দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সোমবার ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রেক্ষিতে জরুরি ভিত্তিতে ডাকা একটি বিশেষ অধিবেশন ডেকেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। সেখানে ইউক্রেনের পরিস্থিতি বোঝাতে যুদ্ধে নিহত এক রুশ সেনার এই শেষ বার্তা পাঠ করে শোনালেন ইউক্রেন রাষ্ট্রদূত। বোঝাতে চাইলেন, কী ভাবে সাধারণ নাগরিককেও রাশিয়ার হামলার বলি হতে হচ্ছে।
ক্রিমিয়ায় যুদ্ধে নিহত ওই সেনা তাঁর মাকে পাঠানো শেষ বার্তায় লেখেন,
‘‘মা, আমি এখন ইউক্রেনে। এখানে সত্যিই যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে। আমি ভয় পাচ্ছি। একসঙ্গে সব শহরে বোমা বর্ষণ করছি আমরা। এমনকি সাধারণ মানুষকেও আক্রমণ করছি… খুব কষ্টের মা।’’
‘‘আমাদের বলা হয়েছিল, ইউক্রেন নাকি স্বাগত জানাবে। এখানে এসে দেখলাম, তাঁরা আমাদের সাঁজোয়ার নীচে পড়ছে, চাকার তলায় নিজেদের নিক্ষেপ করছে। কোনও ভাবেই আমাদের ইউক্রেনে ঢুকতে দিতে চায় না তাঁরা। মা, ওঁরা আমাদের ফ্যাসিস্ত বলে ডাকে। এটা খুব কঠিন।’’
চিঠিতে রুশ সেনার মা জানতে চান, ছেলের ঠিকানা এখন কী, তার কাছে পার্সেল পাঠানো যাবে? উত্তরে ছেলেটি লেখে, ‘‘ইউক্রেনে আছি। গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলতে ইচ্ছে করছে।’’
রাষ্ট্রপুঞ্জের ভরা সভায় এই মা-ছেলের এই বার্তা পড়ে একটু থামলেন ইউক্রেনের প্রতিনিধি। তার পর বললেন, ‘‘আপনারা এই বার্তালাপের নিরিখে যুদ্ধের তীব্রতা অনুধাবন করার চেষ্টা করুন। ভেবে দেখুন, এই অধিবেশনে উপস্থিত প্রতিটি দেশের নেমপ্লেটের পাশে দাঁড়িয়ে আছে এমন ৩০ নিহত রুশ সেনার আত্মা। প্রতিটি দেশের পাশে…’’
পাঁচদিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর সোমবার বেলারুশে বৈঠকে বসেছিল ইউক্রেন ও রাশিয়া। সেই বৈঠকে কতটা ফলপ্রসূ, তার কোনও সরকারি বিবৃতি কোনও পক্ষের তরফেই পাওয়া যায়নি। অন্য দিকে মঙ্গলবার উপগ্রহ চিত্রে দেখা যায়, ৬৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সেনা কনভয় নিয়ে ইউক্রেন রাজধানীর দিকে বীরদর্পে এগিয়ে চলেছে রুশ সেনা।