Swami Vivekananda birthday:স্বামী বিবেকানন্দের ১৬৩-তম জন্মদিন, দেশজুড়ে পালিত জাতীয় যুব দিবস

0
3

দেশের সময়: আজ স্বামী বিবেকানন্দের (Swami Vivekananda Birth Anniversary) ১৬৩-তম জন্মদিন। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের বিভিন্ন কেন্দ্রে পালিত হচ্ছে আজকের দিনটি। উত্তর কলকাতার সিমলা স্ট্রিটে (Shimla Street) স্বামীজির বাড়িতেও বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সকাল থেকেই ভক্ত সমাগম হয়েছে। গোটা দেশে বিবেকানন্দের জন্মদিনটি জাতীয় যুব দিবস (National Youth Day) হিসেবে পালিত হয়। সেই উপলক্ষ্যেও নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। 

১৯৮৫ সালে স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনটিকে জাতীয় যুব দিবস হিসেবে ঘোষণা করে তত্‍কালীন কেন্দ্রীয় সরকার। যারপর থেকেই দেশজুড়ে স্বামী বিবেকানন্দর-র জন্মদিন হিসেবে যে দিনটি পালিত হয়ে আসছে।স্বামীজির জন্মদিবস উপলক্ষে এ দিন ৪১ তম জাতীয় যুব দিবস।

স্বামীজির ১৬৩ তম জন্মদিন উপলক্ষে নদীয়ার শিলিন্দা বিবেকানন্দ সংঘ ও পাঠাগারের সদস্যরা ১৬৩ টি প্রদীপ জ্বেলে প্রতীকী ছবি আঁকলেন। ছবি ~ পার্থ সারথি নন্দী ।

যুব সমাজের প্রতি স্বামীজির বার্তা ছিল “ওঠো , জাগো এবং লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থেমো না।” কাজ সম্পর্কে বিবেকানন্দর বার্তা, “সারাদিন চলার পথে যদি কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হও, তাহলে বুঝবে তুমি ভুল পথে চলেছ।” শিকাগোর বক্তৃতা রাখতে গিয়ে বিবেকানন্দ শুরু করেছিলেন, ‘ভাই ও বোন’ বলে সম্বোধন করে। তাঁরই বক্তব্য, ‘জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।’

চরিত্র গঠন সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য ছিল, “নিজের উপর বিশ্বাস না এলে, ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস আসে না।’ তাঁর কথায়, “যে রকম বীজ আমরা বুনি, সে রকমই ফসল আমরা পাই। আমরাই আমাদের ভাগ্য তৈরী করি, তার জন্য কাউকে দোষারোপ করার কিছু নেই, কাউকে প্রশংসা করারও কিছু নেই। ” সঙ্গে ভয়ডরহীন হয়ে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়ে স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন,  ‘ভয়ই মৃত্যু, ভয়ই পাপ, ভয়ই নরক, ভয়ই অসাধুতা, ভয়ই ভুল জীবন, এই বিশ্বের সমস্ত নেতিবাচক চিন্তা-ভাবনা ও ধারণা’ এই ভয়ের অসৎ শক্তি থেকেই সৃষ্টি হয়েছে।’

স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে ফিরে দেখা তাঁর জীবনের কিছু বিশেষ ঘটনা :

প্রতি বছর ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দ জয়ন্তী পালিত হয়। বিবেকানন্দের জন্মদিনটি দেশে জাতীয় যুব দিবস হিসেবে পালিত হয়।

স্বামী বিবেকানন্দ ১৮৬৩ সালের ১২ জানুয়ারি কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ছোটবেলার নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। নরেন্দ্রনাথ খুব অল্প বয়সেই আধ্যাত্মিকতার পথ অবলম্বন করেছিলেন। আধ্যাত্মিক পথ অবলম্বন করার পর তিনি স্বামী বিবেকানন্দ নামে পরিচিত হন। তাঁর বাবা ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের একজন আইনজীবী এবং মা ছিলেন একজন ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির মহিলা।

স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন ভারতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য অনুযায়ী প্রতি বছর রামকৃষ্ণ মিশন, রামকৃষ্ণ মঠ এবং এর অনেক শাখা কেন্দ্রে পালিত হয়। এটি আধুনিক ভারতের স্থপতি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন স্মরণ করার জন্য উদযাপিত হয়। চলুন জেনে নিই স্বামী বিবেকানন্দের সাথে সম্পর্কিত কিছু মজার এবং প্রেরণাদায়ক ঘটনা।

অল্প বয়স থেকেই স্বামী বিবেকানন্দ আধ্যাত্মিকতার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। পড়াশোনায় ভালো হওয়া সত্ত্বেও অল্প বয়সে তার গুরুর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তিনি জাগতিক আসক্তি ত্যাগ করেন এবং সন্ন্যাসী হন। অবসর গ্রহণের পর তার নাম রাখা হয় বিবেকানন্দ। স্বামী বিবেকানন্দ ১৮৯৭ সালে কলকাতায় রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। একই সময়ে, ১৮৯৮ সালে, গঙ্গা নদীর তীরে বেলুড়ে রামকৃষ্ণ মঠও প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

১৮৯৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকায় বিশ্ব ধর্ম সাধারণ পরিষদের আয়োজন করা হয়। স্বামী বিবেকানন্দও এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এখানে তিনি হিন্দিতে আমেরিকা ভাই ও বোনেরা  বলে বক্তৃতা শুরু করেন। বিবেকানন্দের ভাষণে শিকাগোর আর্ট ইনস্টিটিউটে পুরো দুই মিনিট করতালি ধ্বনিত হয়েছিল, যা ভারতের ইতিহাসে গৌরব ও সম্মানের ঘটনা হিসেবে লিপিবদ্ধ রয়েছে। এই ভাষণের পর বিশ্ববাসী তার আধ্যাত্মিক চিন্তা ও দর্শনে মুগ্ধ হয়।

বিবেকানন্দ প্রায়ই একজন সাধারণ সন্ন্যাসীর পোশাক পরতেন। একদিন এই কাপড় পরে বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। তার পোশাক একজন বিদেশীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সেই বিদেশী বিবেকানন্দর পাগড়ি টেনে নিয়েছিল। বিদেশীর এই কর্মকাণ্ডের পর স্পষ্ট ইংরেজিতে এমন করার কারণ জিজ্ঞেস করলে বিদেশি অবাক হয়ে যান। সেই বিদেশী বুঝতেই পারলেন না যে, সন্ন্যাসী রূপে এই ব্যক্তি এত ভালো ইংরেজি জানেন কী করে। তারপর তিনি বিবেকানন্দকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি শিক্ষিত? তখন স্বামী বিবেকানন্দ বিনয়ের সাথে বললেন,  হ্যাঁ, আমি শিক্ষিত এবং একজন ভদ্রলোক। তখন বিদেশি বলল তোমার জামাকাপড় দেখে তো মনে হয় না তুমি ভদ্রলোক। এর উত্তরে স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, আপনার দেশে একজন দর্জি একজন মানুষকে ভদ্রলোক করে, কিন্তু আমার দেশে একজন মানুষের আচরণ তাঁকে ভদ্রলোক করে। এমন উত্তর শুনে বিদেশী বিব্রতবোধ করলেন এবং নিজের ভুল বুঝতে পারলেন।

Previous articleDesher Samay ePaper দেশের সময় ই পেপার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here