দেশেরসময় ওয়েবডেস্ক: আগামী ১৯শে জানুয়ারি দলের ব্রিগেড সমাবেশ-কে সামনে রেখে শুক্রবার বনগাঁ-য় প্রস্তুতি সভার আয়োজন করলো তৃণমূল। বনগাঁ খেলাঘর ময়দানে যে সভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে বলার বিষয় ব্রিগেডের উদ্দেশ্যে এই সভার আয়োজন করা হলেও শুক্রবার তা রুপ নেয় এক বিরাট জনসভার। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ মমতা বালা ঠাকুর। উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা তৃণমূল পর্যবেক্ষক নির্মল ঘোষ। পাশাপাশি উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন বনগাঁ পৌরসভার পৌরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য। সভায় উপস্থিত হয়ে উত্তর চব্বিশ পরগনা তৃণমূল জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা বিজেপি সরকার দেশবাসীকে অরাজকতা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেনি”। “গরীব মানুষের কথা না ভেবে তারা ধর্ম নিয়ে ব্যস্ত”। “যে রথ বলতে আমরা জগন্নাথ বলরাম শুভদ্রা-কে বুঝি আজ সেই রথে ক্ষমতায় থাকা ব্যাক্তিরা নিজেদেরকে দেখাতে চাইছেন”। “পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ফলে প্রমানিত মানুষ আর বিজেপি সরকার কে চাইছে না, তবুও রথের নামে ফুর্তি করতে ব্যস্ত হচ্ছেন তারা”। “এই বিভেদের রাজনীতিকে মানুষ কোনভাবেই মেনে নেবে না”। উত্তর চব্বিশ পরগনা তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক নির্মল ঘোষ বলেন, “নতুন করে দেশ গঠনে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে আমরা সকলে ১৯তারিখ ব্রিগেড সভায় যোগ দেব”। “কারন দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মোদী সরকারের বিরোধিতা করার প্রথম টিকিট রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পকেটে”। “১৯তারিখ ব্রিগেড সভার মধ্যে দিয়ে দলনেত্রীর সেই লড়াইকে আরও সুদূরপ্রসারী করে তুলতে হবে”। সব শেষে সভায় বক্তব্য রাখেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। এদিন প্রথমেই জেলা পরিবহন দপ্তরের সদস্য তথা বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ কে পাশে রেখে তিনি বনগাঁ-র প্রয়াত প্রাক্তন বিধায়ক ভূপেন শেঠ-কে শ্রদ্ধা নিবেদন করে তার বক্তব্য শুরু করেন। তিনি বলেন, “আগামীদিনে যে দেশে বিজেপি-র কোন ভূমিকা থাকছে না তা সদ্য সমাপ্ত পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে প্রমাণিত”। “আর তা সুনিশ্চিত করতে আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে”। “বিজেপি সরকারের আমলে অর্থনৈতিক কারনে যে ভাবে মানুষকে নাজেহাল হতে হয়েছে এর জবাব আগামী লোকসভা নির্বাচনে পাবেন নরেন্দ্র মোদী”। “বহু অর্থ খরচ করে নিজেদের পার্টি অফিস তৈরি ছাড়া বিজেপি মানুষের জন্য কোন ভালো কাজ করেনি”। “অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে বাংলায় কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী থেকে শুরু করে একের পর এক প্রকল্প শুরু হয়েছে”। “আজকে রাজ্যের মানুষ শান্তি ফিরে পেয়েছে”। “আর নন্দীগ্রাম, নেতাই-এর মতো জঘন্য ঘটনা যারা ঘটিয়েছিল আজ সেই সিপিএম-এর সাথে এক হয়েছে অন্য রাজনৈতিক দল কংগ্রেস”। “যাদের বর্তমান নীতি সকালে সিপিএম বিকালে কংগ্রেস রাতে বিজেপি”। সিপিএম কে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বাবুর দাবী, “পরিবর্তন তো হয়েছে শুধু জামার”। “যে কমরেড-রা আগে লাল জামা পড়তেন এখন গেরুয়া জামা পড়ছে”। “তাই সমস্ত অরাজকতাকে রুখে দেওয়ার লক্ষ্যে, নতুন দেশ গঠনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতকে আরও শক্ত করতে আগামী ১৯তারিখ আমরা পৌঁছে যাব ব্রিগেডের জনসভায়”। পাশাপাশি এদিন সভা থেকে পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী-র ঘোষণা, “বনগাঁ অঞ্চল থেকে বহু মানুষ তারাপীঠ-এর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন”। “সেই কথা ভেবে খুব তাড়াতাড়ি বনগাঁ থেকে তারাপীঠ রুটে দুটি বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার”।