দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ
লোকসভা ভোটে দিল্লিতে আম আদমি পার্টি প্রায় ধুয়ে মুছে গেছে। তার পর দশ দিনও হয়নি। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টি নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল ঘোষণা করে দিলেন, রাজ্যের সমস্ত সরকারি বাস ও মেট্রোয় মহিলা যাত্রীদের বিনা টিকিটে যাতায়াতের বন্দোবস্ত করতে চলেছেন তিনি।
দিল্লিতে সরকারি বাসের সংখ্যা দেশের যে কোনও শহরের তুলনায় বেশি। সব রুটেই সরকারি বাসের আধিক্য রয়েছে। দিল্লির সরকারের পরিবহণ দফতরের অধীনেই সেই বাস চলাচল করে। প্রতি দিন মহিলা যাত্রীর সংখ্যা কয়েক লক্ষ। একই ভাবে দিল্লি মেট্রোতে প্রতিদিন মহিলা যাত্রীর সংখ্যা প্রচুর। সরকারি একটি সূত্রের হিসাবে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের জেরে সরকারি কোষাগারে বছরে সাতশ কোটি টাকার ধাক্কা লাগতে পারে।
কেজরিওয়ালের এই সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়েও অবশ্য প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ, সরকারি বাসের নিয়ন্ত্রণ কেজরিওয়াল সরকারের হাতে থাকলেও দিল্লি মেট্রো রেল কর্পোরেশন একটি যৌথ উদ্যোগ। ওই প্রতিষ্ঠানে রাজ্যের পাশাপাশি কেন্দ্রের অংশীদারিত্বও রয়েছে। ফলে কেন্দ্রের কোনওরকম অনুমতি না নিয়েই কেজরিওয়াল একতরফা তা ঘোষণা করে দিতে পারেন কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ডিএমআরসি-র এক কর্তার কথায়, পপুলিজমের কারণে কলকাতা মেট্রোর ভাড়া বাড়াতে দেওয়া হয় না। সেই কারণে কলকাতা মেট্রো কখনওই লাভজনক হয়ে উঠতে পারেনি। দিল্লি মেট্রো লাভজনক বলেই এতো ভাল পরিষেবা দিতে পারে। কেজরিওয়াল যে পপুলিজমের কথা বলছেন, তাতে দিল্লি মেট্রোর পরিষেবা সঙ্কটে পড়তে পারে।
আগামী বছরেই দিল্লিতে বিধানসভা ভোট হবে। কেজরিওয়ালের এই সিদ্ধান্ত সেই লক্ষ্যেই বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু বাসের ভাড়া কমানো নয়, দিল্লি বিদ্যুৎ মাশুল কম রাখার ব্যাপারে এ দিন সওয়াল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, বিদ্যুৎ পরিষেবার ক্ষেত্রে ফিক্সড চার্জ তথা স্থায়ী মাশুল সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে বাড়িয়ে দিয়েছে ডিইআরসি। তা ফের আগের হারে নেওয়ার ব্যাপারে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দিল্লিতে বিদ্যুৎ মাশুল দেশের অন্যান্য মহানগরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারেই কম। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্তদের খুবই কম হারে বিদ্যুৎ মাশুল দিতে হয়। রাজ্যে সরকার গঠন করে সেই নিয়মের প্রবর্তন করেছিলেন কেজরিওয়ালই। মাসে ৫ থেকে ১৫ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ খরচের জন্য এতদিন মাত্র ৪৫ টাকা ফিক্সড চার্জ নেওয়া হত। তা বাড়িয়ে ১৭৫ টাকা করেছিল দিল্লি বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক নিগম। কিন্তু তা ফের কমিয়ে ৪৫ টাকা করার কথা বলেছেন কেজরিওয়াল।