দেশের সময়: পয়লা বৈশাখের আগে চৈত্র সেলের বাজার জমজমাট ৷ মাস পয়লা পড়ে গিয়েছে। মানে বেতন হয়ে গিয়েছে অফিসের বাবুদের। আর মাইনে পকেটে আসতেই সেলের বাজারে ভিড় উপচে পড়ছে ৷
আমাদের রাজ্যে অধিকাংশ সময়ই গরম থাকে। আর গরমের দিনে যত বেশি আরামদায়ক পোশাক পরা যায় ততই ভাল। শুরু হয়েছে চৈত্র সেলের হিড়িক। গরমের দুপুরে তেতে পুড়ে, ভিড় ঠেলে সেলের কেনাকাটি করার মজাটাই অন্যরকম। সেই সঙ্গে দর কষাকষি তো আছেই। চলুন দেখে নেওয়া যাক কোথায় কি পাওয়া যাচ্ছে ৷
গত রবিবার সেলের বাজারে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো৷ আগামী রবিবারও এই ভিড় অনেকটাই বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই মতোই গড়িয়াহাট থেকে শ্যামবাজার হাঁকডাক শুরু হয়ে গিয়েছে। হচ্ছে ভিড়।
করোনা আবহে সেই ২০২০ থেকেই কেনাকাটায় মন ছিল না বাঙালির। ব্যবসা মন্দা থাকায় নতুন মাল তোলেননি দোকানদাররাও। গতবারের পুজোতে বাজারের হাল কিছুটা ফিরলেও পুরনো স্টক দিয়েই ক্রেতা টেনেছেন দোকানদাররা। কিন্তু এবার চৈত্র সেলে অনেক নতুন ডিজাইনের পোশাকই রয়েছে গড়িয়াহাট থেকে ধর্মতলা, নিউমার্কেট থেকে শ্যামবাজারের দোকানে। বাড়তি পাওনা ডিসকাউন্ট। কোনও দোকান দিচ্ছে কেনাকাটায় ছাড়, কোথাও আবার দু’টোর সঙ্গে একটা ফ্রি-র অফার রয়েছে। শপিংমলগুলোতও বেশ ভাল ভিড়ই নজরে এসেছে।
যা গত দু’বছর দেখা যায়নি। শুধু শহর নয়, জেলা মফঃস্বলেও একই চিত্র। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সামনে পয়লা বৈশাখ তো রয়েইছে। সঙ্গে শুরু রমজান মাস। ইদের কেনাকাটাও চলছে। আগামী কয়েকদিন বাজার তাই বেশ ভালই হবে বলে মনে হচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের কথায়, এবছর কেনাকাটাতেও ঝোঁক বেড়েছে মানুষের। অনলাইন তো রয়েইছে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মানুষ ছুটছেন শপিং মল থেকে হকারপট্টি, সর্বত্রই। বড়বাজারের হোলসেলাররাও জানাচ্ছেন, বাজারে এবার ডিমান্ড এসেছে নতুন পোশাকের। গত দু’বছর যে দোকানদার নতুন কোনও শার্ট তোলেননি, সেই দোকানদারই এবার চৈত্র সেলেই দেড় হাজার পিস শার্ট তুলেছেন।
চৈত্র সেলে অনেকেই সারাবছরের কেনাকাটা করে রেখে দেন। মধ্যবিত্ত বাঙালির পকেটে টান থাকত সারা বছর। যে কারণে চৈত্র সেলে কেনাকাটার এই হিড়িক থাকত। এখন অনলাইনের দৌলতে কেনাকাটা এখন সারাবছরের। নতুন জামার গন্ধও অনেককে কাছে টানে না। এর কারণ একটাই, প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত পোশাক আছে সকলের কাছেই। সেই সঙ্গে চাইলেই হাতের সামনে পোশাক এসে যাচ্ছে। তবুও নতুন জামা, পয়লা বৈশাখের আলাদা একটা গুরুত্ব রয়েছে।
সকালে স্নান সেরে নতুন জামা পড়া এই দিনের বিশেষ রীতি। আর পয়লা বৈশাখ মানে তাঁত কিংবা জামদানি শাড়ি। কপালে টিপ, খোঁপায় ফুল। জামদানি শাড়ি অনেকেই এখন পরতে চান না। তুলনায় হ্যান্ডলুমের শাড়ি পরতে মেয়েরা বেশি ভালবাসেন। কমবয়সী মেয়েদের মধ্যে হ্যান্ডলুমের শাড়ি পড়ার চাহিদা তুঙ্গে। এই শাড়ি যেমন পরে আরাম তেমনই দেখতেও কিন্তু খুব ভাল লাগে। আর এই হ্যান্ডলুমের শাড়ি বেশ কমদামের মধ্যেই পাওয়া যায়। সেলের বাজার তো শুরু হয়ে গিয়েছে। সস্তায় হ্যান্ডলুমের শাড়ি কোথায় পাবেন?
অনেকেই বলেন সস্তায় হ্যান্ডলুম শাড়ির সেরা ঠিকানা হল উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত শহর বনগাঁ। পছন্দমতো শাড়ি এখানে পেয়ে যাবেন একেবারে জলের দরে। শাড়ির সঙ্গে ম্যাচিং ব্লাউজ আর গয়নারও বিপুল সম্ভার রয়েছে এই শহরের বিভিন্ন শোরুমে ৷ এছাড়াও এই শহরে বেশ কিছু বুটিক রয়েছে এমনকী ফুটপাথেও পেয়ে যাবেন হ্যান্ডলুম শাড়ির দারুণ কালেকশন ৷ ছুটির দিনে পকেট বাঁচিয়ে সেরে ফেলুন কেনাকাটা।
আদিমোহিনী মোহনকাঞ্জিলালের বনগাঁ শাখার কর্ণধার বিশ্বজিৎ দাস জানান, “এবার চৈত্র সেলের বাজার খুব ভাল হবে, আশা করা যায়। করোনাতঙ্ক কাটিয়ে বাজার এখন বেশ ভাল। গত এক মাসে সর্বোচ্চ জিএসটি কালেকশন হয়েছে। তাতেই তো বোঝা যাচ্ছে, সব বাজারই দিন দিন ভাল হচ্ছে।”