দেশের সময়, কলকাতা: শুক্রবার সাত সকালে দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুর বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডির টিম। পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে। টানা সাড়ে ১৪ ঘণ্টা ধরে ম্যারাথন তল্লাশি অভিযানের পর শ্রীভূমি ছেড়েছে ইডি।
সুজিতের বাড়িতে ইডির হানার পর থেকেই বিজেপির বিভিন্ন নেতা বিভিন্ন বাঁকা খোচা দিয়েছেন। উঠে এসেছে, ‘রোল বিক্রির’ কথাও। রোল বিক্রি করে কীভাবে কোটি টাকার মালিক, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এদিকে ইডির টিম বাড়ি ছাড়তেই, সেই নিয়ে গর্জে উঠলেন মন্ত্রীমশাই।
ইডির তদন্তকারী অফিসাররা চলে যেতেই সাংবাদিক বৈঠকে বসেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কটাক্ষের সুরে শীতপোশাক প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দেন প্রাক্তন সতীর্থ সুজিতকে। অন্য দিকে, মন্ত্রীর সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে তীর্যক মন্তব্যে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দাবি করেন, সুজিত নাকি আগে রোল বিক্রি করতেন!
রোল বিক্রি নিয়ে খোঁচার জবাব দিয়ে বললেন, “শুনেছি বলা হচ্ছে, সুজিত বসু নাকি রোল বিক্রি করত। হ্যাঁ, রোল বিক্রি করতাম। গর্বের সঙ্গে বিক্রি করতাম। কিন্তু কারও পকেট কাটতাম না। কারও থেকে চুরি করতাম না।” রাজ্যের মন্ত্রীর স্পষ্ট দাবি, তিনি এই ঘটনার সঙ্গে কোনওভাবেই জড়িত নন। ইডির তদন্তকারী অফিসারদের সঙ্গে সবরকম সহযোগিতা করেছেন বলেও জানালেন সুজিত বসু।
প্রায় ১৪ ঘণ্টার ম্যারাথন তল্লাশি শেষে ইডি সুজিতের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই বিজেপিকে জবাব দিলেন দমকলমন্ত্রী। সেখানে নাম করে আক্রমণ করেন শুভেন্দু, সুকান্তদের। তিনি বলেন, ‘‘একটা কথা আপনারা মনে রাখবেন, কর্মক্ষেত্রে যদি কেউ এক পয়সা সুজিত বোসকে দিয়ে থাকেন, সুজিত বোস আজকেই রেজিগনেশন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেবে।’’
বস্তুত, এর পরেই সরাসরি শুভেন্দুকে আক্রমণে যান সুজিত। তিনি বলেন, ‘‘কাল চার দিনের জন্য গঙ্গাসাগরে যাচ্ছি। শীতের পোশাক আমি নেব। তার পর তো আমি ফিরছি। বিরোধী দলনেতা সবাইকে চোর বলছেন, আয়নায় নিজের মুখটা দেখুন! তোয়ালে পেঁচিয়ে টাকা নিয়েছেন। কত দিন বিজেপি আপনাকে গার্ড করবে?’’ এর পরেই সুজিত নিশানা করেন সুকান্তকেও। তাঁকে রাজনীতির লোক বলে মনে করেন না বলে দাবি করে সুজিত বসু৷
বেশ কিছু নথি ছাড়াও মন্ত্রীর মোবাইল ফোনটি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। এ কথা জানিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন সুজিত। তাঁর দাবি, তিনি দমকলের মতো গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরি বিভাগের মন্ত্রী। তাই তাঁর ফোন অত্যন্ত প্রয়োজন। কিন্তু তা-ও ফোনটি তাঁকে দিয়ে যায়নি ইডি বলেই অভিযোগ সুজিতের। যদিও ইডির তদন্তে পরিবারের সকলে মিলেই সমস্ত রকম সহায়তা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।