দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃকৃষ্ণগঞ্জের নিহত বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের বাড়িতে আগেই ফোন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দুপুরে সত্যজিতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন যুব তৃণমূল সভাপতি তথা তৃণমূলের তরফে নদিয়ার পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তরে অভিষেক নাম না করে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে ঝাঁঝালো আক্রমণ করেন। বলেন, “কেউ যদি ভাবে দুর্নীতি করে, খুনে মদত দিয়ে দিল্লির নেতাদের পাজামা ধরে ঝুলে পার পেয়ে যাবে, তাহলে মূর্খের স্বর্গে বাস করছে। পুলিশমন্ত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলার ধরে সবকটাকে শ্রীঘরে ঢোকাব।”
বিধায়ক তথা নদিয়ার যুব তৃণমূল সভাপতি সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের ঘটনায় বাংলার শাসক দলের অভিযোগ, এর পিছনে রয়েছেন মুকুল। শুধু মৌখিক অভিযোগ নয়। এফআইআর-এও নাম রয়েছে একদা তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ডের।সত্যজিতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে অভিষেক বলেন, “আমি নিজে এই ব্যাপারটা দেখছি। কথা দিচ্ছি একজনও পার পাবে না। সে যত বড় মাথাই হোক না কেন।”
শনিবার রাতে সরস্বতী পুজোর অনুষ্ঠানে সত্যজিৎকে গুলি করার পর রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছন জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত তরুণ এই বিধায়কের নিথর দেহ দেখে হাউ হাউ করে কাঁদতে কাঁদতেই বলেছিলেন, “এরপর যদি মুকুল রায় এই জেলায় ঢোকার সাহস দেখান তাহলে পরিণাম হবে ভয়ংকর।” সেই রাতেই আঁচ পাওয়া গিয়েছিল। পরের দিন এফআইআর-এ মুকুলের নাম তা স্পষ্ট করে দেয়।গত মাসে নদিয়ার প্রশাসনিক বৈঠকের দিনই সাংগঠনিক দায়িত্বে রদবদল করেন মমতা। পার্থবাবুর সঙ্গেই ওই জেলায় দায়িত্ব দেওয়া হয় অভিষেক এবং বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। এ দিন অভিষেক বলেন, “সত্যজিৎ পঞ্চায়েত থেকে উঠে আসা নেতা। মতুয়া সমাজের মুখ ছিলেন তিনি। ঠাকুরনগরে প্রধানমন্ত্রীর সভার কয়েক দিনের মধ্যে এই খুন পূর্ব পরিকল্পিত।”ওই রাতে বারবার কারেন্ট চলে যাওয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। বিজেপি যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ তুলেছে বাংলার শাসক দল সম্পর্কে, সে ব্যাপারে অভিষেক বলেন, “যে চাদর মুড়ি দিয়ে গুলি করেছে তার মা বলছেন, ‘আমার ছেলে বিজেপি করে।’ আর দিলীপবাবুরা বলছেন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।”যদিও মুকুলশিবির অভিষেকের কথায় আমল দিচ্ছে না। গতকালই সাংবাদিক সম্মেলনে মুকুলবাবু বলেছিলেন, “দরকার হলে অন্ধ্রপ্রদেশের পুলিশ দিয়েও তদন্ত করতে পারেন।” বিজেপি নেতাদের কথায়, যেহেতু চিটফান্ডে সিবিআই তদন্ত নিয়ে তৃণমূলের ভিতর কাঁপুনি লেগে গেছে, তাই পাল্টা এ সব কেস সাজানো হচ্ছে। তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, বাংলায় তৃণমূল-বিজেপি তাকাত প্রদর্শনের রাজনীতি শুরু করে দিয়েছে। একদলের হাতিয়ার রাজ্য সরকার, তো অন্য দলের কেন্দ্রীয় সরকার। ভোট যত এগিয়ে আসবে তত এ সব বাড়বে বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।