দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ তাঁর জন্য দরজা খুলে রেখেছে বিজেপি। আবার মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করলেও যেহেতু দল ছাড়েননি, তাই তাঁর সঙ্গে আলোচনার দরজা বন্ধ করেনি তৃণমূলও। কিন্তু মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার পর ৩৬ ঘণ্টা কেটে গেলেও শুভেন্দু অধিকারী তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপের ব্যাপারে প্রকাশ্যে কিছু জানাননি। আশা করা হয়েছিল, রবিবার মহিষাদলে একটি অরাজনৈতিক সভায় শুভেন্দু এ নিয়ে কিছু বলবেনই। কিন্তু পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে তেমন কোনও স্পষ্টতা তিনি আনলেন না। শুধু বললেন, এই দেশের সংবিধানের শক্তির কারণে মানুষই শেষ কথা বলে।
এদিনের শুভেন্দুর সভা তাই কিছুটা নিরামিশ হয়েই রইল। বিজেপিতে যাবেন কিনা বা কী করবেন এরপর, তার ধারেকাছে দিয়েও গেলেন না তিনি। বক্তব্যের বেশিরভাগটাই ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অবদানের কথা। তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার গঠনের কথাও উঠে আসে তাঁর ভাষণে। ডিসেম্বর মাসে তিনি সঙ্গীদের নিয়ে ক্ষুদিরাম বসুর জন্মদিন ও তাম্রলিপ্ত সরকার গঠনের বর্ষপূর্তি পালন করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর মহিষাদলের ‘অরাজনৈতিক’ সভা থেকে তিনি কী বলবেন, তা নিয়ে জল্পনা কম ছিল না। এরই মধ্যে মহিষাদলে শুভেন্দু অধিকারীর সভাস্থলের পাশে পড়ে ‘দাদার অনুগামী’-দের ব্যানার। তাতে দাবি করা হল, পদের প্রতি কোনও মোহ নেই শুভেন্দুর। বরং পদই শুভেন্দুর পিছনে ছুটে বেড়ায়। যদিও এদিন নীল-সাদা রঙের মঞ্চেই হয় শুভেন্দুর সভা।
তবে, শুভেন্দু এদিন কিছু না বললেও ডায়মন্ডহারবারের সভা থেকে সুর চড়িয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দুর নাম না করে তিনি বলেন, ‘নেতা হোক বা কর্মী, তৃণমূল কংগ্রেসে কেউ প্যারাশুটে নামেনি, লিফটে ওঠেনি। প্যারাশুটে নামলে ৩৫টা পদের অধিকারী হতাম। দক্ষিণ কলকাতায় লড়তাম, যেখানে আমি থাকি। তৃণমূল কংগ্রেস সকলের মা। মায়ের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলে ছেড়ে কথা বলবেন? নিজের উচ্চাকাঙ্খার জন্যে অন্য দলের হয়ে তাবেদারি করলে ছেড়ে কথা বলবেন? মায়ের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা সহ্য করা যায় না। বিশ্বাসঘাতকতা করলে কড়ায়-গণ্ডায় জবাব দেওয়া হবে। যতই নাড়ো কলকাঠি, নবান্নে আবার হাওয়াই চটি।’
এদিকে, দলের তরফে শুভেন্দু যে সব জেলার দায়িত্বে, সেগুলোর অন্যতম, মালদা জেলার নেতাদের নিয়ে কলকাতায় শনিবার তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক করেন। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শুভেন্দুর সঙ্গে আলোচনা তথা ‘বরফ গলানোর চেষ্টা’ কিছু দিন আগেই শুরু করেছিলেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়।
শুভেন্দু মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার পরেও অবশ্য হাল ছাড়েননি সৌগত। তিনি বার্তা দেন, মন্ত্রিত্ব ছাড়লেও শুভেন্দু দল ছাড়েননি এবং আলোচনা তাই হতেই পারে। তবে রবিবার পর্যন্ত সেই বৈঠক হয়নি। সৌগত জানান, শুভেন্দুর মা অসুস্থ। শনি ও রবিবার শুভেন্দু কলকাতায় আসতে পারছেন না। মহিষাদলের সভা থেকেও শুভেন্দু স্পষ্ট করলেন না অবস্থান, ফলে জল্পনা জিইয়েই রইল।