দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ভারত সীমান্তে জমি দখলের চেষ্টা চালিয়েই যাবে চিন। অন্যান্য দেশের জমিও তারা দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাবে। যতই আলোচনা বা চুক্তি হোক, বেজিংকে কিছুতেই আক্রমণাত্মক অবস্থান থেকে সরানো যাবে না। এই সত্যিটা মেনে নেওয়াই ভাল। এমনই মন্তব্য করেছেন আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ওব্রায়েন।
তিনি উল্লেখ করেন, তাইওয়ান প্রণালীতেও চিনের সেনা সামরিক মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে। অন্য দেশের জমি দখল করাই তাদের উদ্দেশ্য। অন্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড প্রোগ্রামের ওপরে খুব জোর দিচ্ছে চিন। এই প্রকল্প কার্যকর করার জন্য যে কোম্পানিগুলিকে নিয়োগ করা হয়েছে, তাদের এমনিতে বেশি অর্থ নেই। তারা চিনের থেকে ঋণ নিচ্ছে। ওই পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য চিনের শ্রমিকদেরই নিয়োগ করা হচ্ছে।”
রবার্ট ওব্রায়েনের মতে, চিন এমন কয়েকটি প্রকল্প কার্যকর করছে, যা অপ্রয়োজনীয়। যেভাবে প্রকল্পের কাজ চলছে, তাতেও কোনও স্বচ্ছতা নেই। চিন থেকে যে দেশগুলি ঋণ নেয়, তাদের সার্বভৌমত্ব খর্ব হয়। তারা রাষ্ট্রপুঞ্জে চিনের কথামতো কাজ করে। ওব্রায়েন বলেন, চিন নানা দেশের অত্যাচারী শাসককে নজরদারী চালানোর যন্ত্র বিক্রি করে। তার ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে ভেনিজুয়েলার নিকোলাস মাদুরো সরকার।
এরপরেই আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, “এখন আমাদের মেনে নিতে হবে, আলোচনা করে বা চুক্তি করে বেজিংকে বদলানো যাবে না। আমেরিকাকে চিনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। মার্কিন জনগণকে রক্ষা করতে হবে।”
কিছুদিন আগে লাদাখ প্রসঙ্গ তুলে ভারতের বায়ুসেনাপ্রধান আর কে এস ভাদুরিয়া বলেছেন, চিনের থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতের শক্তি অনেক বেশি। ভারতীয় বাহিনী সামরিক কৌশলেও এগিয়ে রয়েছে। চিনের সেনা কিছুতেই ভারতের শক্তির কাছে পেরে উঠবে না।
এয়ার চিফ মার্শাল বলেছেন, নর্দার্ন ও ওয়েস্টার্ন, দুই ফ্রন্টেই শক্তি বাড়ানো হয়েছে। শত্রুপক্ষের যে কোনও কৌশলগত চ্যালেঞ্জ ও আগ্রাসনের মোকাবিলা করতে তৈরি বায়ুসেনা। অরুণাচল, সিকিম ও উত্তরাখণ্ডে চিন সীমান্তেও যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে রেখেছে বায়ুসেনা। বায়ুসেনাপ্রধানের কথায়, “সবকটি সীমান্তবর্তী এলাকায় শক্তি বাড়িয়ে রেখেছে বায়ুসেনা। স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে প্রস্তুতি আরও বেশি। লাদাখ সেখানে ছোট্ট একটা অংশ।”
গালওয়ানের সংঘর্ষের পরেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধবিমান নামিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। এয়ার চিফ মার্শাল জানিয়েছেন, জুন মাসে হট স্প্রিংয়ের কাছে দুই দেশের বাহিনী মুখোমুখি সংঘাতে জড়ানোর পরেই চূড়ান্ত সতর্কবার্তা পাঠানো হয় বায়ুসেনাকে। আকাশযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হলে তার জন্য সবরকমভাবে তৈরি থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি, ফরওয়ার্ড বায়ুসেনাঘাঁটিগুলিতেও যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়।
কোনওভাবে চিনের ফাইটার জেট ভারতের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ঢুকে এলে যাতে কঠোর মোকাবিলা করা যায় তার জন্যই কমব্যাট ফাইটার জেটগুলিকে তৈরি থাকতে বলা হয়। ভাদুরিয়া বলেছেন, সীমান্তের সুরক্ষা নিয়ে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী সব সময় প্রস্তুত ও সজাগ থাকে। সামরিক পর্যায়ের আলোচনায় চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পরেও চিনা সেনার অন্যায় আগ্রাসন কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ভারতের পথে পা বাড়ালে লাল সেনাকে যোগ্য জবাব দেওয়ার মতো প্রস্তুতি আছে বায়ুসেনা বাহিনীর।