সরকারি স্বীকৃতি ও সহযোগিতা চায় বনগাঁর প্রাচীন কালিতলার পৌষমেলা

0
1068
বিশ্বজিৎ কুন্ডু:‌ বনগাঁ, ১৩ জানুয়ারি— মনস্কামনা পূরণ করতে স্থানীয়দের পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকে বনগাঁর সাতভাই কালীতলার পৌষমেলায় ভিড় জমাচ্ছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। গোটা পৌষ মাস ধরে পুরাতন বনগাঁ এলাকায় ইছামতী নদীর ধারে শনি এবং মঙ্গলবার এই মেলা বসছে। সঙ্গে পুজো দেবার লম্বা লাইন।
শোনা যায়, বহু বছর আগে এলাকার সাত ডাকাতভাই ডাকাতি করতে যাবার আগে এই কালীতলায় পুজো দিয়ে ডাকাতি করতে যেত। কাজ সেরে ফের এই মন্দিরে হাজির হতো। আর তারথেকেই পরবর্তিতে মুখেমুখে এই মন্দিরটি 'সাতভাই কালীতলার মন্দির'‌ নামে পরিচিতি পায়।

 এই মন্দিরে কালীমায়ের সেই অর্থে কোনও বিগ্রহ নেই। প্রাচীন বটগাছের গোড়ায় মায়ের অবয়ব তৈরি করে সেখানেই নিত্য পুজোর ব্যবস্থা হয়। মন্দিরে আসা মানুষের বিশ্বাস, এখানে মানত করলে তা পূরণ হয়। মনস্কামনা পূরণ করতে মন্দিরে পুজো দেবার পাশাপাশি প্রাচীন বটগাছে দড়ির সঙ্গে ঢিল বাঁধেন ভক্তরা। বর্তমানে এই কালীমন্দিরের নাম দূরদূরান্তে ছড়িয়ে পরেছে। ফলে সারা বছরের পাশাপাশি গোটা পৌষ মাস ধরে পুজো দেবার জন্য এখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিড় জমান। 

পয়লা পৌষ শুরু হয়ে শেষ হয় পৌষ সংক্রান্তির দিন। তার মাঝে পৌষ মাসের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার বিশেষভাবে পুজো দেবার রেওয়াজ রয়েছে। আর এই মাসের বিশেষ দিনগুলিতে মন্দির এবং ইছামতি নদীর মাঝের মাঠে মেলা বসে। মাঠের এক পাশে খোলা আকাশের নিচে খিঁচুড়ি, তরকারি, চাটনি, পায়েস নানা করে তা প্রসাদ হিসেবে সাধারনের মধ্যে বিলি করা হয়। তার তাতে পূর্ণ লাভ হয় বলে বিশ্বাস মানুষের। গত কয়েকবারের মতো এ বছরও প্রায় ৪ হাজার ভক্তকে খিঁচুড়ি প্রসাদ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করে বনগাঁ 'বান্ধব সমাজ'‌ নামে একটি সংস্থা। একইভাবে বনগাঁ পুরসভা সহ ব্যক্তিগত এবং সংস্থার উদ্যোগে একই ধরনের আয়োজন করা হয় গত কয়েক বছর ধরে। মেলা সুষ্ঠভাবে পরিচালনার জন্য কমিটি গড়ে তার সদস্য, সিভিক ভলান্টিয়ার, বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী, পুলিস কর্মী নিয়োগ করা হয়।

 বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ জানান শনিবার মেলা প্রাঙ্গণে স্বামী বিবেকানন্দের একটি মূর্তী উন্মোচন করেন দক্ষিণেশ্বরের পুরোহিত সুমন্ত চট্টপাধ্যায় এবং এদিন ৫০০ কম্বল বিতরণ করা হয়, পাশাপাশি ৫০০০ পূর্ণার্থীদের মধ্যে পুষ্পান্ন বিতরণ এর মাধ্যমে স্বর্গীয় ভূপেন্দ্রনাথ শেঠ (প্রাক্তন বিধায়ক বনগাঁ) 

এর স্মৃতি উদ্দ্যেশ্যে বিবেকানন্দের মূর্তি স্থাপনের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করা হয়৷ এতো বড় আয়োজন হলেও মেলা কমিটির পক্ষে মন্দিরের পুরোহিত প্রশান্ত চক্রবর্তীর দাবি, প্রতি বছর এই পৌষমেলায় প্রায় ১৫ থেকে ২০ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। মেলা কমিটির কর্তাদের দাবি, চার শতাধীক প্রাচীন এই মেলাকে স্বীকৃতি দিয়ে পাশে দাঁড়াক রাজ্য সরকার।
                                         ——————————————
Previous articleরবীন্দ্রনাথ কে নিয়ে ছবি করতে চান চিত্র পরিচালক তপন সাহা
Next articleরেলগেট বিভ্রাট,যানজটে নাকাল স্থানীয় মানুষ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here