দেশের সময় , কলকাতা : প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে যোগাযোগের কথা আবারও অস্বীকার করলেন রেশন দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য। শনিবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে বিস্ফোরক দাবি করেন তাঁর আইনজীবী। তিনি জানান, শঙ্করের নামে আদতে কোনও নোটিসই পাঠায়নি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যাঁর নামে নোটিস গিয়েছিল তিনি অন্য ব্যক্তি।
শনিবার শঙ্করকে তোলা হয় বিশেষ ইডি আদালতে। বিচারকের কাছে শঙ্করের আইনজীবী জানান, ইডি-র দাবি তাঁর মক্কেলের সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের যোগ রয়েছে। ব্যবসার জন্য সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হয়। সেই অর্থে তেমন যোগাযোগ ছিল না। যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে সেই সময় তিনি বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। কিন্তু তাঁর পরও তাঁকে সরে যেতে হয়। ‘ডাকু’র আইনজীবীর দাবি, যদি বালুর সঙ্গে তাঁর সখ্যতা থাকত তাহলে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরতে হত না।
একই সঙ্গে আদালতে শঙ্করের আইনজীবী অভিযোগ করেন, প্রথমে তাঁর মক্কেলের কাছে ইডি-র নাম নিয়ে একটি নোটিস পাঠানো হয়। সেক্ষেত্রে একমাস সময় চাওয়া হয়। পরে জানতে পারা যায় ইডি কোনও নোটিস পাঠায়নি। নোটিসে থাকা কিউআর কোড যাচাই করে দেখা যায় সেখানে শঙ্কর নয়, নাম রয়েছে রাকেশ সিং নামে এক ব্যক্তির। যদিও, এর প্রেক্ষিতে ইডি-র ডেপুটি ডিরেক্টর বলেছেন, ওই সমন তাঁরা পাঠাননি। কীভাবে গিয়েছিল তার তদন্ত হবে।
এ দিন, আবারও শঙ্করের শারীরিক অবস্থা নিয়ে আদালতে সওয়াল করেন তাঁর আইনজীবী। জেলে ঠিক মতো পরিষেবা মিলছে না বলেও অভিযোগ জানান। তবে জামিনের আবেদন করা হয়নি। অপরদিকে, ইডি-র তরফে আরও ১৪ দিনের জেল হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত গত ৫ জানুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় শঙ্করের বাড়িতে প্রায় ১৭ ঘণ্টা টানা তল্লাশি চালায় ইডি। তার পর রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। শঙ্করকে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে পড়ে ইডি। পরে তাঁকে আদালতে হাজির করিয়ে ইডি জানায়, ২০ হাজার কোটি টাকার বিদেশে লেনদেন হয়েছে শঙ্করের একাধিক ফরেক্স সংস্থার মাধ্যমে। রেশন ‘দুর্নীতি’র সঙ্গে সেই টাকার যোগ থাকতে পারে বলে ইডির অনুমান। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, ওই ২০ হাজার কোটির মধ্যে অন্তত ৯ থেকে ১০ হাজার কোটি জ্যোতিপ্রিয়ের। শঙ্কর অবশ্য সে সব অভিযোগ প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছেন।