা প্রতিশ্রুতি পাওয়ার আগে এখনই উঠছেন না তাঁরা। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, সকাল সাতটার মধ্যে অনশন প্রত্যাহার করে জায়গা খালি না করলে, তাঁরা ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবেন। গোটা এলাকা পুলিশে ছয়লাপ, ছড়াচ্ছে উত্তেজনা।

অনশনকারীদের তরফে সাফ জানানো হয়েছে, তাঁরা নির্দিষ্ট কিছু দাবিতে অনশনে বসেছিলেন। বহু বছর বহু রকম ভাবে আবেদন-নিবেদন করে কাজ না হওয়ায়, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থায় অনশনে বসেছিলেন। তাঁদের দাবি, অভিযোগ এবং প্রশ্ন তাঁরা বহু বার প্রশাসনের কাছে দিয়েছেন মৌখিক এবং লিখিত উভয় ভাবেই। এই অবস্থায় তাঁদের কোনও প্রশ্নেরই কোনও উত্তর না পেলে এবং কোনও অভিযোগেরই বিচার না হলে, তাঁরা লড়াই ছাড়বেন না।

এক অনশনকারী দাবি করেন, সন্ধেয় মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এসেছিলেন ঠিকই, কিন্তু তিনি নিজে সরাসরি আমাদের বক্তব্য শোনেনি। আমাদের দাবি মানার প্রতিশ্রুতিও দেননি। তিনি বরং আমাদেরকে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় বিকাশ ভবনে যেতে বলেছেন। সে ক্ষেত্রে আমরা এখনই কী করে ছাড়ব অনশন মঞ্চ? কাল ১২টা অবধি অপেক্ষা করে বিকাশ ভবনে যাওয়াটা তো মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীরই নির্দেশ৷

অন্য এক অনশনকারী জানান, পুলিশ এসে জোর করে ত্রিপল এবং মশারি খুলিয়ে, উঠে যাওয়ার কথা বলে। হুমকি দেয়, সকাল সাতটার মধ্যে জায়গা খালি করতে হবে। অনশনকারীর কথায়, কাল আমাদের দেখা করার কথা বিকাশ ভবনে। তার মাঝখানে এমন কী ঘটল, যে এই রাতের অন্ধকারে এত পুলিশ পাঠাতে হল! এখানে মহিলারা আছেন। কিছু বাচ্চাও আছে। পুলিশের এই ভূমিকার নিন্দা করছি আমরা। এবং নিশ্চিত করছি, কোনও অবস্থাতেই অনশন প্রত্যাহার করব না।

পুলিশ সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আগামী কাল যেহেতু অনশনকারীদের কথা কমিটি শুনবে, আলোচনা হবে, তাই আজ রাতে অনশন তুলে নেওয়ার কথা বলতে এসেছে তারা। ঘটনাস্থলে মোতায়েন এক পুলিশ কর্মী বলেন, “সকাল সাতটা অবধি সময় দেওয়া হয়েছে অনশনকারীদের। তার মধ্যে অনশন তুলে নিতে হবে বলে নির্দেশ রয়েছে তাঁদের কাছে৷

অন্য দিকে, বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও শিক্ষক সংগঠনের সূত্রে খবর মিলছে, কাকভোর থেকে আন্দোলনকারীদের সংহতি জানাতে প্রেস ক্লাবে জড়ো হবেন বহু মানুষ। সাধারণ নাগরিক সমাজও অনশন মঞ্চে পৌঁছনোর ডাক দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

মধ্যরাতে প্রেস ক্লাবের সামনে পুলিশি হানার পরেও অনশন ভাঙল না। পুলিশের তরফ থেকে সময় দেওয়া হয়েছিল বৃহস্পতিবার সকাল সাতটা পর্যন্ত। কিন্তু অনশনকারীদের তরফে পাল্টা সময় চাওয়া হয়। পুলিশকে জানিয়ে দেওয়া হয়, আগে বিকাশভবন গিয়ে প্রতিনিধি দল কথা বলবে, তারপর যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেওয়া হবে। এদিন সকালে এক অনশনকারী বলেন, আমাদের বেলা বারোটায় বিকাশ ভবনে সময় দেওয়া হয়েছে। সাড়ে এগারোটার মধ্যে আমরা পৌঁছব। কী কথা হয়, তার ভিত্তিতে বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে পরবর্তী পদক্ষেপ জানানো হবে।
এখন সব নজর বেলা বারোটার বিকাশ ভবনের বৈঠকের দিকেই। ছবি- সংগৃহীত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here