প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘মন কী বাত’ অনুষ্ঠানে পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে আবারও মুখ খুললেন।
‘প্রত্যেক ভারতীয়ের রক্ত ফুটছে’। জঙ্গি হামলার কড়া জবাব দেবে ভারত। ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে ফের একবার দেশবাসীকে আশ্বস্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে ১৪০ কোটি দেশবাসীর সঙ্গে গোটা বিশ্ব রয়েছে বলেও জানান মোদী।
২২ এপ্রিলের ঘটনার পর তিনি শোক প্রকাশ করেন এবং ভারতীয় জনগণের প্রতি নিজের সমবেদনা জানান। মোদী বলেন, “পহেলগামের ঘটনা দেখেই প্রত্যেক ভারতীয়ের রক্ত ফুটছে। আমরা জঙ্গি হামলার কঠোর জবাব দেবো।’’ তিনি আরও বলেন, “এই হামলা ভারতীয়দের মনকে নাড়া দিয়েছে এবং দেশের প্রত্যেক প্রান্ত থেকে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা রয়েছে।”

কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়ার পর বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কাজ করা হচ্ছিল। জম্মু ও কাশ্মীরের শত্রুরা সেটা সহ্য করতে পারেনি বলে উল্লেখ করেন তিনি। মোদী বলেন, ‘যখন কাশ্মীরে শান্তি ফিরে আসছিল, স্কুল-কলেজে চালু ছিল, নির্মাণ কাজে গতি এসেছিল, গণতন্ত্র শক্তিশালী হচ্ছিল, পর্যটকদের সংখ্যা রেকর্ড হারে বৃদ্ধি পাচ্ছিল, জনগণের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছিল এবং তরুণদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছিল, ঠিক সেই সময়ে দেশের শত্রুরা, জম্মু ও কাশ্মীরের শত্রুরা এটা পছন্দ করেনি।’

মোদী আরও বলেন, “যখন কাশ্মীরে শান্তি ফিরছিল, তখনই শত্রুরা আবারও সেখানে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চেয়েছিল।” তিনি একে একটি বড় ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “কাশ্মীরে শান্তি স্থাপনের চেষ্টা চলছে, কিন্তু কিছু শক্তি শান্তি সহ্য করতে পারেনি এবং তারা আবার কাশ্মীরকে অশান্ত করতে চেয়েছে।”

এই পরিস্থিতিতে মোদী ১৪০ কোটি ভারতীয়দের একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “এই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ১৪০ কোটি ভারতীয়ের একতাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।” তিনি জানান, পুরো বিশ্ব দেখছে এবং ভারতের মধ্যে একতাবদ্ধ প্রতিক্রিয়া রয়েছে। হামলার পর বিশ্বজুড়ে সমবেদনা আসছে এবং তিনি নিজেও অনেক বিশ্বনেতার কাছ থেকে ফোন পেয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নিহতদের পরিবারকে আশ্বস্ত করেন যে, তাদের ন্যায় পাওয়া নিশ্চিত হবে এবং হামলাকারীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। পহেলগাম হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে, যদিও পাকিস্তান এর দায় অস্বীকার করেছে।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী মোদী সৌদি আরবের সফর মাঝপথে ছাড়েন এবং দ্রুত ভারতে ফিরে আসেন। তিনি পহেলগাম হামলার পর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে থাকেন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কাশ্মীরে গিয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিয়েছে, যার মধ্যে সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করা এবং পাকিস্তানিদের জন্য ভিসা বাতিলের মতো সিদ্ধান্ত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে, ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী পহেলগাম হামলায় জড়িত জঙ্গিদের খুঁজে বের করতে তল্লাশি শুরু করেছে।
https://x.com/narendramodi/status/1916364195961962845?t=IySr4a_qKwT_rrj7iLedQw&s=19

উল্লেখ্য, পহেলগাম হামলার পরেই বিহারে একটি জনসভায় যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘সমগ্র বিশ্বকে বলছি, ভারত সমস্ত সন্ত্রাসবাদীদের ও তাদের সহযোগীদের খুঁজবে, চিহ্নিত করবে এবং তাদের উপযুক্ত শাস্তি দেবে।’ হামলার পরেই বেশ কিছু কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত।