Pakistan Train Attacked by Terroristsপাকিস্তানে যাত্রী বোঝাই ট্রেনে হামলা বালুচ জঙ্গিদের , পণবন্দি শতাধিক যাত্রী , নিহত অন্তত ৬

0
25

পাক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ডন’ জানাচ্ছে, বালুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেসকে মঙ্গলবার দখল করেছে বালুচ বিদ্রোহীরা।

পাকিস্তানের বালুচিস্তানে ফের জঙ্গি হামলা। একটি ট্রেন লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে, ট্রেন চালককে জখম করে যাত্রী ও নিরাপত্তা রক্ষীদের পণবন্দি করেছে জঙ্গিরা। দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের একটি প্যাসেঞ্জার ট্রেন ছিনতাই করে তারা। বালুচিস্তানের কোয়েট্টা থেকে ট্রেনটি খাইবার পাখতুনখোয়ার পেশোয়ারে যাচ্ছিল ট্রেনটি। সেই সময় চলন্ত ট্রেন লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে জঙ্গিদল। বালুচ লিবারেশন আর্মি নামে জঙ্গি সংগঠন এই ট্রেন অপহরণের দায় স্বীকার করেছে। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, ট্রেন থেকে অগুনতি যাত্রী ও নিরাপত্তা রক্ষী এখন তাদের হেফাজতে বন্দি রয়েছে।

মঙ্গলবার এই খবর আসা মাত্রই প্রাদেশিক সরকার জরুরি ভিত্তিতে পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী পাঠিয়েছে এলাকায়। জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। পাক ইংরেজি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন বালুচ সরকারের মুখপাত্র শাহিদ রিন্দের বক্তব্য উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, জাফফর এক্সপ্রেস লক্ষ্য করে গুলি চালায় জঙ্গিরা।

পাক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ডন’ জানাচ্ছে, বালুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেসকে মঙ্গলবার দখল করেছে বিদ্রোহীরা। পাক রেল দফতরের আধিকারিক মহম্মদ কাশিফ জানিয়েছেন, ন’টি কোচবিশিষ্ট ট্রেনটিতে প্রায় ৫০০ যাত্রী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১০০ জনেরও বেশি জঙ্গিদের পণবন্দি হয়েছেন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, ট্রেনের নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকা ছ’জন সেনাকর্মী বালুচ বিদ্রোহীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন ।

সূত্রে জানা গিয়েছে, বালুচ লিবারেশন আর্মি অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে এই অপারেশন চালিয়েছে। মাশকাফ, ধাদর, বোলান এলাকায় একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটানো হয় রেললাইনে। সংগঠন বিবৃতিতে আরও বলে, এই বিস্ফোরণে রেললাইনে ফাটল ধরায় জাফফর এক্সপ্রেস থামতে বাধ্য হয়। ট্রেন মাঝপথে থেমে গেলে জঙ্গিদল ট্রেনের দখল নেয়। সংগঠনের দাবি, সব যাত্রী ও নিরাপত্তাকর্মীদের বন্দি করা হয়েছে।

জঙ্গিদের আরও দাবি, এই হামলায় ৬ পাক সেনা কর্মী নিহত হয়েছেন। কয়েকশো যাত্রী তাদের হেফাজতে রয়েছেন। পাকিস্তান কোনও ধরনের সেনা অভিযান চালালে সব যাত্রীদের খতম করার হুমকিও দিয়েছে সংগঠনটি। 

প্রতিবাদ দমন করতে পাক সেনা এবং ফ্রন্টিয়ার কোর বাহিনী সেখানে ধারাবাহিক মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণহত্যা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ। ১৯৪৭ সালের ১১ অগস্ট ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয়েছিল দেশীয় রাজ্য কালাত। ১২ অগস্ট কালাতের শাসক মির সুলেমান দাউদ স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সেই স্বাধীনতার মেয়াদ ছিল মাত্র সাত মাস। ১৯৪৮-এর ২৭ মার্চ পর্যন্ত। বালুচিস্তানের মানুষের কাছে সেই দিনটা আজও যন্ত্রণার ‘পরাধীনতা দিবস’! সাত দশক আগে ওই দিনেই পাকিস্তানি সেনা দখল করেছিল বালুচিস্তান। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তৎকালীন শাসককে বাধ্য করেছিল পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হতে।

বালুচিস্তানের পরবর্তী ইতিহাস ফের নতুন স্বাধীনতার যুদ্ধের। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস আর কয়েক হাজার মানুষের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার। ‘বালুচিস্তানের গান্ধী’ বলে পরিচিত স্বাধীনতাপন্থী নেতা আবদুল কাদির বালোচ বছর কয়েক আগে দিল্লি এসে বলেছিলেন, তাঁরা চান ১৯৭১-এ ভারত যে ভাবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল, সে ভাবেই পাশে দাঁড়াক বালুচিস্তানের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে বালুচিস্তানের উপর পাক নিপীড়ন বন্ধের জন্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে সরব হওয়ার আবেদনও জানিয়েছিলেন তিনি।

মঙ্গলবার বিকেলে বিএলএর তরফে পাক সেনাকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, ট্রেন দখলমুক্ত করতে অভিযান চালালে যাত্রীদের হত্যা করা হবে।

Previous articlePassengers ‘decreased’ at Petrapole, many worried
Next articleFake Voter বনগাঁর পাঁচ বিধানসভায় ১০ হাজারের বেশি ভুতুড়ে ভোটার, তথ্য সামনে আনলেন জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here