দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃনোভেল করোনাভাইরাস কীভাবে শ্বাসযন্ত্রের কোষগুলিকে আক্রমণ করছে, কীভাবে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ, ছবির মাধ্যমে তা বুঝিয়ে প্রকাশ করলেন বিজ্ঞানীরা। সে ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ফুসফুসের ভিতরের প্রতিটি কোষে একাধিক সংখ্যক ভাইরাস থাবা বসাচ্ছে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে।
নর্থ ক্যারোলিনা চিনড্রেন্স রিসার্চ ইনস্টিটিউট ইউনিভার্সিটির গবেষক ক্যামিলি এর গবেষণাগারে এই সার্স-কোভ ২ জীবাণুর সংক্রমণের ছবি তুলেছেন এবং তা গ্রাফিক্যাল ব্যাখ্যা-সহ প্রকাশ করেছেন। এই প্রথম এত খুঁটিয়ে জানা গেল ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটানোর পথটি।
জানা গেছে, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপে ৯৬ ঘণ্টা ধরে লাগাতার স্টাডি করায় ধরা হয়েছে শ্বাসযন্ত্রে ভাইরাসের সংক্রমণের ছবি। প্রথমে শ্বাসযন্ত্রের কোষ থেকে কলা, কলা থেকে গোটা যন্ত্রে ছড়িয়ে পড়ার ছবি দেখা গিয়েছে সেখানে।
নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে এই গবেষণা-পরবর্তী ছবি প্রকাশিত হয়েছে। ছবিগুলি বোঝার সুবিধার জন্য বিভিন্ন রং করা হয়েছে। সেই সঙ্গে স্পষ্ট দেখানো হয়েছে, ফুসফুসের বাইরের দিকে এপিথেলিয়াল কোষের গায়ে লোমশ অংশে মিউকাসের মতো পদার্থ তৈরি করছে ভাইরাস। সেখানেই বাড়ছে সংখ্যা। শুধু তাই নয়, সেগুলি আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি আসা অন্য ব্যক্তির টিস্যুগুলিতে সংক্রমণ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।
এই ছবি তৈরির পেছনে গবেষকদের মূল উদ্দেশ্য ছিল মানুষের দেহে করোনাভাইরাসের গঠন এবং ঘনত্ব নির্ণয় করা। তা করতে সফল হয়েছেন তাঁরা। এই ছবি দেখার পরে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই প্রথম এত স্পষ্ট ছবি মিলল ভাইরাসের সংক্রমণের পদ্ধতির। এতে প্রতিরোধী গবেষণা করতে আরও সুবিধা হবে।
গবেষকরা জানিয়েছেন এই ছবি তৈরির গবেষণাটি মানুষের শ্বাসযন্ত্রের অভ্যন্তরে প্রতিটি কোষে করোনার যে জীবাণু তৈরি হচ্ছে ও বাড়ছে সংখ্যায়, তা দেখতে ও বুঝতে খুবই জরুরি ভূমিকা পালন করবে। ছবিতে একথাও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, যে একসঙ্গে বেশি সংখ্যক জীবাণু আক্রমণ করলে, তা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলিতে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও যথেষ্ট বেশি।
ফলে যতদিন না ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে, ততদিন এ ভাইরাস যাতে শরীরে ঢুকতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করাই একমাত্র উপায়। কারণ একবার শরীরে ঢুকে শ্বাসযন্ত্র পর্যন্ত পৌঁছে গেলে, তাকে রোখা সবসময় সম্ভব নাও হতে পারে। তাই সর্বদা মাস্কের ব্যবহার এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই শ্রেয়।