দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ জৈশ–ই–মহম্মদের বিরুদ্ধে অবশেষে পদক্ষেপ করল পাকিস্তান। বাহাওয়ালপুরে জৈশের মসজিদ এবং সেমিনারি ক্যাম্পাসের দখল নিল পাক পাঞ্জাবের পুলিস। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে এখবর জানানো হয়েছে। বাহাওয়ালপুরের ওই ক্যাম্পাসই জৈশের সদর দপ্তর বলে মনে করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই ক্যাম্পাসে রয়েছে মাদ্রাসাতুল সাবির এবং জামা–ই–মসজিদ সুবাভানাল্লাহ নামে মসজিদ এবং সেমিনার কমপ্লেক্স। কারণ ওই জায়গা থেকেই জৈশের যাবতীয় সাংগঠনিক কাজকর্ম হয়। পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি বা এনএসসি–র নেতৃত্বেই এই অভিযান চালায় পাক পাঞ্জাবের পুলিস। ওই ক্যাম্পাসে ৭০ জন শিক্ষক এবং ৬০০ জন ছাত্রের নাম রয়েছে রেজিস্ট্রারে। গত বৃহস্পতিবারই এনএসসি–র শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তার পরদিনই পদক্ষেপ করল পাকিস্তান। পুলওয়ামা হামলার পর ভারত সহ বিশ্বজোড়া চাপের কাছে নতি স্বীকার করেই এই পদক্ষেপ পাকিস্তানের বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। যদিও বাহাওয়ালপুরের স্থানীয় প্রশাসন এখনও নির্দিষ্টভাবে কিছু জানায়নি।
শুক্রবার পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী বলেন, বাহাওয়ালপুরে জইশ ই মহম্মদের হেড কোয়াটার্সের দখল নিয়েছে পঞ্জাব সরকার। সেখানে একজন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। বাহাওয়ালপুর জায়গাটি লাহৌর থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
পাকিস্তানে জইশ ২০০২ সাল থেকে নিষিদ্ধ। কিন্তু তার পরেও সেদেশে ভিন্ন নামে সংগঠনটি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন বিদেশী ও স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টে জানা যায়, পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশে জইশ খুবই সক্রিয়। বাহাওয়ালপুরে রয়েছে তাদের সদর দফতর। মৌলানা মাসুদ আজহারও সেখানেই থাকেন।
এদিন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে এক বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সভাপতিত্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠক বসে। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জইশের সদর দফতরের দখল নেওয়া হয়েছে। সেখানে যারা ছিলেন, তাঁদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে পঞ্জাব পুলিশ।
জইশের প্রধান নেতা মৌলানা মাসুদ আজহার কোথায় আছে, তাঁকে বন্দি করা হয়েছে কিনা, তা অবশ্য জানানো হয়নি।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইতিমধ্যে কয়েকজন জঙ্গি নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে পাকিস্তান। বৃহস্পতিবারই ২০০৮ সালে মুম্বই হামলায় জড়িত জামাত উদ দাওয়া সংগঠনটি নিষিদ্ধ করে দিয়েছে ইমরানের সরকার। জঙ্গি লস্কর ই তোইবাকে এই জামাত উদ দাওয়া সংগঠনটিই পরিচালনা করে। মুম্বই হামলায় লস্কর সন্ত্রাসবাদীদের হাতে ১৬৬ জন মারা গিয়েছিলেন। ২০১৪ সালে আমেরিকা এই সংগঠনটিকে বিদেশী সন্ত্রাসবাদী বলে চিহ্নিত করে।