দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রাজ্য সরকারের ১১টি সামাজিক প্রকল্প থেকে একটি পরিবারও যাতে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত না থাকে, তা নিশ্চিত করতে রাজ্য সরকার টানা দু’মাস ধরে ‘দুয়ারে দুয়ারে’ কর্মসূচি নিয়ে হাজির হচ্ছে। ১ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি। দেখা যাচ্ছে, শহরই হোক বা গ্রাম, রাজ্যের ৯৯ শতাংশ মানুষই সরকারের কোনও না কোনও সুবিধা পেয়েছে। আগামী এপ্রিল-মে মাসে রাজ্য বিধানসভার ভোট। তার আগেই এই প্রকল্পগুলির একশো শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চাইছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার৷
দেখা যাচ্ছে, বহু ক্ষেত্রে সরকারি এই সুবিধা পাওয়ার জন্য মানুষ আবেদন করলেও, তা প্রশাসনের কোনও স্তরে আটকে রয়েছে। ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির শিবিরে তাঁরা এলে আধিকারিকরা তার নিষ্পত্তি করে দেবেন। তা সফল করার জন্য রাজ্য সরকার শনিবারই ২৩ জেলার জন্য একজন করে বিভিন্ন দপ্তরের সচিব বা প্রধান সচিব পদমর্যাদার আধিকারিককে নোডাল অফিসারের দায়িত্ব দিয়েছে। সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, নোডাল অফিসারদের কাজ হবে, জেলাগুলিতে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি সফল করতে জেলাশাসক ও দপ্তরগুলির মধ্যে সমন্বয় করা। ১১টি সামাজিক প্রকল্পের মধ্যে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা যাতে সকলেই পায়, সেদিকে প্রচারে বিশেষ গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।
সরকারি তথ্য বলছে, রাজ্যে এই মুহূর্তে দশ কোটি পনেরো লক্ষ মানুষ খাদ্যসাথীতে বিনা পয়সায় রেশন পান। এই শিবিরে গিয়ে কেউ মনে করলে তাঁর সন্তানের রেশন কার্ড করিয়ে নিতে পারবেন। নতুন বিয়ে হয়ে আসা মহিলার রেশন কার্ডের ঠিকানা বদল করতে এই শিবির সাহায্য করবে। রেশন গ্রাহক ইচ্ছে করলে শিবিরে এসে তাঁর দোকান পরিবর্তন বা রেশন কার্ডের সঙ্গে মোবাইল নম্বর ও আধার কার্ড নম্বর নথিভুক্তও করতে পারবেন৷
কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন ৬৭ লক্ষ ২৬ হাজারেরও বেশি মেয়ে। গরিব মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের রূপশ্রী প্রকল্পে আর্থিক সাহায্য পেয়েছেন ৫ লক্ষ ৭৮ হাজারের বেশি মেয়ে। ঐক্যশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পেতে এ বছর প্রায় ৪৫ লক্ষ আবেদন জমা পড়েছে। ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদন জানানোর সময় রয়েছে। যাতে রাজ্যের প্রতিটি সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রী এই বৃত্তির সুবিধা পেতে আবেদন করে, সে জন্য শিবির থেকে বিশেষ প্রচার চালানো ও সহযোগিতা করা হবে। কৃষকবন্ধু প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন ৫০ লক্ষ কৃষক। আর অতিমারী কালে ১০০ দিনের গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পে রাজ্য গত আট মাসে সর্বকালীন রেকর্ড করেছে। এক কোটি মানুষ কাজ পেয়েছেন। এর মধ্যে ছ’ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন। লকডাউনে মুখ থুবড়ে পড়তে বসা গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে ১০০ দিনের কাজ। আরও বেশি করে মানুষের কাছে এই প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ থাকলে, তা শিবিরে খতিয়ে দেখা হবে।
প্রকল্পের নাম সুবিধা প্রাপক: খাদ্যসাথী ১০ কোটি ১৫ লক্ষ, স্বাস্থ্যসাথী ৭ কোটি ৫০ লক্ষ,কন্যাশ্রী ৬৭ লক্ষ ২৬ হাজার ৬৮৫,রূপশ্রী ৫ লক্ষ ৭৮ হাজার ৯১৭,কৃষকবন্ধু ৫০ লক্ষ, শিক্ষাশ্রী তফসিলি ছাত্র ১২ লক্ষ ৫০ হাজার, আদিবাসী ছাত্র ২ লক্ষ ৫০ হাজার, ঐক্যশ্রী গত বছর পেয়েছে ৩৯ লক্ষ, তফসিলি বন্ধু পেনশন ৯ লক্ষ ৮০ হাজার, জয় জোহর ২ লক্ষ ৮০ হাজার, তফসিলি শংসাপত্র মাসে গড়ে ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ দেওয়া হয়। ১০০ দিনের কর্মসংস্থান প্রকল্প চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ৮ মাসে ১ কোটি মানুষ কাজ পেয়েছেন৷