বৃহস্পতিবার মুম্বই হামলার মূল চক্রী তাহাউর রানাকে অবশেষে আমেরিকা হয়ে দেশে ফেরাতে সফল হয়েছে নয়াদিল্লি । সেই আবহেই জানা গেল ২০২১ সালে হরিদ্বারে আয়োজিত কুম্ভমেলাতেও নাকি নাশকতার ছক কষেছিলেন তাহাউর।
এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ রানাকে নিয়ে দিল্লি বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে বিমানটি। রানাকে ভারতে ফেরানোর পরে একটি বিবৃতি দিয়ে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) জানিয়েছে, ২০০৮ সালের ওই জঙ্গি হানার মূল চক্রী ছিলেন রানাই।
বিবৃতিতে এনআইএ জানিয়েছে, “২৬/১১ মুম্বই জঙ্গি হানার মূলচক্রী তাহাউর হুসেন রানাকে বৃহস্পতিবার ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ২০০৮ সালের ওই ঘটনায় মূল ষড়যন্ত্রীকে বিচারের আওতায় আনার জন্য বেশ কয়েক বছর ধরে চেষ্টা চলছিল।”
এই পরিস্থিতে এক সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এনআইএ-র পদস্থ কর্তা লোকনাথ বেহেরা জানান, “২১ সালের হরিদ্বারের কুম্ভমেলাতেও নাশকতার ছক কষেছিলেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডার ব্যবসায়ী তাহাউর। শুধু তাই নয়, তার জন্য দক্ষিণ ভারতের কোচিন এলাকা থেকে বেশ কিছু সন্ত্রাসবাদীকেও নিয়োগ করেছিলেন তিনি।”
এত দিন লস অ্যাঞ্জেলেসের কারাগারে আটক ছিলেন তিনি। অভিযোগ, পাক বংশোদ্ভূত আর এক সন্ত্রাসবাদী ডেভিড কোলম্যান হেডলির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল।
নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লশকর-এ-ত্যায়বার সঙ্গেও যোগ ছিল তাহাউরের। পাশাপাশি জঙ্গি সংগঠন হরকত-উল-জিহাদি ইসলামির (হুজি) সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল তাঁর।
২৬/১১ মুম্বই জঙ্গি হামলার মূল ষড়যন্ত্রকারী তাহাওয়ুর হুসেইন রানাকে একটি বিশেষ বিমানে করে এদিন ভারতে আনা হয়েছে। আমেরিকা থেকে তাঁর প্রত্যার্পণ হয়েছে, যা ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টায় এক বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিশেষ বিমানে দিল্লির পালম টেকনিক্যাল এয়ারপোর্টে অবতরণের পর তাঁকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)-র সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি বিশেষ জেরা করার ঘর প্রস্তুত করা হয়েছে।
রানাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার করে তিহার জেলে রাখা হবে বলে জানা গেছে। দিল্লি পুলিশ স্পেশাল সেল ও SWAT কমান্ডোদের কড়া নিরাপত্তায় তাঁর যাতায়াত ও হেফাজতের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই মামলায় এনআই-এর হয়ে বিচারপ্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন আইনজীবী নরেন্দ্র মান।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর, ১০ জন পাকিস্তানি জঙ্গি মুম্বই শহরে একাধিক জায়গায় সন্ত্রাস চালিয়ে ১৬৬ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছিল। সেই হামলার অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী রানার বিরুদ্ধে ভারতের দীর্ঘদিনের মামলা অবশেষে এখন দেশে বিচারাধীন। হেডলির সঙ্গে মিলেই ২৬/১১-র মুম্বই হামলার বিষয়টি ছকেছিলেন রানা।