RG Kar doctor death পদত্যাগের ৬ ঘণ্টার মধ্যেই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে বহাল সন্দীপ ঘোষ! আরজি করের দায়িত্বে সুহৃতা পাল

0
252
হীয়া রায়, দেশের সময়

কলকাতা : আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনায় উত্তপ্ত গোটা শহর। প্রতিবাদে সরকারি হাসপাতালগুলিতে পরিষেবা প্রায় স্তব্ধ। আরজি করের জুনিয়র ডাক্তাররা যখন ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন, সেই আবহেই সোমবার সকালে অধ্যক্ষ পদে ইস্তফা দেন সন্দীপ ঘোষ। তিনি জানিয়ে দেন, সন্তানসম চিকিৎসকের মৃত্যুতে বাবা হিসেবে পদত্যাগ করছেন তিনি। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্য ভবেন পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে সন্দীপ ঘোষ জানিয়ে দেন সরকারি চাকরি থেকেই ইস্তফা দিচ্ছেন তিনি।

তিনি ‘স্বেচ্ছায়’ ইস্তফা দেওয়ার পরে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, যে ভাবে তাঁকে গালিগালাজ করা হয়েছে, তাতে তাঁর খুব খারাপ লেগেছে। সে জন্যই তিনি স্বেচ্ছায় আরজি করের অধ্যক্ষের পদে ইস্তফা দিয়েছেন। তিনি ছেড়ে দিয়েছেন চাকরিও। তবে চাকরিতে ইস্তফা দিলেও রাজ্য সরকার তাঁকে অন্য কোথাও সরিয়ে দেবে।

তাঁর নাম করে তাঁর সম্পর্কে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
তাঁর সম্পর্কে চিকিৎসকদের সংগঠনের নেতা প্রকাশ্যে বলেন, ‘‘আমরা ওঁকে ‘ডাক্তার’ বলতে রাজি নই। উনি যদি ডাক্তার হন, তা হলে আমরা ডাক্তার নই! ওঁকে বরখাস্ত করা হোক!’’

সকালে একটি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর বিকালেই তাঁকে আবার শহরেরই অন্য একটি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের পদে বহাল করা হয়।

তিনি সন্দীপ ঘোষ। সোমবার সকালে যিনি প্রথমে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তার পরে স্বাস্থ্যভবনে গিয়ে সরকারি চাকরি থেকেই ইস্তফা দিয়েছেন। ঘটনাচক্রে, যিনি আবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজেরই প্রাক্তনী!

গত শুক্রবার থেকে সারা রাজ্যে পরিচিত হয়ে গিয়েছেন সন্দীপ। মুখে মুখে ঘুরছে তাঁর ‘প্রভা’ এবং ‘প্রতাপ’-এর কথা। বলা হচ্ছে, তাঁর ঘরে যেতে গেলে চার স্তরীয় নিরাপত্তা পেরিয়ে যেতে হত। তিনি সরকারি নিরাপত্তাও পেতেন।

সন্দীপ বাবু অভিযোগ করেন, তাঁর মুখে কথা বসিয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ রাজনৈতিক খেলায় নেমেছেন। এটা বুঝতে পেরে আরও মর্মাহত তিনি। এদিন সকালে প্রতিদিনের মতোই দফতরে আসেন ডাঃ সন্দীপ ঘোষ। কিছুক্ষণ পরে সাংবাদিকদের সামনে এসে নিজের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। পরে স্বাস্থ্যভবনে গিয়ে তাঁর পদত্যাগ পত্র জমা দেন।  এর কিছুক্ষণ পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছিলেন, “উনি জানিয়েছেন মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত। আরজিকরের প্রিন্সিপালের পদ থেকে পদত্যাগ করতে চান। ওঁকে আমরা অন্য কোথাও পাঠাব।” এরপরেই কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদে বহাল করা হয় তাঁকে। অন্যদিকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপালের দায়িত্ব দেওয়া হয় ডাক্তার সুহৃতা পালকে।

তবে দফায় দফায় আরজি করের অধ্যক্ষের দায়িত্ব সামলানো সন্দীপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একাংশের। হাসপাতালের সরঞ্জাম পাচার, তহবিল তছরুপ, স্টাফ কোয়ার্টারে বেআইনি ভাড়াটে বসানো, ফেল করানোর ভয় দেখিয়ে ডাক্তারি পড়ুয়াদের নিজের দিকে রাখা, বেআইনি পার্কিং থেকে টাকা তোলার মতো অভিযোগও তুলছেন কেউ কেউ। এমনকি, শাসকদলের ‘ঘনিষ্ঠ’ এক চিকিৎসক এ-ও বলেছেন, ‘‘সন্দীপ যা যা করেছেন, তা যে প্রশাসন জানে না, তা নয়। কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে পদক্ষেপ করা হয়নি।’’

আরজি করের প্রশাসনে তৃণমূলের অন্দরের সমীকরণে বরাবরই সন্দীপ ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ তথা চিকিৎসক শান্তনু সেনের বিরোধী গোষ্ঠীর। অনেকে বলেন, শান্তনুকে রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরানোর নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছিলেন সন্দীপই। যদিও শান্তনু এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য, ‘‘গোটা বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী নিজে সংবেদনশীলতার সঙ্গে দেখছেন।’’

Previous articleRG Kar Doctor Deathরবিবারের মধ্যে পুলিশ কিনারা করতে না পারলে সিবিআইকে তদন্তভার তুলে দেব: মমতা
Next articleATM বনগাঁ পোস্ট অফিসের এটিএম থেকে পাওয়া টাকা ফেরত দিলেন গ্রাহক: দেখুন ভিডিও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here