দেশের সময় ওযেবডেস্কঃ সোমবার নবান্নে ক্যাবিনেট বৈঠকের পরেই বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কনভয় পৌঁছে গেল অরণ্য ভবনে। আর প্রথম দিনই বনদফতরের প্রধান সচিবকে নতুন বনমন্ত্রী নির্দেশ দিলেন, বনসহায়ক নিয়োগ পদে যে কারচুপি হয়েছিল তার দ্রুত তদন্ত করতে হবে।
একথা সংবাদমাধ্যমেও জানিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়। তাঁর কথায়, মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই তদন্ত শুরুর নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমি আজকে সচিবকে বলেছি, সেই কাজ দ্রুত করতে হবে। তদন্তে যাঁদের নাম উঠে আসবে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে রেয়াত করা হবে না।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কয়েক দিন পরের ঘটনা। মমতা সেদিন ছিলেন আলিপুরদুয়ারে। উত্তরবঙ্গের সেই সভা থেকে দিদি বলেছিলেন, “বনসহায়ক নিয়োগ পদে কারচুপি হয়েছে। আমি তো এত কিছু জানতাম না। এখন সব জানতে পারছি। এই ঘটনার তদন্ত হবে। কারা কারা যুক্ত ছিল, কী ভাবে কার থেকে কী নিয়ে সেই নিয়োগ হয়েছিল তা বের করা হবে।”
মমতার সেই বক্তৃতার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাজীবের সভা ছিল হুগলির ধনেখালিতে। সেই সভা থেকে রাজীব বলেছিলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আমায় কার সুপারিশে নিয়োগের কথা বলেছিলেন, কবে কখন মেসেজ পাঠিয়ে বলেছিলেন বীরভূমের কোন নেতার সুপারিশ মেনে লোক নিয়োগ করত, সব রাখা আছে। আমি মুখ খুলি না। যদি খোলান তাহলে আমিও বলতে পারি।”
তারপর আর সেসব নিয়ে বিশেষ নড়নচড়ন চোখে পড়েনি। কারণ ফেব্রুয়ারির ২৬ তারিখ ভোট ঘোষণা করে দেয় নির্বাচন কমিশন। কিন্তু ডোমজুড়ের ভোটের প্রচারে গিয়ে রাজীবের নাম না করে আরও বিস্ফোরক অভিযোগ করেন মমতা। সেই তালিকায় ছিল বনসহায়ক নিয়োগে দুর্নীতি, কলকাতা, দুবাইতে সম্পত্তি—ইত্যাদি প্রভৃতি।
তারও পাল্টা দিয়েছিলেন রাজীব। বলেছিলেন হলফনামায় যা দাখিল করা আছে তার বাইরে সম্পত্তি পেলে যা শাস্তি দেবেন মাথা পেতে নেব! সঙ্গে এও বলেছিলেন, সেচ মন্ত্রী থাকাকালীন কার কার নাম ভাঙিয়ে কে কাটমানি চাইতে আসত সব জানা আছে। সেসব করতে দিইনি বলেই আমায় সেচ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
একুশের ভোটে ডোমজুড়ে রাজীব হেরে গিয়েছেন। আর তারপরই যেন প্রাক্তন বনমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতার উপর চাপ বাড়ানো শুরু করলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তবে এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানার জন্য রাজীব বন্দ্যোয়াপধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তাঁর প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেলে এই প্রতিবেদনে আপডেট করা হবে।