‘বাংলার কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে’, প্রধানমন্ত্রীকে জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

0
389

হাইলাইটস

  • পশ্চিমবঙ্গের কোভিড পরিস্থিতি ঠিকমতো সামাল দিয়েছে রাজ্য সরকার।
  • দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিয়ো বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে এমনটাই দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
  • এ দিন বিভিন্ন রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পশ্চিমবাংলায় ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষের শরীরে এই মুহূর্তে অ্যাকটিভ রয়েছে করোনাভাইরাস। মৃত্যু হয়েছে আট হাজারেরও বেশি মানুষ। প্রতি দশ লক্ষ মানুষের নিরিখে আক্রান্ত হচ্ছেন ৪৫৮২ মানুষ। সব মিলিয়ে, সারা দেশে করোনা আক্রান্ত হওয়া রাজ্যগুলির মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে এ রাজ্য। এমনটাই বলছে পরিসংখ্যান।
দেখা গেছে, পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে বেশি সংক্রমণ নিয়ে প্রথম তিনে রয়েছে, মহারাষ্ট্র, কেরালা, দিল্লি। এই তিন রাজ্যে মোট করোনা সংক্রমণের সংখ্যা যথাক্রমে ৮২ হাজার ৫২১, ৬৫ হাজার ৯৮২ এবং ৪০ হাজার ২১২। এ তিন রাজ্যে মোট মারা গেছেন যথাক্রমে ৪৬ হাজার ৬২৩, ২০৪৯ এবং ৮৩৯১।

ঠিক এমনই পরিস্থিতিতে আজ, মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, যে কোনও রকমের টিকাকরণ প্রোগ্রামের জন্য পশ্চিমবঙ্গ পুরোপুরি তৈরি। প্রশিক্ষিত ও অভিজ্ঞ স্বাস্থ্যকর্মী এবং সবরকম পরিকাঠামো আছে রাজ্যের। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা কেন্দ্রের সঙ্গে এবং অন্য যে কোনও সংস্থার সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। ভ্যাকসিন আসার পরেই তা যাতে যত দ্রুত সম্ভব সকলের কাছে পৌঁছয়, তা নিশ্চিত করাটাই আমাদের প্রথম ও প্রধান উদ্দেশ্য।”

মুখ্যমন্ত্রী এদিনের বৈঠকে আরও জানান, দুর্গাপুজো, কালীপুজো, ছটপুজোর মরসুমের পরেও এ রাজ্যে করোনা পজিটিভ হওয়ার রেট কমছে। কমছে মৃত্যুহারও। একইসঙ্গে বাড়ছে ডিসচার্জ রেটও। একাধিক রাজ্য ও অন্য দেশের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে এ রাজ্যের। অন্য রাজ্য থেকে এ রাজ্যে চিকিতসা করাতে আসা রোগীর সংখ্যাও কম নয়। তার পরেও রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি যেখানে দাঁড়িয়ে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।


একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন সব স্তরের প্রথম সারির করোনাযোদ্ধাদের কথাও। মনে করিয়ে দেন, করোনায় যত মৃত্যু হয়েছে তার অনেকটারই কারণ কো-মর্বিডিটি, যা এখন প্রমাণিত। তিনি জানান, রাজ্যের আশা কর্মীরা ইতিমধ্যেই ৪৫ কোটি পরিবারে ঘুরে ঘুরে স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা প্রচার করেছেন। তবে এই কোভিড যুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকার যে পর্যাপ্ত আর্থিক সাহায্য করছে না রাজ্যগুলিকে, তাও উল্লেখ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

পশ্চিমবঙ্গের কোভিড পরিস্থিতি ঠিকমতো সামাল দিয়েছে রাজ্য সরকার। দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিয়ো বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে এমনটাই দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন বিভিন্ন রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনার জন্য আট মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মঙ্গলবার ভার্চুয়াল বৈঠক করেন নরেন্দ্র মোদী। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন, নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) তথা কেন্দ্রের কোভিড টাস্ক ফোর্সের প্রধান ভি কে পাল-সহ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আধিকারিকরা। মূলত করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আটকানো এবং কোভিড টিকা বণ্টনের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাত, হরিয়ানা, রাজস্থান, ছত্তীশগঢ় এবং কেরালার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। বিভিন্ন রাজ্যে কেন্দ্রের জিএসটি যে বকেয়া রয়েছে, তার কথাও প্রধানমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

এ দিন প্রধানমন্ত্রীকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানান, ‘১০ নভেম্বর তৃতীয় স্রোতে দিল্লিতে করোনা সংক্রমণ শীর্ষ অর্থাত্‍‌ ৮৬০০-তে পৌঁছয়। তার পর থেকে সংক্রমণ ও সুস্থতার হার ক্রমে বেড়েছে। আশা করছি এই ট্রেন্ডই বজায় থাকবে।’

মঙ্গলবার সকালে প্রকাশিত মেডিক্যাল বুলেটিনে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৭,৯৭৫ জনের শরীরে মিলেছে করোনাভাইরাস। নয়া সংক্রমণে মোট আক্রান্তের সংখ্য়া হয়েছে ৯১,৭৭,৮৪০ জন। এখনও চিকিত্‍‌সাধীন রয়েছেন ৪,৩৮,৬৬৭ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৮৬,০৪,৯৫৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪২,৩১৪ জন। এখনও পর্যন্ত দেশে সুস্থতার হার ৯৩.৭৬%। মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১,৩৪,২১৮। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৪৮০ জনের। মৃতের হার ১.৪৬ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১০,৯৯,৫৪৫ জনের কোভিড পরীক্ষা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক।

Previous articleশুভেন্দুর পদযাত্রায় যোগ দিলেন দুই তৃণমূল বিধায়ক ফের জল্পনা
Next articleপ্রেমে প্রতারিত হওয়ার সম্ভবনা, অর্থপ্রাপ্তিও হতে পারে জানুন আজকের রাশিফল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here