সত্তর দশকের গোড়ার দিক। গিটার, ড্রামসের সঙ্গে তখনও বিশেষ পরিচয় হয়নি মধ্যবিত্ত বাঙালির। গান বলতে তখন হেমন্ত-মান্না। আর সংস্কৃতির নাম রবীন্দ্র-নজরুল সন্ধ্যা। এমনই এক সাংস্কৃতিক আবহে বনগাঁর ছয়ঘরিয়া গ্রামে চাষের কাজ করতে করতে গাইতেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সেই বিখ্যাত গান ঝড় উঠেছে বাউল বাতাস থেকে শুরু করে মহানায়ক উত্তম কুমারের বাংলা ছবির অসংখ্য গান । দূর থেকে অনেকেই তাঁর গান শুনে ভাবতেন ধান ক্ষেতে হেমন্ত বাবু কখন এলেন । সকলেই অবাক হতেন তাঁর কন্ঠে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গান শুনে। দেখুন ভিডিও
মহানায়ক উত্তম কুমারের ওরা থাকে ওধারে, সাগরিকা, পথে হল দেরী, হারানো সুর, অগ্নিপরীক্ষা, সবার উপরে, জীবন তৃষ্ণা, শিল্পী, সপ্তপদী—র মতো আরও অনেক ছবির গান গেয়ে একের পর এক মঞ্চ মাতিয়েছেন নির্মল বাব । পেয়েছেন শ্রোতাদের করতালি, ভালবাসা । গানের সুবাদে রোজগার ও হয়েছে বেশ ভালই । সময়, সমাজ পাল্টেছে, বদলেছে বাংলা ছবি বদলেছে বাংলা গানও ।
শিল্পীর কথায় এখন আর সেভাবে হেমন্ত বাবুর গান শুনতে ডাক পড়ে না তার । তবে তিনি গান ছাড়তে না রাজ । চাষের কাজ করতে করতেই গান গেয়ে চলেছেন আজও । নির্মল বাবু আজও স্বপ্ন দেখেন তিনি বাংলা ছবিতে প্লেব্যাকের জন্য ডাক পাবেন কোন এক দিন। সেই আশায় তিনি আপন মনে গেয়ে চলেছেন ‘গোধূলির রঙে হবে এ ধরণী স্বপ্নের দেশ তো’। চাষি ঘরের শিল্পী নির্মল বিশ্বাস নিজেই সেই স্বপ্নের ফেরিওয়ালা হয়ে ঘুরে বেড়ান ছয়ঘরিয়া গ্রামের মাঠের এপ্রান্ত থেকে ও প্রান্তে । সঙ্গী শুধু হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গান ।