দেশের সময় , কলকাতা : আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে ১০ চিকিৎসককে বহিষ্কার করা হয়েছে। সকলের বিরুদ্ধে ‘থ্রেট কালচারের’ অভিযোগ ছিল। শনিবার হাসপাতালে কাউন্সিলের দীর্ঘ বৈঠক হয়। সেই বৈঠক থেকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বহিষ্কৃত চিকিৎসকদের তিনদিনের মধ্যে হস্টেল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
শনিবারের এই কাউন্সিল বৈঠকে ডাক্তার এবং ইন্টার্নদের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের স্পষ্ট দাবি ছিল, যে সমস্ত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে এমন ভয় দেখানোর, র্যাগিং করার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের সকলকে কড়া শাস্তি দিতে হবে। অভিযুক্ত হিসেবে ৫৯ জনের নাম উঠে এসেছিল। তাঁদের মধ্যেই ১০ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
যাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন সৌরভ পাল, আশিস পান্ডে, অভিষেক সেন, আয়ুশ্রী থাপা, নির্জন বাগচী, সরিফ হাসান, নীলাগ্নি দেবনাথ, অমরেন্দ্র সিংহ, সৎপাল সিংহ এবং তনভীর আহমেদ কাজী। এছাড়া সব অভিযুক্তের নামের একটি তালিকাও প্রকাশ করেছেন আরজি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সবার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে। হস্টেল খালি করার নির্দেশ দেওয়া ছাড়াও জানানো হয়েছে, তাঁদের নামগুলি রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছে পাঠানো হবে।
আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পরই এই ‘থ্রেট কালচার’ প্রসঙ্গ উঠে আসে। মূলত কী কী অভিযোগ উঠেছে এই সকল ডাক্তারদের বিরুদ্ধে? জানা গেছে, এঁরা অনেকেই পড়ুয়াদের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকি দিতেন। আবার কেউ হস্টেল থেকে বহিষ্কারের হুমকি দিতেন। রাতে হস্টেলের ঘরে ডেকে এনে র্যাগিংও করতেন! এদের মধ্যে বেশিরভাগ সন্দীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ ছিল বলেও দাবি।
জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগের ভিত্তিতে ৫৯ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে চিকিৎসক ছাড়াও রয়েছেন হাউসস্টাফ, ইন্টার্নরা। আরজি করের তদন্ত কমিটি এর আগে এদের অনেককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করে। মাঝে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে হাসপাতালের মধ্যেই বচসা হয়েছিল এই অভিযুক্তদের। অবশেষে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল।
প্রসঙ্গত, গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা ঘিরে শুরু হয় আন্দোলন। সেই আবহেই রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ‘হুমকি সংস্কৃতি’ চলার অভিযোগ উঠে আসে। এর পরেই কয়েক জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন আরজি কর হাসপাতালের পড়ুয়ারা।
জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগের ভিত্তিতে ৫৯ জনকে চিহ্নিত করা হয়। তাঁদের মধ্যে চিকিৎসক ছাড়াও রয়েছেন হাউসস্টাফ, ইন্টার্নেরা। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জনকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদও করে হাসপাতালের তদন্ত কমিটি। শেষমেশ শনিবারের বৈঠকের পর তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করল কাউন্সিল।