Rupa dutta: টলিউড অভিনেত্রী পকেটমার? বইমেলায় ধৃত অভিনেত্রী রূপা দত্ত গ্রেফতার ! শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছিলেন অনুরাগ কশ্যপের বিরুদ্ধে

0
1200

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ : টলিউড (Tollywood) অভিনেত্রী (Actress) রুপা দত্ত গ্রেফতার। কলকাতা বইমেলা (kolkata bookfair) প্রাঙ্গন থেকে পকেটমারির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। শনিবার সন্ধ্যাবেলা বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ রূপা দত্তকে গ্রেফতার করেছে।

২০১০ সালে টলিউড অভিনেতা অঙ্কুশের সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেছিলেন রূপা। দুজনেরই প্রথম ছবি ছিল ‘কেল্লাফতে’। টালিগঞ্জে সেই থেকেই পরিচিত মুখ রূপা দত্ত।

সুত্রের খবর, শনিবার বইমেলা প্রাঙ্গনে একটি ডাস্টবিনে ব্যাগ ফেলে রেখে চলে যাচ্ছিলেন রূপা। টহলরত পুলিশের নজরে আসে তা। অভিনেত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার কোনও সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। এরপর মহিলা পুলিশ এসে ব্যাগটি তল্লাশি চালান। সেখান থেকে উদ্ধার হয় টাকাভর্তি একাধিক মানিব্যাগ।

থানায় নিয়ে গিয়ে রূপা দত্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে প্রথমে মুখ খুলতে চাননি তিনি। পরে পুলিশ জানতে পারে রূপা দত্ত আসলে পকেটমার। দীর্ঘদিন ধরেই কেপমারি করে আসছেন তিনি। বড় বড় অনুষ্ঠানে ঘুরে ঘুরে লোকজনের মানি ব্যাগ চুরি করাই তাঁর কাজ। শনিবার ওই ব্যাগ থেকে মোট ৭৫ হাজার টাকা পাওয়া গেছে। টাকাভর্তি ব্যাগ কেন ফেলে রেখে যাচ্ছিলেন রূপা তার সদুত্তর এখনও মেলেনি।

শুধু তা-ই নয়, অঙ্কুশ হাজরার সঙ্গে একটি বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছিলেন রূপা। তা ছাড়া তাঁর টুইটার থেকেই জানা যাচ্ছে, ‘জয় মা বৈষ্ণদেবী’ বলে একটি হিন্দি ধারাবাহিকে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তিনি। রূপা নাকি অভিনয় শেখানোর জন্য একটি স্কুলও খুলেছেন। উপরন্তু ক্যারাটেতে ব্ল্যাক বেল্ট পেয়েছেন বলেও দাবি তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে।

নিজেকে ‘লেখিকা’, ‘অভিনেত্রী’, ‘পরিচালক’, ‘সমাজসেবী’, ‘কন্যা’ হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন ফেসবুকে। তাঁর প্রোফাইল হাতড়ালে দেখা যাবে, তিনি দাবি করেছেন, মাত্র ১০ বছর বয়স থেকে তিনি কাজ করা শুরু করেছেন। মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্যেও প্রকল্পের সূচনা করেছেন বলে দাবি রূপার।

শনিবার সন্ধ্যায় কলকাতা বইমেলা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ। রবিবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। একদিনের জেল হেফাজত হয়েছে রূপা দত্তের। তাঁর আইনজীবী এদিন এজলাসে ১৪ দিনের জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু তা খারিজ করে দেন বিধাননগর মহকুমা আদালতের বিচারক। গ্রেফতারের পরই রূপার কাছ থেকে ৭৫ হাজার টাকা, একাধিক পার্স উদ্ধার করে পুলিশ।

তবে এই ঘটনা ঘিরে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু প্রশ্ন উঠে এসেছে। টেলি দুনিয়ায় বেশ কয়েকটি সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন রূপা দত্ত। মুম্বইয়েও যোগাযোগ ছিল বলেই তদন্তে উঠে এসেছে। সেলুলয়েডের দুনিয়ায় যাঁর এত পরিচিতি, এভাবে চুরির অভিযোগে তাঁর নাম কেন জড়াল? অন্যদিকে এদিন এজলাসেও বিচারক মামলাটি নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছেন। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সিজার লিস্টে দু’জন সাক্ষীর নাম ছিল। একজন এর মধ্যে মহিলা কনস্টেবল। প্রশ্ন উঠেছে, দ্বিতীয় জনের জবানবন্দি কেন নেওয়া হল না? অন্যদিকে রূপা দত্ত কেন ডাস্টবিনের পার্সের দিকে হাত বাড়াতে গেলেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারক।

রূপা দত্তের আইনজীবী রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রূপা দত্তের বিরুদ্ধে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে তাতে বেশ কিছু অসঙ্গতি দেখা গিয়েছে। প্রথম জিনিস হল কোনও ইন্ডিপেনডেন্ট উইটনেস নেই। কোনও ইনডিপেনডেন্ট কমপ্লেনও নেই। এটি একেবারে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা। পুলিশের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা। এর তদন্তের ক্ষেত্রেও গাফিলতি দেখা গিয়েছে। আমরা আদালতে বিষয়টি তুলি। কোর্টও তা গুরুত্ব দিয়ে শুনেছে। কিছু অসঙ্গতি আছে। সোমবার পর্যন্ত জেল হেফাজত দেওয়া হয়েছে।”

এই আইনজীবীর কথায়, কোথাও কারও কাছ থেকে কিছু নিয়ে নেওয়া হচ্ছে বা চুরি করা হচ্ছে তাতে রূপা দত্তকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে এমন কোথাও বলা হয়নি মামলায়। একটা ডাস্টবিনের মধ্যে ব্যাগ পড়েছিল। সেই ব্যাগটি তুলতে গিয়েছিলেন। সে সময় আশেপাশে যারা লোক ছিলেন তাঁরা তার প্রতিবাদ করেন। এরপরই গোলমাল শুরু হয়। পুলিশ এসে রূপা দত্তকে গ্রেফতার করে। আইনজীবী রাজদীপের দাবি, এখনও এমন একজনও পাওয়া যায়নি যিনি অভিযোগ করেছেন, রূপা দত্ত কিছু চুরি করেছেন। একইসঙ্গে রূপা দত্তর নিজের ব্যাগটিও বাজেয়াপ্ত করেনি পুলিশ।

রূপা দত্তের দাবি, তাঁর কাঁধে যে বড় ব্যাগ ছিল, তার ভিতর একাধিক ছোট পার্স ছিল। শনিবার তিনি বইমেলায় ঠাণ্ডা পানীয় খাওয়ার পর বোতলটি ফেলতে ডাস্টবিনের দিকে যান। তখন একটি পার্স তিনি পড়ে থাকতে দেখে তুলে নেন। সে সময় কিছু লোক তাঁকে ঘিরে ধরেন। তাতেই হইচই শুরু হয়। পুলিশ এসে গ্রেফতার করে। যদিও পুলিশের দাবি ছিল, পর পর কেপমারি করেছেন রূপা। সেটি ডাস্টবিনে ফেলে রেখেছিলেন। পরিকল্পনা ছিল সময় বুঝে সেগুলি তুলে নিয়ে পালানো।

এদিন শুনানি চলাকালীন বিচারক প্রশ্ন করেন, তরুণী যে ব্যাগটি তুলছিলেন সেটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে নাকি তরুণীর সঙ্গে থাকা ব্যাগটি? পুলিশ জানায়, যে ব্যাগটি তরুণী তুলেছিলেন সেটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তার মধ্যে পার্সগুলি পাওয়া গিয়েছে। ফের বিচারক জানতে চান তরুণীর নিজস্ব যে ব্যাগটি তা বাজেয়াপ্ত হয়নি? সেখানেও তো কিছু লুকোনো থাকতে পারে! অন্যদিকে রূপার একটি পার্সের মধ্যে অন্য একজনের আধার কার্ড পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি পুলিশের। সেটি কার, সে বিষয়ে কেন পুলিশ খোঁজ করল না তাও জানতে চান বিচারক।

একইসঙ্গে রূপা দত্তের ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। প্রশ্ন করেন, ‘এত বড় বড় জায়গায় অভিনয় করলেন। ডাস্টবিন থেকে ব্যাগ তুলে নিলেন?’ পুলিশকে এদিন এজলাসে বিচারক প্রশ্ন করেন, স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে একজন মহিলাকে গ্রেফতার করা হল, অথচ বিষটিও কী সেটাই স্পষ্ট নয়। তদন্তকারী অফিসার স্পষ্ট জবাব না দিতে পারায়, তলব করা হয় অভিযোগকারী পুলিশ অফিসারকেও। সোমবার ফের এই মামলার শুনানি হবে।

Previous articleCouncillor Murder: সন্ধ্যা ঘনাতেই দুই কাউন্সিলরকে গুলি করে খুন! ঝালদায় কংগ্রেস, পানিহাটিতে তৃণমূল
Next articleTMC Leader Shot Dead: জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে হাতেনাতে ধরল পানিহাটির তৃণমূল কাউন্সিলরের ‘খুনি’কে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here