একদিন আগে এলাকায় হয়ে শান্তি বৈঠক। সেখানে শাসকদলের সাংসদ-বিধায়কদের সামনে এলাকায় স্থায়ী বিএসএফ ক্য়াম্পের দাবি ওঠে। এদিন ফের রাজ্যপালের সামনে সেই একই দাবি জানাতে দেখা যায় এলাকার বাসিন্দাদের।
রাজ্য পুলিশে ভরসা নেই, এলাকায় চাই স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্প ! রাজ্যপাল পরিদর্শনে যেতেই তাঁকে এমন আর্জি জানালেন মুর্শিদাবাদের আক্রান্তরা। তাঁদের সাফ কথা, হামলার সময়ে পুলিশের দেখা পাননি তাঁরা। পরবর্তী সময়েও কোনও সাহায্য মেলেনি। তাই স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্পের দরকার তাঁদের।
শনিবার সকাল থেকে মুর্শিদাবাদের নানা প্রান্তে যাচ্ছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। পরিদর্শনে বেরিয়ে প্রথমেই জাফরাবাদে নিহত হরগোবিন্দ এবং চন্দন দাসের বাড়িতে যান রাজ্যপাল। তারপর ওই এলাকায় আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলেন।

সেখানে রাজ্যপালের সামনে সকলে কান্নায় ভেঙে পড়ে জানান, তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে ক্রমাগত। এলাকা ছেড়ে চলে না গেলে ক্ষতি করা হবে বলে ভয় দেওয়া হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি, বিএসএফ যতদিন আছে ততদিন তাঁরা সুরক্ষিত। তাঁরা চলে গেলেই ফের হামলা হতে পারে তাঁদের ওপর। তাই স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্পই সমস্যার সমাধান করতে পারে।

রাজ্যপাল আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলে প্রথমেই শান্তি ফেরানোর বার্তা দেন। বলেন, শান্তি ফেরানোই মূল লক্ষ্য। তাতে জোর দিতে হবে। আর এর জন্য রাজ্য সরকারের উচিত উপযুক্ত পদক্ষেপ করা। এই পরিপ্রেক্ষিতে আবার তিনি আক্রান্তদের রাজভবনের পিসরুমের ফোন নম্বর দিয়েছেন। বলেছেন, কোনও অসুবিধা হলেই ফোন করতে। অন্যদিকে, স্থানীয়দের বিএফএফ ক্যাম্পের দাবি শুনে তিনি বলেন, বোঝাই যাচ্ছে এলাকার মানুষ কতটা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাঁরা অনেক পরামর্শ দিয়েছেন এবং সেগুলি বিবেচনা করা হবে।

মুর্শিদাবাদের আক্রান্ত সাফ বলছেন, প্রথম থেকেই পুলিশের ভূমিকা ছিল নগণ্য। হামলার সময়ে এলাকায় দেখাই যায়নি তাঁদের। তাই এলাকায় পুলিশ থাকা-না থাকা তাঁদের কাছে সমান। এই কারণেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর ক্যাম্প তাঁদের নিরাপত্তার ইস্যুতে কার্যত আবশ্যিক হয়ে উঠেছে। বর্তমানে রাজ্যে রয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা। তাঁরাও একাধিক এলাকায় গিয়ে আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

কমিশনের প্রতিনিধিদের কাছেও তাঁরা অভিযোগ করে বলেছেন, ‘চিন্তায়, আতঙ্কে ঘুমাতে পারছি না।’ যদিও কমিশনের সদস্যরা সাধারণ বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করেন। বলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এই বিষয় সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছে। কমিশনের সদস্যরা বিস্তারিত তথ্য তাঁদের জানাবেন।
