Winter :শীত পড়তেই গ্রামের রাস্তায় সকাল-সন্ধ্যায় দেখা মিলছে শিউলিদের :দেখুন ভিডিও

0
984

অর্পিতা বনিক, বনগাঁ: ভোরের স্নিগ্ধ শিশিরে মিলছে শীতের আবেশ। পুব আকাশে সূর্য যখন উঁকি দিচ্ছে, ঘন কুয়াশার চাদরে তখন ঢাকা পড়ছে ভোরের সেই সোনারাঙা রোদ।

বিকেল পাঁচটা না বাজতেই পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়ছে রক্তিম সূর্য। অলস বিকেলের গোধূলী লগ্ন পেরিয়ে নেমে আসছে সন্ধ্যা। ভোরের আলো ফুটতেই স্নিগ্ধ শিশিরে ভেজা সবুজ ধানের পাতাগুলো নুয়ে পড়ছে বাতাসে। এই মুক্তো ঝরা শিশিরে হেমন্তেই হাতছানি দিচ্ছে শীত।

বাংলা বর্ষপঞ্জিতে কার্তিকের পর অগ্রহায়ণ পেরিয়ে পৌষ-মাঘ শীতকাল ধরা হলেও এবার কার্তিকের শেষেই মিলেছে শীত শীত অনুভূতি।

আর শীত মানে খেজুরের রস ও গুড়ের স্বাদে উপভোগের করার মহোৎসব শুরু হয়।শীতের দিনে বেশিরভাগ মানুষের খাবারের তালিকায় গুড় কিন্তু মাস্ট ৷

আর তাও আবার যদি হয় খেজুরের গুড় তাহলে তো আর কোন কথাই থাকে না। তাছাড়াও রয়েছে খেজুর গুড় দিয়ে তৈরি রকমারি খাবার। খাদ্য রসিকদের রসনারতৃপ্তির জন্য যে গুড় এতই বিখ্যাত, সেই গুড় তৈরীর করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয় শিউলিদের। দেখুন ভিডিও :

কনকনে ঠান্ডার দিনে লেপ মুড়ি দিয়ে সকলে যখন আরামে নিদ্রাচ্ছন্ন থাকেন সে সময় খেজুর গাছে উঠে রস সংগ্রহ করে সেই রস জাল দিয়ে গুড় তৈরি করেন শিউলিরা।

খেজুরের গুড় তৈরি করার জন্য আগের দিন দুপুরে খেজুর গাছে হাঁড়ি বেঁধে তাতে নল লাগিয়ে রেখে দিতে হয়, তারপর সেই হাড়ি পরের দিন ভোর বেলায় গাছ থেকে নামিয়ে জাল দিয়ে তৈরি করা হয় খেজুরের গুড়। অর্থ রোজগারের আশায় বহু দুর দূরান্ত থেকে শিউলিরা ছুটে যান জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। অঘ্রাণ মাস থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত তারা গুড় বিক্রি করে পুনরায় নিজের বাসস্থানে ফিরে যান। প্রচন্ড শীতে এই কয়েক মাস তারা খড়ের ছাউনি করে কোন রকমে বসবাস করেন।

অনেক জায়গায় দেখা যায় শিউলিদের পরিবারের লোকেরা একই ভাবে তাদের সাথে তাল মিলিয়ে খরের ঘরে দিন গুজরান করছেন। খেজুরের রস সংগ্রহ করার জন্য খেজুর গাছের মালিকদের থেকে গাছ লিজে নিতে হয় শিউলিদের। বহু শিউলি বংশপরম্পরায় গুড় তৈরির কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলার বিভিন্ন জেলায় এই সময় দেখা মেলে অনেক শিউলিদের। দেশের সময়ের প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা হল উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা ও বনগাঁয় তেমনই কয়েকজন শিউলির সঙ্গে ৷

প্রতিদিন প্রায় ২৫ কেজি গুড় তৈরি করছেন বলে জানিয়েছেন তারা। শীতের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে আগামী দিনে মুনাফা হবে বলে আশা করছেন শিউলিরা।

নলেন গুড় তৈরীর কারিগরিদের জীবন নিয়ে তৈরি হয়েছে বহু চলচ্চিত্র। তাদের জীবন সংগ্রামকে তুলে ধরা হয়েছে নাটক ও চলচ্চিত্রের মধ্যে দিয়ে। যে খেজুরের রসের গুড়ে মানুষের মন মজে সেই গুড় তৈরির কারিগরদের জীবন কিন্তু ততটা রসময় হয় না। পেটের তাগিদে শীতের দিনে বহু কষ্টে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে হয় তাদের।

দীর্ঘ দু-বছর করোনার জেরে আর্থিক অনটনে দিন কেটেছে তাদের। করোনা কাটিয়ে আবারো চেনা ছন্দে ফিরছে শিউলিরা। আগামী দিনে সরকার তাদের জন্য বিকল্প কিছু পরিকল্পনা করবে সেই আশায় বুক বাঁধছেন তাঁরা। আজও বাঙালির ঐতিহ্য ও সাবেকিয়ানাকে বহন করে চলেছেন এই গ্রাম বাংলার শিউলিরা।

Previous articleLadakh Ride: বাইকে লাদাখ যাবেন? রোমহর্ষক অভিজ্ঞতার স্বাদ নিয়ে ফিরে লিখলেন সরোজ মজুমদার
Next articleBhediya: কলকাতায় টিম ‘ভেড়িয়া’, ট্রামে চড়ে হুল্লোড় বরুণ-কৃতির! সঙ্গ দিলেন প্রসেনজিৎ ,চতুর্দিকে তুমুল হইচই, ছবি তুলতে ব্যস্ত পুলিশও!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here