দেশের সময় কলকাতা: গত ৫ জানুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় তৃণমূল নেতা শঙ্করের বাড়িতে প্রায় ১৭ ঘণ্টা টানা তল্লাশি চালায় ইডি। তার পর রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। শঙ্করকে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে পড়ে ইডি। পরে তাঁকে আদালতে হাজির করিয়ে ইডি জানায়, ২০ হাজার কোটি টাকার বিদেশে লেনদেন হয়েছে শঙ্করের একাধিক ফরেক্স সংস্থার মাধ্যমে। রেশন ‘দুর্নীতি’র সঙ্গে সেই টাকার যোগ থাকতে পারে বলে ইডির অনুমান। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, ওই ২০ হাজার কোটির মধ্যে অন্তত ৯ থেকে ১০ হাজার কোটি জ্যোতিপ্রিয়ের। শঙ্কর অবশ্য সে সব অভিযোগ প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছেন।
ইডি সূত্রের খবর ,রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্য ওরফে ডাকুর বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের ব্যবসাও। ইডির তরফে এর আগে আদালতে জানানো হয়েছিল, বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্করের এ রাজ্যে মোট ১৯টি বৈদেশিক মুদ্রার এক্সচেঞ্জের ব্যবসা রয়েছে। সম্প্রতি শঙ্কর আঢ্যর সঙ্গে সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি সংস্থার তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল। সেখান থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছিল প্রচুর নথি। আর সেখান থেকেই এবার চাঞ্চল্যকর দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার।
ইডির দাবি, গত এক দশকের মধ্যে (২০১২-২০২৩) শঙ্করের এই সংস্থাগুলির মাধ্যমে প্রায় ১০০০ কোটি টাকার ভারতীয় মুদ্রাকে বিদেশি মুদ্রায় বদল করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সন্দেহ, এই বিদেশি মুদ্রায় বদলের মাধ্যমেই দুর্নীতির টাকা সরানো হয়ে থাকতে পারে।
ইডি সূত্রের দাবি, এই এক হাজার কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা বিদেশি মুদ্রায় বদল করা হয়েছে শঙ্করের চারটি সংস্থার মাধ্যমে। তাছাড়া হিরামতি এক্সপোর্ট সংস্থার মাধ্যমে ১১৭ কোটি টাকা বিদেশি মুদ্রায় বদল করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শুরু থেকেই ইডির স্ক্যানারে রয়েছে শঙ্কর আঢ্যর এই বিদেশি মুদ্রা এক্সচেঞ্জের সংস্থাগুলি। এগুলির মাধ্যমেই দুর্নীতির কালো টাকা পাচার করা হয়েছে বলে সন্দেহ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসারদের।
শনিবার সকালে যখন শঙ্করকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখনও টাকা বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। জানতে চাওয়া হয়েছিল, জ্যোতিপ্রিয়র হয়ে তিনি টাকা বাইরে পাঠিয়েছেন কি না। যদিও বনগাঁর এই দাপুটে তৃণমূল নেতার দাবি, তিনি এক পয়সাও নেননি। যা বলা হচ্ছে, পুরোটাই অভিযোগ, কোনও প্রমাণ নেই।