দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের জট যত খুলছে, ততই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের হাতে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে কেন্দ্র করে ইডির স্পষ্ট ধারণা যে তাঁদের সম্পর্ক ছিল খুবই গভীর। এতটাই যে অর্পিতা মুখোপাধ্যায় মা হতে চাইলে তাতে সায় দিয়েছিলেন পার্থ।
গত ২৩ জুলাই অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের টালিগঞ্জের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ৷ সেই তল্লাশি অভিযানে নগদ ২০ কোটির পাশাপাশি প্রচুর নথিও বাজেয়াপ্ত করে ইডি। তার ভিত্তিতে জেরা করা হয় পার্থ-অর্পিতাকে। গতকাল এ ব্যাপারে চার্জশিট পেশ করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তাতে লেখা রয়েছে, অর্পিতা চট্টোপাধ্যায় সন্তান দত্তক নিতে চেয়েছিলেন। পারিবারিক বন্ধু হিসাবে তাঁর জন্য সুপারিশ চিঠি লিখে দিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
পার্থকে জেরার করার সময়ে সেই চিঠি দেখিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করে ইডি। এও জানতে চায় অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নামে বহু কোটি টাকার জীবন বিমায় পার্থকে কেন নমিনি করা হয়েছে। পার্থ জীবন বিমার ব্যাপারে কোনও সদুত্তর দেননি বলে চার্জশিটে জানিয়েছে ইডি। তবে সন্তান দত্তক নেওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে ইডি পার্থ জেরায় বলেন, আমি একজন জনপ্রতিনিধি। আমার কাছে অনেকেই এই ধরনের সুপারিশ চিঠির জন্য আসেন। সেভাবেই এই চিঠি লিখে দিয়েছি।
উল্লেখ্য, আদালতে জমা করা ইডির ওই চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের পারিবারিক বন্ধু ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
ইডির হাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর থেকেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের হাতে। ইডির তরফে এর আগে জানানো হয়েছিল, অন্তত ২০১২ সাল থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের যোগাযোগ রয়েছে।
ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘অপা ইউটিলিটি সার্ভিসেস’ নামে একটি যৌথ মালিকানায় সংস্থার খোঁজ পেয়েছে। সংস্থায় সমান সমান অংশীদারিত্ব রয়েছে পার্থ ও অর্পিতার, এমনই দাবি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের। শুধু তাই নয়, এই সংস্থার নামে বিভিন্ন জায়গায় বেশ কিছু সম্পত্তিও কেনা হয়েছিল বলে দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার।
এদিকে ইডির তরফে যে চার্জশিট পেশ করা হয়েছে, তাতে এও উল্লেখ রয়েছে যে অর্পিতা মুখোপাধ্যায় দাবি করেছেন উদ্ধার হওয়া বিশাল অঙ্কের নগদ টাকা ও সোনার গয়না… কোনওকিছুই তাঁর নয়। ওই সব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বলেই দাবি করছেন অর্পিতা, চার্জশিটে এমনই উল্লেখ করেছে ইডি।
উল্লেখ্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায় বর্তমানে রয়েছেন সিবিআই হেফাজতে। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে তেড়েফুঁড়ে তদন্ত চালাচ্ছে দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই ও ইডি। তদন্ত প্রক্রিয়া যত এগোচ্ছে, তত চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে গোয়েন্দাদের হাতে।