দেশের সময় , কলকাতা : রাত পোহালেই রবিবার, ব্রিগেডে তৃণমূলের ‘জনগর্জন’ সভা। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ইতিমধ্যেই জেলার নেতা কর্মীরা আসতে শুরু করেছেন। আর শনিবার বিকেলে সভার প্রস্তুতির কাজ খতিয়ে দেখতে এলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্রিগেড সভার মূল মঞ্চের পাশাপাশি অন্যান্য মঞ্চও ঘুরে দেখেন তিনি।
শনিবার বিকেল ৪ টে নাগাদ ব্রিগেড প্রাঙ্গণে আসেন অভিষেক। সেই র্যাম্পেও নিজে হেঁটে দেখেন অভিষেক।
শেষ মুহূর্তের মঞ্চ নির্মাণের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন তিনি। বেশ খানিকক্ষণ কর্মীদের সঙ্গে কথাও বলেন অবিষেক।তার পর কর্ডলেস মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে আওয়াজ পরীক্ষা করেন। মাঠে জড়ো হওয়া সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘জয় বাংলা! কাল (রবিবার) দেখা হবে সকলের সঙ্গে।’’
দলীয় সূত্রের খবর, জমায়েতের নিরিখে অতীতের যাবতীয় রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে এবারের সমাবেশ। দর্শকাসনে থাকা দলীয় কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে আরও বেশি জনসংযোগের লক্ষ্যেই ব্রিগেডে এই প্রথমবার দেখা মিলবে র্যাম্পের! যে ব়্যাম্পে হেঁটে মাঠমাঠে পৌঁছে যাবেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সূত্রের খবর, মাঝমাঠ থেকেই ‘বিরোধীদের বিসর্জনের গর্জন’ তুলবেন মমতা-অভিষেক।
ব্রিগেডের সভা সফল করতে জোর কদমে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। উত্তরবঙ্গ সহ দূরবর্তী জেলা থেকে আসা দলীয় কর্মীদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থার যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার বিশেষ নজর রাখা হয়েছে। কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামের পাশাপাশি ইকো পার্কেও তৃণমূল কর্মীদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মূল মঞ্চের দু’ পাশে ব্রিগেডে ৬৮/২৪ ফুটের আরও দুটি মঞ্চ থাকছে। একটি মঞ্চে দলের এরাজ্যের বিধায়করা থাকবেন। অন্যটিতে মেঘালয়, অসম, ত্রিপুরা বা উত্তরপ্রদেশের দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। অর্থাৎ কলকাতায় ব্রিগেড সমাবেশের আয়োজন হলেও এর রেশ সারা দেশ ব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চাইছে শাসকদল।
ব়্যাম্প-সহ সবকটি মঞ্চ মিলিয়ে প্রায় ৬০০ জন নেতৃত্ব স্টেজে থাকবেন, যা অতীতে কখনও হয়নি বলে নেতৃত্বর দাবি।
লোকসভার লড়াইয়ের ‘জনগর্জন’ সভা থেকেই ভোটের প্রচার শুরু করবে বাংলার শাসকদল। সম্ভবত এখান থেকেই বাংলার ৪২ কেন্দ্রের প্রার্থী ঘোষণা করতে পারে তৃণমূল। সবদিক থেকেই রবিবার ঘাসফুল শিবিরের এই ব্রিগেড সমাবেশ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আর হয়ত সেই কারণেই ব্রিগেডের সভামঞ্চও তৈরি হচ্ছে বিশেষভাবে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, অভিষেক মানেই নতুন স্ট্র্যাটেজি , নয়া চমক। তাই ব্রিগেড সমাবেশ ঘিরে নতুন কী কী চমক থাকছে তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের উৎসাহ কিছু কম নেই। যার মধ্যে প্রথমেই মঞ্চ নির্মাণে অভিনবত্ব। এবারের ব্রিগেডে তিনটি মঞ্চের সঙ্গে জনগণকে ‘কানেক্ট’ করবে ৩৩০ ফুট দীর্ঘ র্যাম্প বা পাটাতন। এদিন সেই র্যাম্পের প্রস্তুতিও খতিয়ে দেখেন অভিষেক।
প্রসঙ্গত, ব্রিগেডের সভার স্লোগানও স্থির করে ফেলেছে তৃণমূল। মূল মঞ্চের পটভূমিতে থাকছে বিশাল ‘এলইডি ডিসপ্লে বোর্ড’। যাকে পরিভাষায় বলা হচ্ছে ‘ভিডিয়ো ওয়াল’। এমন তিনটি দেওয়ালের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তার নীচে লেখা হয়েছে, ‘জনগণের গর্জন, বাংলা বিরোধীদের বিসর্জন— তৃণমূলই করবে অধিকার অর্জন’।