দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনা আবহের মধ্যেই দিওয়ালি উত্সবে মেতে উঠেছে দেশবাসী। গত সাত বছর ধরে সেনা জওয়ানদের সম্মান জানাতে প্রদীপ জ্বালান প্রধানমন্ত্রী। এবারেও অন্যথা হল না। শনিবার রাজস্থানের জয়সলমীরে সীমান্তরক্ষী ও সেনা-জওয়ানদের সঙ্গে সীমান্তের লোঙ্গেওয়ালা সেনা চৌকিতে দিওয়ালি উদযাপন করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) বিপিন রাওয়াত, সেনাপ্রধান এমএম নরবণে, এয়ার চিফ মার্শাল আরকেএস ভাদোড়িয়া এবং বিএসএফের ডিজি রাকেশ আস্থানা।
দিওয়ালির আগেই কাশ্মীর সীমান্তে পাকিস্তানি সেনার হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে হল ১১। শুক্রবার রাতে পাক শেলের আঘাতে আরও এক সেনা শহিদ হন। সবমিলিয়ে বিএসএফের এক অফিসার সহ পাঁচ জওয়ান পাকিস্তানি গোলায় শহিদ হয়েছেন। এ ছাড়া আর ছয় সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে এদিনের পাক হামলায়। সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে শুক্রবার দিনভর একাধিক সেক্টরে বিনা প্ররোচনায় ব্যাপক ভাবে গোলাবর্ষণ করেছে পাকসেনা৷
এদিন দেশবাসীর উদ্দেশ্য দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়ে ট্যুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার সীমান্তে পাক হানায় শহিদ সেনাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি লিখেছেন, এই দিওয়ালিতে আমাদের দেশের জন্য যাঁরা নির্ভয়ে সুরক্ষা দিয়ে চলেছেন তাঁদের সম্মানে প্রদীপ জ্বালাই। তাঁদের সাহসিকতার জন্য সম্মান জানাতে বিশ্বের কারোর কাছেই কোনও শব্দ নেই। সীমান্তে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের পরিবারের প্রতি আমরা সমান সম্মান জানাচ্ছি৷
India is proud of our forces, who protect our nation courageously. https://t.co/3VyP0WusDf
— Narendra Modi (@narendramodi) November 14, 2020
#WATCH: Whenever history on the excellence of soldiers will be written and read, the Battle of Longewala will be remembered: PM Narendra Modi in Jaisalmer, #Rajasthan pic.twitter.com/d6KSUw7bzZ
— ANI (@ANI) November 14, 2020
#WATCH: Today India kills terrorists & their leaders by entering their homes. World now understands that this nation won't compromise with its interests, not at any cost. This repute & stature of India is all due to your strength & valour: PM Modi in Jaisalmer. pic.twitter.com/3jZq8Yaokh
— ANI (@ANI) November 14, 2020
চলতি বছরে, এই নিয়ে দুবার সেনা-জওয়ানদের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন নরেন্দ্র মোদী। এই জুলাই মাসে, লাদাখে সেনা ছাউনিতে আচমকা গিয়েছিলেন। জুন মাসের গোড়াতেই লাদাখ সীমান্তের গালওয়ান উপত্যকায় চিনের আচমকা হামলায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২০জন সেনা শহিদ হয়েছিলেন। পাল্টা জবাব দিতে পিছু পা হয়নি ভারতও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনও লাদাখ সীমান্ত নিয়ে দোলাচলে রয়েছে দুই দেশ। লাদাখে জওয়ানদের মনোবল চাঙ্গা করতে ও তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন মোদী। এবার দীপাবলি উদযাপন করতে জয়সলমীরে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী।
এদিন লোঙ্গেওয়ালা সেনা চৌকিতে জওয়ানদের দীপাবলির শুভেচ্ছা জানান মোদী। এদিন ১৩০ কোটি ভারতবাসীর তরফেও জওয়ানদের দীপাবলির অভিনন্দন জানান তিনি। এদিন মোদী বলেন,” আপানার আছেন তাই দেশ আছে। এটা দেশের উৎসব। আমি আপনাদের কাছে প্রত্যেক ভারতবাসীর শুভকামনা নিয়ে এসেছি, দেশবাসীর ভালোবাসা নিয়ে এসেছে, গুরুজনদের আশীর্বাদ নিয়ে এসেছি।” মোদি আরও বলেন “যাঁদের ছেলে মেয়েরা দিওয়ালির দিন সীমান্ত মোতায়েন তাঁরা অভিনন্দন পাওয়ার অধিকারী। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম দিওয়ালিতে সিয়াচেনে গিয়েছিলাম। বহু মানুষ অবাক হয়েছিলেন। কিন্তু আপনারা আমায় জানেন। দিওয়ালিতে নিজের মানুষদের কাছে আসব এবং এসেছি।”
জওয়ানদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন “আপনারা বরফ ঘেরা পাহাড়ে বা মরুভূমি যেখানেই থাকুন না কেন আমার দিওয়ালি আপনাদের মাঝে এসেই সম্পূর্ণ হয়। আপনাদের মুখের ঔজ্জ্বল্য দেখে খুশি বেড়ে যায়। দেশের আনন্দ আপনাদের কাছে পৌঁছে দিতে এসেছে। আপনাদের জন্য মিষ্টিও নিয়ে এসেছি। তবে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে এই মিষ্টি দিতে আসিনি। সমস্ত দেশবাসীর ভালোবাসা নিয়ে এসেছি। এই মিষ্টির মধ্যে আপনারা দেশের প্রত্যেক মায়ের হাতের স্বাদ এবং বাবা ও ভাইয়ের আশীর্বাদ অনুভব করতে পারেন।”
গত বছর, ২৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জম্মু ও কাশ্মীরের রাজৌরিতে সেনাদের নিয়ে দীপাবলি উদযাপন করেছিলেন। সেনা পোশাকে সেদিন জওয়ানদের কাছে পৌঁছেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। মিষ্টি বিতরণ করেছিলেন জওয়ানদের মধ্যে। তার আগে ২০১৮ সালে উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশিতে সেনাবাহিনী এবং আইটিবিপি জওয়ানদের সঙ্গে দীপাবলি উদযাপন করেন মোদী।