Nabanna Abhijan:‘মধ্যরাত থেকে হঠাৎই খোঁজ মিলছে না চার  ছাত্রনেতার’,দাবি শুভেন্দুর, নবান্ন অভিযান রুখতে চূড়ান্ত প্রস্তুতি পুলিশের

0
99

দেশের সময়, কলকাতা: নবান্ন অভিযানের আগের রাত থেকে খোঁজ মিলছে না চার জন আন্দোলনকারীর। নবান্ন অভিযানের আগে বড় অভিযোগ করলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। চার আন্দোলনকারীর গ্রেফতারির আশঙ্কা করেছেন তিনি। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তা পোস্টও করেছেন। শুভেন্দু জানিয়েছেন, চার আন্দোলনকারীর নাম শুভজিৎ ঘোষ, পুলকেশ পণ্ডিত, গৌতম সেনাপতি ও প্রীতম সরকার। হাওড়ায় স্বেচ্ছাসেবকদের ফুড প্যাকেট বিতরণের দায়িত্বে ছিলেন চার জন। হঠাৎ করে তাঁদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে খবর। এমনকি ফোনেও তাঁর সঙ্গে কোনওভাবে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।

মঙ্গলবার ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর ডাকে নবান্ন অভিযান রয়েছে। ওই কর্মসূচিতে রাজনৈতিক পরিচিতিকে সরিয়ে রেখে ‘ব্যক্তিগত’ ভাবে থাকার জন্য আগেই ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার আগেই মঙ্গলবার সকালে শুভেন্দুর দাবি, চার জন ছাত্রনেতা ‘নিখোঁজ’। সমাজমাধ্যমে ওই চার ছাত্রনেতার নাম উল্লেখ করে বিরোধী দলনেতা লিখেছেন, তাঁরা হাওড়া স্টেশনে আসছিলেন এবং মধ্যরাতের পর আচমকা নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন।

https://x.com/SuvenduWB/status/1828260688625631611?t=fEhrYCXx63fgtqXQjeMe3w&s=19

শুভেন্দু হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি চার জন আন্দোলনকারীর কিছু হয়, তাহলে তার দায় থাকবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশের। ওই চার জনকে পুলিশ গ্রেফতার কিংবা আটক করেছে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শুভেন্দু।

তবে শুভেন্দুর পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “এঁরা আদৌ নিখোঁজ কি না, কেউ নিখোঁজ করালেন কি না, কেউ জানেন না। সকাল থেকে উত্তেজনা ছড়াতে এই সব পোস্ট করা হচ্ছে। যাঁরা অনুমতিহীন আন্দোলন এবং আন্দোলনের নামে অশান্তি তৈরির চেষ্টাকে উৎসাহ দিতে চাইছেন, এর সব দায়িত্ব ওঁদের।”

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার  ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের’ পক্ষ থেকে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। সেই আন্দোলনের সামনের সারিতে দেখা গিয়েছে প্রবীর দাস, শুভঙ্কর হালদার ও সায়ন লাহিড়িকে। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী যে চার জনের কথা উল্লেখ করেছেন, তাঁরাও এই আন্দোলনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন বলে দাবি।

নবান্ন অভিযান রুখতে জোর কদমে প্রস্তুত পুলিশ। শুরু থেকেই অশান্তির আশঙ্কা করে অতি তৎপর পুলিশ প্রশাসন।  বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদীদের ঠেকাতে মজুত রাখা হয়েছে পাঁচটি জলকামান। সেই প্রেক্ষিতে আন্দোলনকারীদের খোঁজ না মেলায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শুভেন্দু।

এদিকে নবান্ন অভিযান রুখতে অ্যালুমেনিয়াম ব্যারিকেড, জলকামান-কাঁদানে গ্যাসে প্রস্তুত কলকাতা পুলিশও ।

মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযান ঘিরে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে পুলিশ। পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না চলে যায়, তার জন্য কলকাতা পুলিশের নিয়ন্ত্রাণাধীন এলাকায় ছ’হজার পুলিশকর্মী মোতায়েন থাকছেন। নবান্নের আশপাশের গলির মুখেও বসানো হচ্ছে ব্যারিকেড। সোমবার বিকেলেই হাওড়ার শরৎ সদনে পুলিশকর্তাদের এক উচ্চ পর্যায়ের জরুরি বৈঠক হয়েছে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য ও হাওড়া পুলিশের পদস্থ আধিকারিকেরা।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবারের কর্মসূচিতে যে গোলমালের আশঙ্কা রয়েছে, সেই উদ্বেগের কথা সোমবার দুপুরেই জানিয়েছিল পুলিশ। রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ বর্মা ও এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে সেই আশঙ্কার কথা শুনিয়েছিলেন। এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম বলেছেন, ‘‘নবান্নের ওই অভিযানে মহিলা এবং ছাত্রদের সামনে রেখে পিছন থেকে অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি করা হতে পারে বলে খবর পেয়েছি আমরা। পুলিশকে বলপ্রয়োগে উস্কানি দিতেই এটা করা হবে।’’

নবান্ন অভিযান রুখতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই হাওড়া সেতুর উভয়মুখী রাস্তার বাঁ দিকে পর পর দাঁড় করানো হয়েছে পুলিশ ভ্যান, গার্ডরেল। হাওড়া সেতুতে ওঠার ঠিক মুখে রাখা হচ্ছে অ্যালুমিনিয়ামের ব্যারিকেড এবং কাঠের গুঁড়ি। হাওড়ার সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ বিদ্যাসাগর সেতুতে যাতে কোনও মিছিল উঠতে না পারে, সে জন্য সেতুতে ওঠার সমস্ত রাস্তায় থাকবে ব্যারিকেড। টার্ফ ভিউ রোড, হেস্টিংস মাজার, ফারলং গেট ও খিদিরপুর রোডে থাকছে অ্যালুমিনিয়ামের গার্ডওয়াল।

নবান্ন অভিযানকারীদের আটকাতে সাঁতরাগাছি, হাওড়া ময়দান, ফোরশোর রোড, লক্ষ্মীনারায়ণতলা এবং মন্দিরতলায় বড় ব্যারিকেড তৈরির পরিকল্পনা করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও নবান্নের আশপাশে গলির মুখগুলি ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলা হবে বলে স্থির হয়েছে। জমায়েত রুখতে জলকামান, ড্রোন এবং কাঁদানে গ্যাসের উপরে আস্থা রাখতে চাইছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখভালের জন্য চার জন আইজি পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিক ছাড়াও ডিআইজি এবং এসপি পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিকেরা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন। দু’হাজারের বেশি পুলিশকর্মীকে রাস্তায় নামানো হচ্ছে। হাওড়া ছাড়াও কলকাতা-সহ বিভিন্ন পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশকর্মীরা আসছেন। মঙ্গলবার সকালে দেখা যায়, সাঁতরাগাছি বাসস্ট্যান্ড, হাওড়া ময়দানের কাছে ব্যারিকেড তৈরির কাজ পুরোদমে চলছে। হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ কর্তারা ব্যারিকেড তৈরির কাজ দেখভাল করছেন।

প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুরেই তৃণমূল ভবন থেকে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে দু’টি গোপন ভিডিয়ো প্রকাশ করেছিলেন কুণাল ঘোষ, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যরা। ওই ভিডিয়োগুলির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে ওই ভিডিয়োগুলির কথোপকথনে উঠে এসেছে মঙ্গলের কর্মসূচিতে অশান্তি পাকানোর চেষ্টার ইঙ্গিত। সেই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ। তৃণমূলের প্রকাশ করা গোপন ভিডিয়োয় তাঁদের দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ।

Previous articleKolkata Police নবান্ন অভিযানে অশান্তি রুখতে বজ্র আঁটুনি, মোতায়েন থাকবে ৬০০০ পুলিশ
Next articleCalcutta Journalists Club রবীন্দ্র সদনে ক্যালকাটা জার্নালিস্টস ক্লাবের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here