যখন রাস্তা দিয়ে আসছিলাম, দেখে মনে হচ্ছিল, যেন কোনও রোড শো হচ্ছে। আপনাদের এই ভালোবাসা আমার মাথায় রয়েছে। আমি সবার প্রথমে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাইছি। ২০১৯ সালে যখন আমি এই ময়দানেই এসেছিলাম, তখন এখানে মাঝখানে একটা বড় মঞ্চ বানিয়ে ময়দানের জায়গা ছোট করে দিয়েছিলেন। যাতে মোদীর কথা কেউ শুনতে না পারে। সেদিন আমি মমতাদিদিকে বলেছিলাম, দিদি আপনি এটা করে ভুল করলেন, মানুষ জবাব দেবে, সেটাই হয়েছে। কিন্তু আজ মমতাদিদি সেরকম কিছুই করেননি। ময়দান ছেড়ে দিয়েছেন। আপনাদের সকলের মুখ আজ আমি দেখতে পারছি। বাংলার জনগণের মুখ দেখার জন্য কোনও বাধা না দেওয়ায় আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।
ভারতকে পৃথিবীর তৃতীয় আর্থিক শক্তি বানাতে হবে। যার জন্য সবথেকে বেশি লাভবান হবে বাংলা। কোচবিহারের জনসভায় এসে আশ্বাস দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। এবারের লোকসভা নির্বাচন দেশকে তৃতীয় আর্থিক শক্তি বানানোর নির্বাচন, সেই কারণে এবারের নির্বাচনে শক্তিশালী সরকার গঠন করার প্রয়জন রয়েছে। গত দশ বছরে দেশ শুধু ট্রেলার দেখেছে, আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাকি রয়েছে বলে দাবি করেন মোদী।
কোচবিহার কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের প্রচার সভায় হাজির হন মোদী। সেখানেই তিনি বলেন, ‘গত দশ বছরে দেশে যা উন্নয়ন হয়েছে, তা শুধু ট্রেলার। আরও অংকে কাজ বাকি রয়েছে।’ বক্তৃতার মাঝেই গত দশ বছরের কাজের খতিয়ান দেন তিনি। মোদী জানান, বাংলার ৪০ লাখ মানুষ পাকা ছাদের বাড়ি পেয়েছেন, কৃষকদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি কেন্দ্রের সাহায্যের টাকা পৌঁছে যাচ্ছে, দেশের কোটি কোটি মানুষ নতুন শৌচালয় পেয়েছেন, তবে এসব কিছুই ‘ট্রেলার’, দেশকে আর্থিকভাবে বিশ্বের তৃতীয় শক্তি করতে আরও অনেক কাজ বাকি আছে বলে দাবি করেন তিনি।
কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্র থেকে রাজ্যে দ্বিতীয় দফায় প্রচার শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই আসন থেকে গতবার জয়ী হয়েছিলেন নিশীথ প্রামাণিক। এই কেন্দ্রে অন্যতম নির্ণয়ক হল রাজবংশী ভোট। দুদিন আগেই রাজবংশীদের নিয়ে বিজেপির ভূমিকায় সরব হয়েছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত মহারাজ। রাজবংশীদের জন্য বিজেপি সরকার গত পাঁচ বছরে প্রতিশ্রুতি রাখা করেনি বলে দাবি করেন তিনি। তবে এদিন মোদীর জনসভায় দেখা যায় তাঁকে।
তৃতীয় বৃহত্তম আর্থিক শক্তিধর দেশ বানানোর জন্যই একটি শক্তিশালী সরকার প্রয়োজন দেশের জন্য। কোনও নড়বড়ে জোট সরকার সেটা করতে পারবে না। ইন্ডিয়া জোটকে কটাক্ষ করে মোদী জানান, এটা দেশের শক্তিশালী সরকার গঠনের নির্বাচন। মোদী বলেন, ‘আপনার স্বপ্নই হল মোদীর সংকল্প। সভায় উপস্থিত কর্মী, সমর্থকদের উদ্দেশে মোদী বলেন, ‘আপনার যখন বুথে ভোট দিতে যাবেন, তখন মাথায় রাখবেন এটা দেশের নির্বাচন। এটা দেশকে তৃতীয় আর্থিক বৃহত্তম শক্তি বানানোর নির্বাচন।’
সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে বাংলার সরকারকে আক্রমণ করলেন মোদী। তাঁর হুঁশিয়ারি, সন্দেশখালির ঘটনার জন্য দায়ী একমাত্র তৃণমূল। এর জন্য তৃণমূলকে ভুগতে হবে।
এদিন তিনি বলেন, ‘বিজেপি সংকল্প নিয়েছে সন্দেশখালির দোষীদের সাজা দেবে। ওদের পুরো জীবনটাই জেলে কাটবে। আর সেই জন্য বিজেপি-কে জেতানো প্রয়োজন।’ তাৎপর্যপূর্ণভাবে, সন্দেশখালির ঘটনাকে সামনে রেখে লোকসভা নির্বাচনে ভোটবাক্সে সুফল চায়ছে গেরুয়া শিবির। এই লোকসভা নির্বাচনে সন্দেশখালি কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী করেছে সন্দেশখালির ‘প্রতিবাদী মুখ’ রেখা পাত্রকে। ইতিমধ্যেই রেখার সঙ্গে কথা বলেছেন নরেন্দ্র মোদী। এবার ফের একবার মোদীর কণ্ঠে সন্দেশখালি প্রসঙ্গ উঠে আসা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।