দেশের সময়, জয়নগর: কালীপুজোর পরদিনই বাংলায় ফের শ্যুটআউট। দুষ্কৃতিদের গুলিতে খুন হলেন জয়নগরের তৃণমূল নেতা। মসজিদে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় তাঁর।
সোমবার কাকভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন। সে সময়ই দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে মৃত্যু হয় তৃণমূল নেতা সাইফুদ্দিন লস্করের। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর থানা এলাকার বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।
সইফুদ্দিন লস্কর নামের ওই তৃণমূল নেতাকে পিছন থেকে গুলি করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চার-পাঁচ জন দুষ্কৃতীর ছোড়া গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় তাঁর শরীর। গুলির শব্দ শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। এবং এক দুই দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলেন। এর মধ্যে এক অভিযুক্তকে স্থানীয়রা পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন বলে অভিযোগ। অপর এক দুষ্কৃতীকে পুলিশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
বছর তেতালিশের সাইফুদ্দিন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য এবং বামনগাছিতে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি ছিলেন। তাঁর স্ত্রী সেরিফা বিবি বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত প্রধান। দীপাবলির পরদিনই এই ঘটনা ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরেই ভোরবেলা নামাজ পড়তে যেতেন সাইফুদ্দিন। সোমবার ভোরেও তিনি নামাজ পড়ার জন্য বেরিয়েছিলেন। সেসময়ই দুষ্কৃতীরা তাঁকে গুলি করে বলে অভিযোগ। গুলির শব্দ শুনে তড়িঘড়ি ছুটে আসেন আশেপাশের লোকজন। তাঁরা রক্তাক্ত অবস্থায় সাইফুদ্দিনকে উদ্ধার করেন। দ্রুত তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় জয়নগর এক নম্বর ব্লকের পদ্মেরহাট গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। খুনের পিছনে ষড়যন্ত্র, নাকি লুকিয়ে রয়েছে অন্য কোনও কারণ তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ধৃত দুই দুষ্কৃতীদের মধ্যে একজন উস্তি থেকে ধরা পড়েছে। অপর জনকে গোদাবর বাঁশতলা থেকে আটক করা হয়েছে। তবে শুধু দুইজন নয়, চার-পাঁচ জন ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান।
খবর পেয়েই পদ্মেরহাট হাসপাতালে আসেন বারুইপুর পূর্ব বিধানসভার তৃণমূলের বিধায়ক বিভাস সর্দার। ঘটনাটির প্রসঙ্গে বিভাসবাবু বলেন, “সাইফুদ্দিন বামনগাছির অঞ্চল সভাপতি। ভোরবেলা নমাজ পড়তে যাওয়ার সময়েই দুষ্কৃতীরা ওকে গুলি করেছে।“ ঘটনার সঙ্গে যুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বিধায়ক।
ধৃত দুষ্কৃতীকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করবে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের পিছনে আর কারা ছিল সে বিষয়ে জানতে চাইছে পুলিশ। সেই সঙ্গে কারা এই দুষ্কৃতীদের খুনের জন্য পাঠিয়েছিল তাও জানার চেষ্টা চলছে। মৃত সইফুদ্দিনের উপর এর আগেও আক্রমণের চেষ্টা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।