দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গ্রুপ সি মামলায় সুপারিশ পাওয়া কতজনের ওএমআর-এ কারচুপি হয়েছে, জানতে চাইল আদালত। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট কমিশনের কাছে জানতে চায়, সুপারিশ করা হয়েছে, এমন কতজনের ওএমআর শিটে কারচুপি হয়েছে?
এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এই মামলার শুনানি চলছিল। স্কুল সার্ভিস কমিশন এদিন বিচারপতির প্রশ্নের জবাবে জানান, ৭৫৮ জনের সুপারিশ করা হয়েছিল, যাদের ওএমআরে কারচুপি হয়েছে। এরপরই বিচারপতি জানতে চান, তাহলে এই প্রার্থীরা চাকরি করতে পারেন? একইসঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, ৩৮১ জন, যাদের কমিশন সুপারিশ করেনি, কিন্তু চাকরি পেয়েছে। সেইসব চাকরি বাতিলের নিয়মই বা কী? এই সমস্ত সওয়াল জবাবের পর ৪টে নাগাদ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, গ্রুপ সি-তে কর্মরত ৮৪২ জনের চাকরি বাতিল করা হোক। শনিবারের মধ্যেই চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
শুধু তা নয়, ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে নতুন নিয়োগ করতে হবে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে নতুন বাছাই শুরু করে দিতে হবে কমিশনকে।
গ্রুপ সি নিয়োগ মামলায় এর আগে ৩৪৭৭ জনের ওমআরশিট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। দেখা গিয়েছে, তার মধ্যে ৩৪১৫ জনের ওএমআর শিটই বিকৃত করা হয়েছে।
এ ছাড়া ৫৭ জনকে কোনও সুপারিশ পত্র ছাড়াই নিয়োগ করা হয়েছে। ওই ৫৭ জন এবং ওএমআর শিট বিকৃত করার ফলে চাকরি পাওয়া ৭৮৫ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মার্চ কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে গ্রুপ সি মামলায় হলফনামা দিয়েছিল কমিশন। আদালতে কমিশন জানিয়েছিল, ২০১৬ সালের গ্রুপ সি পদে নিয়োগে আরএসএসটি পরীক্ষার্থীদের নম্বরে হেরফের রয়েছে। ওএমআর শিটের প্রাপ্ত নম্বরে সঙ্গে কমিশনের থাকা নম্বরের কোনও মিল নেই।
তারপরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় অবিলম্বে গ্রুপ সি পরীক্ষার্থীদের ওএমআর শিট পরীক্ষা করে প্রকাশ করতে বলে কমিশনকে। সময়ও বেঁধে দেন বিচারপতি। তিনি বলেন, আগামী ৯ মার্চের মধ্যে কমিশনকে তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কমিশন সেই তালিকা প্রকাশ করে।
শুক্রবার সকালে এই গ্রুপ সি মামলার ছিল। সেখানে অভিযোগ ওঠে ৫৭ জনের চাকরি সুপারিশ দেয়নি কমিশন। এদিনের মামলার শুনানিতে বিষয়টি উত্থাপন হতে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘সুপারিশপত্র ছাড়া কীভাবে চাকরি পেলেন এই ৫৭ জন? কে তাঁদের চাকরি দিল?’ তারপরই শুনানি মুলতুবি হয়ে যায়।
তার আগে অবশ্য বিচারপতি দু’ঘণ্টার মধ্যে ওই ৫৭ জনের তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশ মতো তালিকা প্রকাশ করেছিল কমিশন।