একরত্তি প্রাণ। দুইদিনেরও বেশি সময় ধরে সে আটকে বোরওয়েলের মধ্য়ে। নড়াচড়া বন্ধ, নেই কোনও খাবারদাবার ও পানীয় জলও। প্রশাসনের তরফে একের পর এক প্রচেষ্টা করা হলেও, সবই ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে।
রাজস্থানে কুয়োয় পড়ে যাওয়া তিন বছরের চেতনার উদ্ধারকাজ এখনও পর্যন্ত সফল হয়নি। ৬০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় বাহিনীর আধিকারিকরা অক্লান্ত পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। জানা গেছে, এবার চেতনাকে উদ্ধারের জন্য ব়্যাট-হোল মাইনার্সদের নিযুক্ত করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে চেতনাকে উদ্ধারের কৌশল তৈরি করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ব়্যাট-হোল মাইনিং এমন একটি পদ্ধতি, যা সাধারণত মেঘালয় রাজ্যে কয়লা উত্তোলনের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সংকীর্ণ ও গভীর গর্তে আটকে থাকা মানুষকে উদ্ধারের ক্ষেত্রে কার্যকর হতে পারে। ২০১৪ সালে মেঘালয়ে একটি দুর্ঘটনার পর এই ব়্যাট-হোল মাইনিং নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তবে ২০২৩ সালের নভেম্বরে উত্তরাখণ্ডের সিলকিয়ারা টানেলে ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধার করতে ফের এই পদ্ধতি সফলভাবে ব্যবহার করা হয়।
রাজস্থানের কোটপুতলির বাসিন্দা তিন বছরের চেতনা। গত ২৩ ডিসেম্বর বাবার ক্ষেতে একা একাই খেলছিল। সেই সময় মাঠের পাশে ৭০০ ফুট গভীর বোরওয়েলে পড়ে যায়। চেতনাকে উদ্ধার করার বহু চেষ্টা করলেও, সুড়ঙ্গের মতো বোরওয়েলের একটা অংশে আটকে যায় শিশুটি।
বর্তমানে ৪৮ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে, চেতনাকে এখনও উদ্ধার করা যায়নি। সুড়ঙ্গে অক্সিজেন পাইপ পাঠানো হলেও, খাবার ও জল পাঠানো যায়নি। ক্যামেরার মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে নজরদারি করা হলেও, এখন তাতেও দেখা যাচ্ছে না চেতনাকে।
প্রশাসনের তরফে দড়ি নামিয়ে উদ্ধারকাজ চালানোর চেষ্টা করা হয়। তা ব্যর্থ হলে “প্ল্যান বি” হিসাবে মাটি খোঁড়ার মেশিন আনা হয়। কিন্তু মাটি ধসে পড়ার আশঙ্কায় সেই পরিকল্পনাও বাতিল করতে হয়। এখন শেষ ভরসা র্যাট হোল মাইনার্সরা।
https://x.com/PTI_News/status/1871739008717316406?t=FlUvWdSX4756E6KVPXfNjg&s=19
জানা গিয়েছে, মাটি থেকে ১৫০ ফুট গভীরে আটকে রয়েছে শিশুটি। উপস্থিত রয়েছে এনডিআরএফ, এসডিআরএফের টিম। আজ র্যাট হোল মাইনাররা বোরওয়েলের পাশে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে শিশুটিকে উদ্ধার করার চেষ্টা করবে।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে মেঘালয়ে একটি খনির দুর্ঘটনার পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নিষিদ্ধ হয় র্যাট হোল মাইনিং। তবে গত বছর, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে উত্তরাখণ্ডের সিলকিয়ারা সুড়ঙ্গে যখন ৪১ জন শ্রমিক আটকে পড়েছিলেন, তখন ১৬ দিন ধরে নানা প্রচেষ্টা চালিয়েও তাদের উদ্ধার করা যায়নি। শেষে র্যাট হোল মাইনাররাই ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধার করে।