সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র ফোন কল রেকর্ডের সঙ্গে তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা মিলে গিয়েছে বলে ইডির একটি অসমর্থিত সূত্রে দাবি করা হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ভিন্ন প্রশ্ন তুললেন তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
দেশের সময় ওয়েবডেস্ক ফরেন্সিক রিপোর্টে মিলে গেল ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বর। সূত্রের খবর, সিভিক ভলান্টিয়র রাহুল বেরার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন ‘কাকু’-ই। তবে জেরা চলাকালীন বারবার অস্বীকার করেছিলেন সুজয় কৃষ্ণ। তাহলে কি নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গোয়েন্দাদের হাতে আসবে আরও বড় কোনও ক্লু? উঠছে প্রশ্ন।
বস্তুত, কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর পরীক্ষা নিয়ে কম টালবাহানা হয়নি। এর আগে একবার নমুনা নিতে গিয়ে এমএসভিপি-র বাধার মুখে পড়েছিল ইডি। সেই নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা। শেষমেশ চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে জোকা ইএসআই হাসপাতালে কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় সুজয় ভদ্রকে।
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে যেদিন সুজয়ের বাড়িতে প্রথম হানা দিয়েছিলেন গোয়েন্দারা, সেই দিনই তদন্তকারী সংস্থার অপর একটি টিম হানা দিয়েছিল রাহুল বেরার বাড়িতে। এই রাহুল বেরা পেশায় একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। ইডির দাবি, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা রয়েছে ‘কাকুর’। সেদিনের অভিযানে রাহুল বেরার ফোন বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি।
গোয়েন্দাদের দাবি, রাহুল বেরা নামে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের সঙ্গে একজনের টেলিফোনিক কথোপকথনের একটি ফাইল ইডির হাতে এসেছিল। ওই ব্যক্তি সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র বলে দাবি ইডির। ইডির দাবি, অডিও ক্লিপিংয়ে শোনা যাচ্ছে, রাহুলকে বলা হচ্ছে, মোবাইলে থাকা নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য মুছে ফেলো।
এই গলা যে কাকুর সেই কণ্ঠস্বরেরই নমুনা নিয়েছিল ইডি। আর নমুনা পরীক্ষার পর সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবের রিপোর্ট বলছে, সিভিক ভলান্টিয়ারের সঙ্গে যিনি কথা বলছেন তিনি সুজয় কৃষ্ণই।
বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমানের কালনায় সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। সেখানে সংবাদমাধ্যম তাঁকে প্রশ্ন করে, ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে কালীঘাটের কাকুর ফোন কল রেকর্ড এবং সংগৃহীত কণ্ঠস্বরের নমুনা মিলে গিয়েছে। জবাবে অভিষেক বলেন, ‘‘সেটা ইডি এবং কোর্টের বিষয়। আমি এখানে কী বলব?’’ এর পরেই অভিষেক বলেন, ‘‘যাঁর সঙ্গে (সুজয়কৃষ্ণের) কথা হয়েছিল, তাঁকে কি ইডি গ্রেফাতার করেছে?’’ কার সঙ্গে কথা হয়েছিল? অভিষেকের জবাব, ‘‘আমি কেন বলব? সেটা ইডি বলবে।’’
এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “এই ভয়েস স্যাম্পেল মিলবে সেটা সকলের জানা। তবে এই ভয়েস স্যাম্পেলের উপর নির্ভর করে যদি হরিপালের বড় কোনও ডাকুকে ধরে মানুষ আর সেটা নেবে না।” অপরদিকে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “এটি আদালতের বিচারাধীন বিষয়। এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”