ওয়াকফ (সংশোধিত) আইন বাতিলের দাবিতে ফের উত্তাল হয়ে উঠল মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর এলাকা। শুক্রবার দুপুরে অশান্তি চরমে পৌঁছয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথরবৃষ্টি চলে। পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানো, সাধারণ যানবাহন ও বাইক ভাঙচুর ,একাধিক ঘটনায় অশান্তি ছড়িয়েছে শাজুরমোড় ও ধুলিয়ান সংলগ্ন এলাকায়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় সড়ক ১২ অবরোধ করে শতাধিক মানুষ বিক্ষোভে সামিল হন। পুলিশ অবরোধ সরাতে গেলে বিক্ষোভকারীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহনে পাথর ছোড়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটায়।
এই ঘটনার মাঝেই ধুলিয়ানে স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমানের অফিসে হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা। ভাঙচুর করা হয় অফিসের মধ্যে। একপ্রকার প্রাণে বাঁচতে হয় সাংসদকে। তিনি জানান, “আমি তখন শাজুরমোড় পার হচ্ছিলাম। বিক্ষোভকারীরা আমাকে ঘিরে ধরে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করে। কোনও সংগঠনের পতাকা বা নেতা সেখানে ছিল না। পরে পুলিশ আমাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে।”
ঘটনার পর মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন অংশে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও। মুর্শিদাবাদের জেলা শাসক রাজর্ষি মিত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “অঞ্চলে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হচ্ছে।”
পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ধুলিয়ানগঙ্গা ও নিমতিতা স্টেশনের মাঝে ট্র্যাক অবরোধের জেরে অন্তত পাঁচটি ট্রেন আটকে পড়েছে। এর আগে, ৮ এপ্রিল একই ইস্যুতে জঙ্গিপুরের উমরপুরে জাতীয় সড়ক অবরোধ ও পুলিশের গাড়ি পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছিল।
ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারকে নিশানা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, “রাজ্য জুড়ে যেভাবে দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে, তা বন্ধ করতে ব্যর্থ রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ নিষ্ক্রিয়।” তিনি মুর্শিদাবাদ, দুই চব্বিশ পরগনা, হুগলি, মালদা ও বীরভূম জেলার একাধিক থানার আওতাভুক্ত এলাকায় সংবিধানের ৩৫৫ ধারা প্রয়োগের দাবি জানান।
উল্লেখ্য, ওয়াকফ বিল পাশ হলে পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক হতে পারে, তা আগেই আঁচ করেছিলেন বিজেপি বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ। তিনি বলেছিলেন,”মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত। সামাজিক মাধ্যমের বিভিন্ন পোস্ট দেখে আমরা আশঙ্কা করছি, ওয়াকফ বিল নিয়ে মুর্শিদাবাদে আবারও অশান্তি হতে পারে।”