দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়ে জমিয়ে আড্ডা মারলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ । বিজেপি-র নামী নেতার সঙ্গে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, রাহুল সিনহা, স্বপন দাশগুপ্তের মতো স্থানীয় নেতারাও।
সৌরভের বাড়িতে অমিত শাহকে অভ্যর্থনা জানান মহারাজ স্বয়ং, পাশাপাশি ছিলেন দাদা স্নেহাশিস, স্ত্রী ডোনা ও মা নিরূপা দেবীও। তবে অমিত শাহ বেহালার বাড়িতে আসার আগে সৌরভ আগেই ভিক্টোরিয়ার অনুষ্ঠান থেকে চলে এসেছিলেন। তিনি এসে সবকিছু তদারকি করেন।
ভিক্টোরিয়ার অনুষ্ঠান শেষেই সৌরভদের বাড়িতে যান অমিত শাহ। তাঁর জন্য নিরামিষ বাঙালি খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। শাহি ভোজের মেনুতে ছিল, ভাত, রুটি, লুচি, বেগুন ভাজা, ডাল মাখানি, আলুর দম, ভেজিটেবল কাটলেট, পনির। শেষপাতে দই, রসগোল্লা, কাজু বরফি। মা নিরূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে এই সমস্ত পদ রান্না করা হয়েছিল।
বিধানসভা ভোটের আগেই সৌরভ বিজেপি-র মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হতে পারেন, এমন জল্পনা ছিল। কিন্তু যাবতীয় সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করে সৌরভ ক্রিকেটেই থেকে যান। যদিও শোনা যায়, মহারাজ বিজেপি-র সমর্থনেই বোর্ড প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। কারণ সৌরভের সঙ্গে অনুরাগ ঠাকুরের দারুণ সম্পর্ক, তাঁরা বহুদিনের বন্ধুও।
অমিত শাহ প্রবল চাপানউতোরের পরেও সৌরভের বাড়িতে যাবেন, অনেকেই সেটি ভাবতে পারেননি। দুপুরে বিজেপি কর্মী খুনের প্রতিবাদ জানিয়ে কাশীপুরেও হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এরকম উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেও মহারাজের বাড়িতে নৈশভোজ সারবেন, সেটিও তাৎপর্যবাহী।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও চেয়েছিলেন এবার সৌরভের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে। তাই পূর্ব নির্ধারিত সূচী অনুযায়ী তিনি বেহালা চৌরাস্তা মা চণ্ডীভবন-এ হাজির হয়ে গিয়েছিলেন রাত ৮-২৫ নাগাদ।
আগেরদিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, সৌরভের বাড়িতে অমিতজি গেলে তাঁকে যেন রসগোল্লা ও মিষ্টি দই খাওয়ায়। সৌরভ পত্নী ডোনা এদিন পাতে সাজিয়ে দিয়েছিলেন দই, মিষ্টি, যেহেতু অমিত শাহ ডায়াবেটিসের রোগী, সেই কারণে বেশি মিষ্টি খাননি।
তিনি যে নিরামিষাশী, সেটি মহারাজ আগেই জানিয়েছিলেন। সেই মতো তাঁর জন্য বাঙালি খাবারের পাশে গুজরাতি ডিশও সাজিয়ে দেওয়া হয়।
কী নিয়ে দু’জনের মধ্যে আলোচনা হল, সেই নিয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে অনেকেই উদাসীন ছিলেন। কারণ তৃণমূল নেত্রী এই সাক্ষাৎকে অতটা গুরুত্ব দিতে চাননি। এই সাক্ষাৎ যে রাজনীতির বাইরে, সেটিও পরিষ্কার করেছিলেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক স্বয়ং।
বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, অমিত নিজেই সৌরভের বাড়িতে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। সেই মতোই বার্তা পৌঁছয় বেহালায়। তার পর থেকেই নৈশভোজের জন্য তোড়জোড় শুরু হয়েছিল। তবে প্রত্যাশিত ভাবেই এর মধ্যে উভয়পক্ষই ‘রাজনীতি’ আনতে চাইছে না। কিন্তু রাজনীতির অনুষঙ্গ এসেই পড়ছে। কারণ, রাজ্যে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি যে সৌরভকে ‘মুখ্যমন্ত্রীর মুখ’ হিসেবে বিধানসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে অনুরোধ করেছিল, তা কারওরই অজানা নয়।