দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ঘূর্ণিঝড় আর বৃষ্টির পূর্বাভাস পেয়েই মাঠে পড়ে থাকা পাকা ধান দ্রুত কেটে ঘরে তোলার তৎপরতা শুরু হয়েছিল বিভিন্ন জেলা জুড়ে।
কিন্তু সব ধান ঘরে তোলার আগেই ‘অশনি’র প্রভাবজনিত বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। ফলে মাঠে পড়ে থাকা সমস্ত ধান ঘরে তোলা যাবে কিনা, সেই দুশ্চিন্তায় ঘুম ছুটেছে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকদের।
দ্রুত মাঠের পাকা ধান ঘরে তুলতে কৃষি দপ্তরের পরামর্শ মেনে বহু কৃষক কম্বাইন্ড হারভেস্টর যন্ত্র ব্যবহার করেছেন। তাতে অনেকটাই কাজ হয়েছে। এ বছর পূর্ব বর্ধমান জেলায় সব মিলিয়ে ১ লক্ষ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। ফলন হয়েছে আশাপ্রদ।
হেক্টর প্রতি সাড়ে ৫ থেকে ৬ টন। ধানের মানও এবার যথেষ্টই ভাল। এ পর্যন্ত ৬৫ শতাংশ জমির ধান ঘরে তুলতে পেরেছেন কৃষকেরা। দ্রুত ধান ঘরে তোলার জন্য জেলা জুড়ে ২৫০টি ধান কাটার যন্ত্র ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
অনেকের আবার নিজস্ব ধান কাটার মেশিন রয়েছে। তাই দিয়েই ধান কাটছেন। কৃষি আধিকারিকদের মতে, ‘ধান ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ পাকলেই কেটে নেওয়া যায়। তাই বড়সড় দুর্যোগ আসার আগে কৃষকদের দ্রুত ধান কেটে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’ তবে ঝড়বৃষ্টিতে মাঠে লাগানো আনাজপাতি নতুন করে প্রাণ পেয়েছে। উৎপাদনও বাড়বে বলে জানাচ্ছেন কৃষকেরা।
তাপপ্রবাহে শুকিয়ে গিয়েছিল আম–লিচুর ডাল। ঝরে পড়ছিল। বৃষ্টি পেয়ে বোঁটা শক্ত হয়েছে। উৎপাদনও বাড়বে। বিকল্প কৃষি হিসেবে বিভিন্ন ব্লকের বহু ধানজমিতে আম, লিচু, পেয়ারার বাগান তৈরি হয়েছে। সেখানে অন্তত ২০টি প্রজাতির আমের ফলন হয়। ফি–বছর সেখান থেকে প্রচুর আম ভিনরাজ্যে যায়।
কৃষি দপ্তর সূত্রে খবর, ঝড়ের সঙ্গে যেটুকু বৃষ্টি পড়েছে, তাতে যে পরিমাণ আম গাছে রয়েছে সেগুলির বোঁটা শক্ত হবে। বৃষ্টির অভাবে অনেকেই পাট বুনতে পারেননি। যাঁরা পাট লাগিয়েছিলেন, তাঁদেরকে চড়া দরে জল কিনে পাটের চারা বাঁচাতে হচ্ছিল। বৃষ্টিতে পাটচাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে।