দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ তুললেন ছাত্ররা। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে হাঁটু মুড়ে বসে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করল ছাত্র সংস৷ কর্নাটকের ঘটনায় স্তম্ভিত শিক্ষক মহল।
ঘটনার পরে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন কর্নাটকের বিএলডিই ইঞ্জিনিারিং কলেজের অধ্যাপক সন্দীপ ওয়াথার। তিনি জানিয়েছেন, আমি ভয়ও পাইনি, রেগেও যাইনি। পুলিশকে সব জানিয়েছি, তাঁরা নিশ্চয় নিরাপত্তা দেবেন আমায়।
পুলওয়ামায় আত্মঘাতী জঙ্গিহানায় ৪৪ জন সেনা শহিদ হওয়ার ১২ দিন পরে, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বালাকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার হানা এবং তার জেরে উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে পাক সেনার হেফাজত থেকে মুক্তি দেওয়া নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন কর্নাটকের সন্দীপ ওয়াথার।
বামপন্থী চিন্তাধারার জন্য কলেজে তাঁর পরিচিতি রয়েছে। জানা গিয়েছে, অভিনন্দনকে মুক্তি দেওয়ার জন্য, ওই পোস্টে পাক প্রশাসনের প্রশংসা করেন অধ্যাপক। তার জেরেই ছাত্র সংসদের বিষ নজরে পড়েন তিনি।
ছাত্র সংসদের অভিযোগ, ফেসবুকে তাঁর ওই পোস্টে পাকিস্তানের প্রশংসা করার পাশাপাশি তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপির তীব্র সমালোচনা করে শত্রুদেশকে ‘বুদ্ধিমান’ বলেন। এর জেরেই ওই কলেজের ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ মিছিল বার করে এবিভিপি চালিত ছাত্র সংসদ। এর পর ছাত্র সংসদের চাপে ফেসবুক থেকে নিজের বিবৃতি মুছে দিতে বাধ্য হন অধ্যাপক ওয়াথার।
যদিও এতেও সন্তুষ্ট হয়নি ছাত্র সংসদের নেতারা। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশ-বিরোধী বিবৃতি দেওয়ার জন্য ওই অধ্যাপককে হাঁটু গেড়ে বসে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবিভিপি নেতা সচিন বাগেওয়াড়ি, কলমেশ সাহুকর, বিনোদ মণিওয়াদ্দার, বাসবরাজ লাগালি প্রমুখ। বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসার কথা কলেজ কর্তৃপক্ষের। উল্লেখ্য, কলেজটির মালিকানা কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা এম বি পাটিলের।
সন্দীপ বাবুর কথায় তাঁর ফেসবুক প্রোফাইল কেউ ভাল করে ঘেঁটে দেখলেই বুঝতে পারবে, আমি দেশদ্রোহী কি না। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এমনটা কাম্য নয়। যদি ওঁর কোনও আচরণে অসঙ্গতি মনে হয়, তা হলে সেটার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা যেতে পারে। কিন্তু এরকম নীতিপুলিশি অন্যায়।
স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য বলেছেন, এই সময়ে ছাত্রদের আবেগটাও বুঝতে হবে। সেটা মাথায় রেখেই এক জন অধ্যাপকের বিবৃতি দেওয়া উচিত।