

কয়েক দিনের বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির পর ফের ভ্যাপসা গরম ফিরল দক্ষিণবঙ্গে। আপাতত দরদরিয়ে ঘেমে একসা হতে হবে। মাঝে মধ্যে আকাশে মেঘের আনাগোনা কিংবা দু’-এক ফোঁটা বৃষ্টি পেলেও, খুশির কারণ নেই। বরং মঙ্গলবারও আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি চরমে উঠবে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। আবহাওয়া দপ্তরের পরিভাষায় ‘হট এবং হিউমিড’ পরিস্থিতি কলকাতা-সহ উপকূল ও উপকূল সংলগ্ন জেলাগুলিতে।

এদিকে গত সপ্তাহেই বর্ষার প্রবেশ ঘটে গিয়েছে উত্তরবঙ্গে। তারপর থেকেই উত্তর জেলাগুলিতে ঝেঁপে বৃষ্টি। টানা বর্ষনে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ, বিপর্যস্ত জেলার জনজীবন।
এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি কবে?
হাওয়া অফিসের সতর্কতা, টানা বৃষ্টি, দুর্যোগ থেকে উত্তরের জেলাগুলির মুক্তি এখনই নয়। উত্তরের পাঁচ জেলায় মঙ্গলবারেও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি সতর্কতা, সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ। মঙ্গলের পর, একইভাবে বর্ষণের সম্ভাবনা বুধেও। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, দুই দিনাজপুর, মালদহে মঙ্গল-বুধ, দু’ দিনেরই বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে। টানা বর্ষণে সম্ভাব্য ক্ষতির কথাও উল্লেখ করেছে হাওয়া অফিস। বৃষ্টির জেরে দার্জিলিং এবং কালিম্পঙের পার্বত্য অঞ্চলে ধস নামারও আশঙ্কা রয়েছে। মেঘ, কুয়াশার কারণে মাঝে মাঝেই কমে যেতে পারে দৃশ্যমানতা।
একদিকে উত্তরবঙ্গ যেমন ভাবছে এই তানা দুর্যোগ থেকে রেহাই কবে? দক্ষিণবঙ্গ ভাবছে, কবে প্রবেশ করবে বর্ষা?

নিম্নচাপের রেশ কাটতেই দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে একধাক্কায় কমে গিয়েছে বর্ষণ। ফিরেছে ভ্যাপসা গরম আদ্রর্তাজনিত অস্বস্তি। হাওয়া অফিসের সতর্কতা, মঙ্গলবার থেকে, আগামী কয়েকদিন এই পরিস্থিতিই বজায় থাকবে দক্ষিণের জেলায় জেলায়। মাঝে মাঝে কিছু অংশে বিক্ষিপ্ত হালকা বৃষ্টিপাত হলেও, তা খুব একটা স্বস্তির হবে না বলেই জানাচ্ছে আবহাওয়া দপ্তর।
গরমের জন্য দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে শিশু এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে শারীরিক সমস্যা হতে পারে বলে সতর্ক করেছে হাওয়া অফিস। এই ক’দিন বেশিক্ষণ রোদে না থাকার পরামর্শ দিয়েছে হাওয়া অফিস। সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত বাইরের কাজ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলারও পরামর্শ দিয়েছে হাওয়া অফিস। দক্ষিণের জেলাগুলিতে ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি শুষ্ক পশ্চিমা বায়ু থাকার কারণেই আবহাওয়া মূলত গরম এবং আর্দ্র থাকবে।

হাওয়া অফিস কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই পরগণা, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামে আগামী দু’ দিন ভ্যাপসা গরমের সতর্কতা জারি করেছে। বৃহস্পতিতে বেশকিছু জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা। খাস কলকাতায় এদিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি। শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি। সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও বেশকিছুটা বেশি স্বাভাবিকের চেয়ে। মঙ্গলবার শহরের সর্বনিম্ব তাপমাত্রা ২৯.১ ডিগ্র, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ১.৩ ডিগ্রি বেশি।

আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, আপাতত বর্ষা আসার সম্ভাবনা নেই দক্ষিণবঙ্গে। পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমের গরম হাওয়ায় থমকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু। সাধারণত ১০ জুন দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা আসার কথা থাকলেও, এ বার সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ। ২৯ মে থেকে বালুরঘাট পর্যন্ত এসে থমকে রয়েছে মৌসুমী অক্ষরেখা। আগামী এক সপ্তাহে পরিস্থিতি অনুকূল হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই জানাচ্ছেন আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের বিজ্ঞানীরা। কেরালায় আগে বর্ষা এলেও, দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা দেরিতে আসার নজির এর আগেও রয়েছে। তবে, ১২ জুন দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা আসতে পারে বলে মনে করছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর।
