দেশেরসময় ওয়েবডেস্ক: ফের খুন হলেন তৃণমূল কর্মী৷এ বার ঘটনাস্থল দক্ষিণ ২৪ পরগনা কুলতলির পোয়েত নস্করের হাট এলাকা। নিহতের নাম সুরথ মণ্ডল (৪৫)।
স্থানীয় সূত্রের খবর, রবিবার সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে বসে আড্ডা মারছিলেন সুরথ। আচমকাই বাইকে চেপে তিন জন দুষ্কৃতী এসে সুরথকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। সুরথ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় তারা। স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে সুরথকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
এই মৃত্যুর ঘটনায় তৃণমূলের দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী বিরোধী রাজনৈতিক দলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। যদিও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত হলেও, একাধিক অপরাধমূলক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সুরথ। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানির মতো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন জেলও খেটেছিলেন এক সময়ে।
সূত্রের খবর, ২০১৮ সালে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে কুলতলিতে ফিরেছিলেন সুরথ। তার পর থেকে সব ঠিকই ছিল। আচমকা রবিবার ঘটে গেল এমন একটি ঘটনা। এই ঘটনায় রবিবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি বলেই জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, সরস্বতী পুজোর আগের দিন নিজের বাড়ির কাছে উদ্বোধনে হয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস। গত সপ্তাহে ফের বজবজ এলাকায় নিজের পার্টি অফিসে গুলিবিদ্ধ হন তৃণমূল কাউন্সিলর মিঠুন ঠিকাদার।
এর পরে আবার সুরথ মণ্ডল। এই নিয়ে, গত তিন সপ্তাহে তিন বার তৃণমূল নেতা-কর্মীদের গুলিবিদ্ধ হওয়া ঘটনা ঘটল রাজ্যে। ঘটনাচক্রে এ দিন সকালে সল্টলেকে নিজের বাড়ির সামনে বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের গাড়িতে একটি ঢিল ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ ওঠে।
মাস দুয়েক আগেই জয়নগরের বিধায়ক বিশ্বনাথ দাসের গাড়ি লক্ষ করে গুলি চালিয়ে তিন জনকে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা। ঘটনাচক্রে ওই গাড়িতে বিধায়ক ছিলেন না বলে, প্রাণে বেঁচে যান। সে সময় দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোবাধ্যায়। এলাকায় অস্ত্রের বাড়বাড়ন্ত রুখতে কড়া পদক্ষেপ করার কথা বলেছিলেন তিনি। অভিযোগ তুলেছিলেন, “এলাকায় কুটির শিল্পে পরিণত হয়েছে অস্ত্র তৈরির অভ্যাস।”
তার পরেও যে অবস্থা বিশেষ বদলায়নি, রবিবারের ঘটনাটি তারই প্রমাণ।