দেশের সময়, ওয়েবডেস্কঃ ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’- প্রস্তাব নিয়ে বড় পদক্ষেপ কেন্দ্রের। এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত করার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে, শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) একটি কমিটি গঠন করা হল।
সূত্রের খবর, এজন্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে ইতিমধ্যে একটি কমিটি গড়ছে কেন্দ্র। ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে সংসদের বিশেষ অধিবেশন। চলবে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। টানা পাঁচ দিনের এই অধিবেশনে ‘এক দেশ, এক ভোট’ সংক্রান্ত বিল ছাড়াও অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিষয়ে বিল ও মহিলাদের সংরক্ষণ কোটা সংক্রান্ত বিল পেশ করা হতে পারে।
বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত বিষয়ে একটি টুইট করেছিলেন সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী। তাতে তিনি লিখেছিলেন ‘অমৃত কালে সংসদে গঠনমূলক আলোচনা ও বিতর্ক হবে বলে আশা করছি।’ স্বভাবতই, সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার পর থেকেই বিলগুলি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে।
তবে অন্যান্য বিলকে ছাপিয়ে রাজনৈতিক চর্চায় প্রাধান্য পাচ্ছে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ সংক্রান্ত বিলটি। এই ‘এক দেশ, এক ভোট’ ধারণাটি সারাদেশে একযোগে নির্বাচন অনুষ্ঠানকে বোঝায়। অর্থাৎ সারা ভারত জুড়ে লোকসভা এবং সমস্ত রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন একযোগে অনুষ্ঠিত হবে। এর ফলে খরচ এবং সময় তুলনামূলকভাবে অনেকখানি সাশ্রয় হবে বলেই মত সংশ্লিষ্ট মহলের। দ্বিতীয়বার কেন্দ্রের তখতে বসার পর থেকেই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ করার বিষয়ে একাধিকবার মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে।
আগামীবছর লোকসভা ভোট। তার আগে সংসদে এই বিল পাশ হলে আগামী বছর লোকসভার সঙ্গেই সারা দেশে প্রতিটি রাজ্যে ফের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না, তা নিয়েও নতুন করে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
ইতিমধ্যে অবিজেপি দলগুলি একত্রিতভাবে গড়েছে ইন্ডিয়া জোট। ২৬টি দল নিয়ে গঠিত ওই জোটে সম্প্রতি নাম লিখিয়েছে আরও ৯টি দল। এমন আবহে নয়া বিলকে ঘিরে ফের সংসদের বিশেষ অধিবেশন তেতে উঠতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
সূত্রমতে, এই কমিটি সমস্ত পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবে। আইনি এবং রাজনৈতিক উভয় ক্ষেত্রের মতামত গ্রহণ করবে। জানা গিয়েছে, দুই জন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এই কমিটির সদস্য হবেন। এছাড়া, মন্ত্রিসভার সচিব, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি, প্রাক্তন প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং রাজনৈতিক নেতারা এই কমিটিতে থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, আসন্ন বিশেষ অধিবেশনেই এই বিষয়ে কোনও বিল পেশ করা হবে কিনা, সেই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। তবে, এই পরিবর্তনের সঙ্গে সংবিধান সংশোধনের বিষয়ও জড়িত। সংসদের বিশেষ অধিবেশনে এই প্রস্তাব উত্থাপন করা হলে, সাংবিধানিক সংশোধনের প্রয়োজন হবে। এর জন্য লোকসভার ৬৭ শতংশ সদস্য, রাজ্যসভার ৬৭ শতাংশ সদস্য এবং রাজ্য বিধানসভাগুলির ৫০ শতাংশ সদস্যের অনুমোদন প্রয়োজন।
২০২২ সালের জাতীয় ভোটার দিবসে, ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ এবং ‘এক দেশ, এক ভোটার তালিকা’র প্রস্তাব রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, দেশে ক্রমাগত নির্বাচন চলার ফলে, প্রতিটি বিষয় নিয়ে রাজনীতির প্রবণতা দেখা যায়। আর এর জেরে ক্ষতিগ্রস্থ হয় উন্নয়নের কাজ। বিরোধী দলগুলি অবশ্য এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। এর ‘ব্যবহারিক’ অসুবিধাগুলির কথা উল্লেখ করে তারা দাবি করেছে, সরকারের এই পদক্ষেপের লক্ষ্য, বিরোধী দলগুলিকে খতম করা।