দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গত চোদ্দ এবং উনিশের ভোটে স্পষ্ট ভাবে দেখা গিয়েছে যে বিজেপির প্রচার-যন্ত্র কতটা সুসংহত৷

তুলনায় বাংলা ও সর্বভারতীয় স্তরে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচার পরিকাঠামো বরাবরই অনেকটাই দুর্বল, এমনকী দলের অনেকেই বলেন তালকাটা। পদাধিকার বলে দলের যে নেতারা সাংবাদিক বৈঠক করেন, তাঁদের কেউ কেউ গোটা একটা লাইন গুছিয়ে ক্যামেরায় বলতে পারেন না। বা যা বলেন, তা থেকে কখনও কখনও অর্থ বার করাই দুষ্কর হয়।

কিন্তু আগে যা হয়েছে, তা হয়েছে। বাংলায় বিজেপি যে ভাবে প্রচার বাড়াচ্ছে, এবং জাতীয় স্তরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে ধরনের ভাবমূর্তি তৈরি করার চেষ্টা চলছে, তা রুখতে এ বার কোমর বাঁধলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের প্রচার ব্যবস্থার দুর্বলতা চিহ্নিত করে গুছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন দিদি।

সর্বভারতীয় রাজনীতির জন্য ৬ জনকে মুখপাত্র করা হল। রাজ্যসভায় তৃণমূল নেতা ডেরেক ও ব্রায়েনকে প্রধান মুখপাত্র করলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে থাকবেন, লোকসভা তৃণমূল দল নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ সৌগত রায়, কাকলি ঘোষদস্তিদার, মহুয়া মৈত্র এবং প্রাক্তন সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী।

এরই পাশাপাশি বাংলায় একটি মিডিয়া সেল গড়ে দিয়েছেন মমতা। সূত্রের খবর, ওই মিডিয়া সেলে ১৫ জন নেতা-মন্ত্রী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শুভেন্দু অধিকারী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, তাপস রায়, সমীর চক্রবর্তী অন্যতম।

ঘটনা হল, গত কয়েক বছর ধরে টিভি চ্যানেলে সন্ধ্যার পরে যে বিতর্ক সভা বসানোর ব্যাপার শুরু হয়েছে, সেখানে অধিকাংশ সময়েই তৃণমূল কোনও প্রতিনিধি পাঠাত না। বাধ্য হয়ে অনেকেই এমন লোকজন এনে বসাতেন যাঁরা নিজেদের তৃণমূল সমর্থক, তৃণমূলপন্থী ইত্যাদি বলে দাবি করতেন।

কিন্তু তৃণমূলের তরফে প্রধান মুখপাত্র ডেরেক ও ব্রায়েন বিবৃতি দিয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও চ্যানেল এ ভাবে কোনও লোককে বিতর্কে বসিয়ে তাঁকে তৃণমূল সমর্থক বা তৃণমূলপন্থী বলে দাবি করতে পারবে না। বিতর্কের প্রয়োজনে প্রতিনিধি পাঠানোর দরকার হলে দলকে জানাতে হবে। দল তার পর বিবেচনা করে কোনও নেতা বা নেত্রীকে পাঠাবে, কিংবা পাঠাবে না। সেই সঙ্গে তৃণমূলের তরফে কোনও নেতা বা মুখপাত্রই কোনও টিভি চ্যানেলে বা বৈদ্যুতিন মাধ্যমে ফোন-ইন দেবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

অন্য দিকে রাজ্য স্তরে যে মিডিয়া সেল তৈরি হয়েছে, তাঁদের নিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও তৈরি করা হয়েছে। সূত্রের খবর, দলের মুখপাত্ররা কোন বিষয়ে কী অবস্থান তুলে ধরবেন তা নিয়ে আলোচনা হবে ওই গ্রুপে। তা ছাড়া কোনও ব্যাপারে দিদির কী অবস্থান তাও ওই গ্রুপে জানানো হবে। যাতে এক এক জন নেতা কোনও বিষয়ে এক এক রকম মন্তব্য না করেন এবং বিভ্রান্তি না তৈরি হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here