
বিরল রোগে আক্রান্ত নদীয়ার রানাঘাটের ছোট্ট অস্মিকার চিকিৎসায় মিলল আশার আলো। দীর্ঘদিন ধরে যার জন্য একাধিক মহলের প্রচেষ্টা চলছিল, অবশেষে সেই ইনজেকশনের প্রথম কিস্তির অর্থসঙ্কলন সম্পূর্ণ হল।
সোমবার ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়ির ‘মাতৃ সেনা চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর পক্ষ থেকে অস্মিকার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হল ৬০ লক্ষ টাকার অনুদান। এর ফলে সম্পূর্ণ হল প্রয়োজনীয় ৯ কোটি টাকা, যা দিলেই বিদেশ থেকে আনা যাবে ১৬ কোটি টাকা মূল্যের সেই বিরল ইনজেকশন।
জন্মের কিছুদিন পরই ধরা পড়ে শুভঙ্কর দাসের কন্যা সন্তান অস্মিকা একটি দুর্লভ ও জটিল রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসকরা জানান, রোগমুক্তির একমাত্র উপায় একটি জিন থেরাপি ইনজেকশন, যার দাম প্রায় ১৬ কোটি টাকা। তবে সেই ইনজেকশন পাওয়ার জন্য প্রথম কিস্তিতে অন্তত ৯ কোটি টাকা জমা দিতে হবে।
অস্মিকার চিকিৎসার জন্য রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে সাধারণ মানুষ, শিল্পী, রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। কেউ অর্থ দিয়েছেন, কেউ বা প্রচারে অংশ নিয়েছেন। সেই প্রচেষ্টারই ফসল সোমবারের অনুদান।
এদিন ‘মাতৃ সেনা চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর সভানেত্রী সোমা ঠাকুর অস্মিকার পরিবারের হাতে চেক তুলে দেন। তাঁর পাশে ছিলেন অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সংঘাধিপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর।
অস্মিকার বাবা শুভঙ্কর বলেন, ‘আজ ৬০ লক্ষ টাকা হাতে পাওয়ায় প্রথম কিস্তির প্রয়োজনীয় ৯ কোটি টাকা সম্পূর্ণ হল। আশা করছি সমস্ত কাগজপত্র দ্রুত মিটিয়ে ১৫ দিনের মধ্যেই ইনজেকশনটা মেয়েকে দিতে পারব।’
তিনি আরও বলেন, ‘যাঁরা আমাদের এই কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবার ভাষা নেই। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে গায়ক কৈলাশ খের – অনেকেই এগিয়ে এসেছেন আমাদের মেয়ের জীবনের জন্য।’
সভানেত্রী সোমা ঠাকুর বলেন, ‘অস্মিকার পরিস্থিতি জানার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিই ওকে সাহায্য করব। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি। এরপরই অর্থসংগ্রহের কাজ শুরু হয়। আশা করি ইনজেকশন পেয়ে অস্মিকা সুস্থভাবে বড় হয়ে উঠবে, আর পাঁচটা শিশুর মতো।’