দেশের সময়,হাবড়া: শনিবার হাবড়ায় একটি দলীয় অনুষ্ঠানে এনআরসির বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এদিন তিনি বলেন, কোনও কিছুর বিনিময়েই এই রাজ্যে এনআরসি চালু করতে পারবে না কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।
হাবড়া বিধানসভা তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে শনিবার হাবড়ার কলতান প্রেক্ষাগৃহে একটি বিজয়া সম্মেলনীর আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিধানসভার মুখ্য সচেতক তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক নির্মল ঘোষ, হাবড়া পুরসভার প্রাক্তন তৃণমূল পুরপ্রধান নিলীমেশ দাস, হাবড়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি অজিত সাহা সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতৃত্ব।
অনুষ্ঠানে এলাকার বিভিন্ন স্তরের দলীয় নেতা, কর্মীদের উদ্দেশ্যে ভাষন দিতে গিয়ে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নাম যতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবে, ততদিন কোনও শক্তিই এই রাজ্যে এনআরসি চালু করতে পারবে না। অসমে সেই রাজ্যের বিজেপি সরকার চেয়েছে যে সেই রাজ্যে এনআরসি চালু হোক, তাই সেই রাজ্যে চালু হয়েছে। কিন্তু আমাদের রাজ্যের মানবিক মুখ্যমন্ত্রী এই সর্বনাশা নিয়ম চালু করার বিরুদ্ধে।
তাই এই রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতদিন রয়েছেন, ততদিন কিছুতেই এই রাজ্যে এনআরসি চালু হবে না। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বস্তরের নেতা, কর্মীরা এই বিরোধীতা করবো।’
তিনি বলেন, ‘বাঙালীর সবথেকে বড় উৎসব দূর্গাপুজোয় আমরা তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা পুজোর আনন্দের পাশাপাশি সামাজিক কাজে যুক্ত ছিলাম। ভোটার তালিকায় নাম সংশোধন সহ নানা বিষয়ে মানুষ যাতে আতঙ্কিত না হয়ে পরেন, যাতে তাঁরা বিয়য়টি বুঝতে পেরে সঠিক ব্যবস্থা নেন, তারজন্য আমরা পুজোর মধ্যে প্রতিদিন নিয়ম করে এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বুঝিয়েছি।
এখন বিজয়ার পর্ব চলছে। এর পরে দীপাবলী আসছে। সেই সময়েও আমরা একইভাবে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের সুবিধে অসুবিধের কথা শুনে সাধ্যমতো সমাধান করার চেষ্টা করবো। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর নির্দেশে এভাবেই আমরা সারা বছর মানুষের পাশে থাকি। কারন আমরা তৃণমূল কমগ্রেসের কর্মীরা মনে করি, মানুষই আমাদের আসল শক্তি।’
অনুষ্ঠানে বিধানসভার মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ বলেন, ‘শারদোৎসব বাঙালীদের সবথেকে বড় উৎসব। এই মুহূর্তে আমরা বাঙালী হিসেবে নিজেদেরকে আরও বেশি করে গর্বিত বলে মনে করি, কারন দিন কয়েক আগে এক বঙ্গসন্তান নোবেল পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন। অথচ তাঁরমতো একজন মানুষকে অসম্মানিত করছেন কেন্দ্র সরকার। আর এর থেকেই পরিষ্কার যে তারা বাঙালীদেরকে হিংসা করে। এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’
এদিনের বিজয়া সম্মেলনীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক আরও বলেন, ‘আপনাদের এলাকায় কোনও মানুষ যদি বিপদে পরেন বা অসুস্থ হয়ে পরেন, তখন তিনি কোন দলের কর্মী বা সমর্থক, সে সব রং না দেখে আগে তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে বিপদ থেকে উদ্ধার করুন বা চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান।
অন্য কেউ এগিয়ে আসার আগে তৃণমূল কংগ্রেসের একজন সৈনিক হিসেবে আপনি সবার আগে এই কাজে এগিয়ে আসুন। মমতা ব্যনার্জী আমাদেরকে এমনই শিক্ষা দেন। ভালো কাজ করতে গিয়ে বিরোধীরা যদি আপনাকে উদ্দেশ্য করে কটু কথা বলে, তার প্রেক্ষিতে আপনি খারাপ কথা বলবেন না। সহ্য করুন। একসময় দেখবেন সে নিজেই থেমে গেছে।