দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ স্বচ্ছ কর ব্যবস্থা –– সততাকে সম্মান’। এই নামে কর আদায়ের পদ্ধতিতে বড়সড় সংস্কারের কথা ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, কর দেওয়ার নিয়মকানুন যাতে সহজ-সরল হয় এবং সৎ করদাতা সম্মানিত হন, সেজন্য সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে। করোনা অতিমহামারীতে বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করাই এর উদ্দেশ্য। একইসঙ্গে এদিন মোদী ‘ট্যাক্সপেয়ারস চার্টার’, ‘ফেসলেস আপিল’এবং ‘ফেসলেস অ্যাসেসমেন্ট’-এর কথা ঘোষণা করেন।
As far as the tax system is concerned, we have:
— Narendra Modi (@narendramodi) August 13, 2020
Decreased complexity.
Decreased taxes.
Decreased litigation.
Increased transparency.
Increased tax compliance.
Increased trust on the tax payer. #HonoringTheHonest pic.twitter.com/nhTTKu1X6X
২০২০-২১ সালের বাজেট পেশ করার সময় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বলেছিলেন, কয়েক মাসের মধ্যে ‘ট্যাক্সপেয়ারস চার্টার’ অর্থাৎ করদাতাদের সনদ ঘোষণা করা হবে। আয়কর দফতর যাতে নাগরিকদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিষেবা দিতে বাধ্য হয়, তার ব্যবস্থা করা হবে সনদে। সেইমতো এদিন প্রধানমন্ত্রী ‘ট্যাক্সপেয়ারস চার্টার’ ঘোষণা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ গঠনে সৎ করদাতাদের বিরাট ভূমিকা আছে। সরকার তাঁদের সম্মান জানানোর ব্যবস্থা করছে। তিনি জানান, করদাতারা ফেসলেস আপিলের সুবিধা নিতে পারবেন ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে। ট্যাক্সপেয়ারস চার্টার কার্যকরী হবে ১৩ অগাস্ট থেকেই।
বুধবারই মোদী টুইট করে বলেছিলেন, ‘স্বচ্ছ কর ব্যবস্থা –– সততাকে সম্মান’ নামে যে নতুন প্ল্যাটফর্মটি গঠন করা হয়েছে তাতে সৎ করদাতারা উপকৃত হবেন। নির্মলা সীতারমন টুইট করে বলেন, “দেশে সহজ ও স্বচ্ছ কর ব্যবস্থা চালুর লক্ষ্যে বড় পদক্ষেপ নেওয়া হল।”
২০২০-২১ সালের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, “যাঁরা সম্পদের সৃষ্টি করেন, তাঁদের সম্মান পাওয়া উচিত। যাঁরা নিয়মিত কর দেন, তাঁরা যাতে হেনস্থার শিকার না হন, সরকার তার ব্যবস্থা করবে।”
গত ছয় বছরে কর ব্যবস্থায় বেশ কয়েকবার সংস্কার করেছে মোদী সরকার। কর্পোরেট ট্যাক্স ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ২২ শতাংশ। নতুন ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিটগুলির জন্য কর হার ধার্য হয়েছে ১৫ শতাংশ। ডিভিডেন্ড ডিস্ট্রিবিউশন ট্যাক্স লোপ করা হয়েছে। করদাতাদের সুবিধার জন্য কয়েকটি ব্যবস্থা নিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক। বকেয়া প্রত্যক্ষ কর যাতে সহজে দেওয়া যায়, সেজন্য চালু হয়েছে ‘বিবাদ সে বিশ্বাস’ প্রকল্প।
গত মঙ্গলবার সরকার জানিয়েছিল, জুনে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকে শিল্পোৎপাদন কমেছে ৩৬ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে সরকার সমীক্ষা করে দেখেছে, কোন পদক্ষেপ নিলে আন্তর্জাতিক শিল্পমহল ভারতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবে। আপাতত দেশীয় শিল্পকে চাঙ্গা করার জন্য কয়েকটি পণ্যের ওপরে আমদানি শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। কয়েকটি পণ্যের ইমপোর্ট লাইসেন্সের ফি বাড়ানো হয়েছে। সরকারের আশা, এর ফলে বিদেশি পণ্যের দাম বাড়বে। দেশে উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে।
এর আগে সরকার দু’টি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেছিল। প্রথমত, মার্চের শেষে দেশ জোড়া লকডাউন জারি হওয়ার পরে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনায় মহিলা, গরিব ও প্রবীণ নাগরিকদের অর্থ ও খাদ্যশস্য দেওয়ার কথা বলা হয়। দ্বিতীয়ত, মে মাসে ২০ লক্ষ কোটির আত্মনির্ভর প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। তাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ঋণ পাওয়া সুনিশ্চিত করা হয়। কৃষিক্ষেত্রেও কয়েকটি বড় সংস্কারের কথা ঘোষণা করা হয়।