টাইমলাইন শেষ! আশ্বাসই সার! নির্ধারিত সময়ের পরও এসএসসি যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ না করায় আন্দোলন আরও তীব্রতর করার ডাক দিলেন চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা।
গোটা ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন আন্দোলনকারী চাকরিহারারা। একই সঙ্গে চাকরিহারাদের জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দু’ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণারও দাবি তুলেছেন তাঁরা। যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ না করা পর্যন্ত এসএসসি ভবন ঘেরাও করে রাখা হবে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।
তাঁদের সাফ কথা, “দুর্নীতি করেছে রাজ্য, ফলে সব দায় রাজ্যকে নিতে হবে। এর দায় যোগ্য শিক্ষকরা কেন নেবেন?” এই মুহূর্তে এসএসসি ভবনের সামনে ক্রমশ বাড়ছে উত্তেজনা। ভেতরে ও বাইরে চাকরিহারাদের ভিড়। পরিস্থিতি সামলাতে কার্যত নাকানিচোবানি খাচ্ছে পুলিশ। সন্ধেয় দু’পক্ষের মধ্যে একবার ধস্তাধস্তিও হয়ে গিয়েছে।

আন্দোলনকারী চাকরিহারাদের সাফ কথা, আর আশ্বাসে হবে না, এবার কাজে করে দেখাতে হবে। তালিকা না প্রকাশ করা পর্যন্ত ঘেরাও আন্দোলন চলবে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সামনেও অবস্থান বিক্ষোভ চলছে। সেখানে অবস্থানে বসেছেন শিক্ষা কর্মীরা।

গত ১১ এপ্রিল বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের সঙ্গে বৈঠকের পর জানা গিয়েছিল, আইনি পরামর্শ নিয়ে দেড় সপ্তাহের মধ্যে যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ্যে আনতে পারে এসএসসি। সেই হিসেব মোতাবেক ২১ এপ্রিল সোমবার পৃথক তালিকা প্রকাশ করার কথা ছিল স্কুল সার্ভিস কমিশনের। এদিন বিকেলে কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন চাকরিহারা শিক্ষকদের প্রতিনিধি দল। রাত আটটা নাগাদ তাঁরা বাইরে এসে জানান, থার্ড কাউন্সেলিং পর্যন্ত যাঁরা রয়েছেন তাঁদের বৈধ বলে ধরা হচ্ছে।

খবর ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয় এসএসসি চত্বরে। চাকরিহারাদের বক্তব্য, আদালতে হলফনামা দিয়ে এসএসসি বলেছিল, ৬ হাজার ২০০-র বেশি কিছু চাকরি সুপারিশের ভিত্তিতে হয়েছিল। অর্থাৎ সেগুলি বাদে বাকিগুলি বৈধ। তাহলে সেদিন কি এসএসসি ভুল তথ্য দিয়েছিল? নাকি অযোগ্যদের আড়াল করতে পরিকল্পিতভাবে চতুর্থ কাউন্সেলিং থেকে বাকি তালিকা অযোগ্য বলে বলছে?
এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী বা এসএসসি চেয়ারম্যানের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও জানা যায়নি। সূত্রের খবর, তালিকা প্রকাশের জন্য আরও কিছুটা সময় চেয়েছে এসএসি কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে যোগ্য ও অযোগ্যদের প্রকৃত তালিকা না প্রকাশ করা পর্যন্ত ঘেরাও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চাকরিহারারা। সব মিলিয়ে এসএসসি ভবনে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে।

এসএসসির তরফে বলা হয়েছিল, আজ সন্ধে ৬টা নাগাদ চাল-কাঁকর আলাদা করে দেওয়া হবে। সেই মতোই প্রমাদ গুনছিলেন চাকরিহারারা। কিন্তু দেখা গেল যে বৈধতার কথা বলা হচ্ছে তাতে আশার আলো তো নয়ই, বরং নতুন করে বিতর্ক তৈরি হল।
চাকরিহারাদের দাবি, বৈঠক শেষে সোমবার কোনও তালিকা প্রকাশিত হবে না বলেই জানিয়েছে এসএসসি। সেই কারণে সারা রাত এসএসসি ভবন ঘেরাও করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। তালিকা প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত এসএসসি চেয়ারম্যানকে ঘেরাও করে রাখারই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও, এসএসসির তরফে প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।
