MatuaBaruni Mela2025: ফের মতুয়া মহামেলার দায়িত্বে মমতাবালা ঠাকুর ,শুভেচ্ছা জানিয়ে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর, অনুমতি মিলতেই প্রস্তুতি শুরু

0
10

হাইকোর্টের নির্দেশ মেনেই মতুয়াদের বারুনি মেলা নিয়ে বুধবার দু’পক্ষকে নিয়ে শুনানি করলেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) পিনাকী রঞ্জন প্রধানের উপস্থিতিতেই শুনানি হয়েছে। প্রায় একঘণ্টা শুনানির শেষে দু’পক্ষই এ বছর মতুয়া মেলা একসঙ্গে করার পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন।

যদিও সন্ধ্যায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী জানিয়ে দেন, প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দিতে না পারায় বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের গোষ্ঠীকে মেলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। অন্যান্য বারের মতো মেলার দায়িত্ব পেয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের সংগঠনের মতুয়ারা। মেলার শুভেচ্ছা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সম্প্রতি বারুনির মেলার অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন বিজেপি প্রভাবিত অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। সেই মামলার জমা পড়া নথি দেখে গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার পর্যবেক্ষণ, ১৯৭৩ সালের পঞ্চায়েত আইন আসার পরেই অবলুপ্ত হয়ে গিয়েছে ১৯৬৩ সালের জেলা পরিষদের আইন।

তার পরেও জেলা পরিষদ ওই আইনে একপক্ষকে মেলার অনুমতি দিয়েছে। যার আইনি কোনও বৈধতা নেই বলেই পর্যবেক্ষণ বিচারপতির। তাই ওই অনুমতি বাতিল করে দেয় আদালত। পাশাপাশি ১৯ মার্চের মধ্যে দু’পক্ষকে আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয় জেলা পরিষদকে।

হাইকোর্টের নির্দেশ মেনেই বুধবার দু’পক্ষকে নিয়ে জেলা পরিষদে শুনানি সারেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) পিনাকী রঞ্জন প্রধান। শুনানিতে মমতাবালা ঠাকুরের প্রতিনিধি হিসেবে হাজির ছিলেন তাঁর মেয়ে তথা বাগদার তৃণমূল বিধায়ক মধুপর্ণা ঠাকুর, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ ঘোষ ও কয়েকজন আইনজীবী। শান্তনুর প্রতিনিধি হিসেবে হাজির ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুখেন্দু গায়েন ও কয়েকজন আইনজীবী।

প্রায় একঘণ্টা ধরে চলে শুনানি। শুনানির শেষে মেলার অনুমতি নিয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি এ বছর দুই কমিটি একসঙ্গে মিলেমিশে মতুয়া মেলা করার পক্ষেই মত প্রকাশ করে।

যদিও রাতেই মেলার অনুমতি জেলা পরিষদ দেয় মমতাবালাকে। অনুমতির কথা জানিয়ে জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন, ‘মমতাবালা ঠাকুরের প্রতিনিধিরা মেলা করার পক্ষে যাবতীয় ডকুমেন্টস জমা দিয়েছেন। শান্তনু ঠাকুরের প্রতিনিধিরা প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস দিতে পারেননি।

সব দিক খতিয়ে দেখে মেলার অনুমতি জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে মমতাবালা ঠাকুরকে দেওয়া হয়েছে।’ তার আগে দিল্লি থেকে মমতাবালা বলেন, ‘মেলা করার অনুমতি আমরাই পাব। মেলা করার জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে সমস্ত কাগজপত্র জমা দিয়েছি। আগেও আমি বলেছি, একসঙ্গে মিলে মেলা করার জন্য। কিন্তু ওরা অশান্তি করেছে। এ বারেও আমরা চাই, দু’পক্ষ মিলে একসঙ্গে মেলা করতে।’

নারায়ণ গোস্বামী জানান, মেলা করার জন্য স্থানীয় থানা, পঞ্চায়েত, পূর্ত, বিদ্যুৎ, দমকল, মহকুমা শাসকের নো অবজেকশন চিঠির প্রয়োজন হয়।এই সব নথিই প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছেন মমতাবালা ঠাকুরের প্রতিনিধি মধুপর্ণা ঠাকুর। কিন্তু শান্তনু ঠাকুরের প্রতিনিধি সে সব নথি দিতে পারেননি। সবদিক খতিয়ে এ দিন সন্ধ্যায় অনুমতি দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, শান্তনু ঠাকুরের প্রতিনিধি সুখেন্দু গায়েন বলেন, ‘পুরোনো আইন অনুযায়ী মমতাবালা ঠাকুর যে অনুমতি পাচ্ছেন, সেটা নতুন আইন অনুযায়ী আর পাওয়া উচিত নয়। মেলার অনুমতি শান্তনু ঠাকুরেরই পাওয়া উচিত।’ তবে নথিপত্র তাঁদের নেই কেন, তার উত্তর দেননি তিনি। তিনি জানান, দু’পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করা হবে। সেই কমিটির মাধ্যমে মতুয়া মেলা পরিচালনা হবে।

এই প্রসঙ্গে মধুপর্ণা ঠাকুর বলেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে আমার মা মেলার অনুমতি পেয়ে এসেছেন। মেলা করার জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজ রয়েছে। শান্তনু ঠাকুর, সুব্রত ঠাকুর আমার দাদা। একই রক্ত আমাদের। বাগদা নির্বাচনের সময়েও দাদার কাছে আশীর্বাদ চেয়েছি। এ বার মতুয়া মেলা একসঙ্গে মিলে করা নিয়েও দাদার সঙ্গে কথা বলব। শান্তনু ঠাকুরের প্রতিনিধিদের অংশিদার হিসেবে নিয়ে একসঙ্গে মেলা করতে চাই।’

মতুয়াদের বারুনি মেলার ইতিহাস ২১৪ বছরের। গত বছর এই ইস্যুতে ঠাকুর পরিবারের দুই প্রতিনিধি মমতাবালা ঠাকুর এবং শান্তনু ঠাকুরের দ্বৈরথে বিরক্ত হন সাধারণ মতুয়া ভক্তরা। মতুয়াদের ধর্মগুরু হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথিতে প্রতি বছর চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশীতে ঠাকুরবাড়ি সংলগ্ন মাঠে শুরু হয় বারুনি মেলা। ২৭ মার্চ ভোর থেকেই শুরু পুণ্যস্নান। মেলা চলবে সাতদিন ধরে।

Previous articleOld Age Pension মায়ের জন্য ভালোবাসা: ৯৪ বছরের বৃদ্ধা মা’কে বার্ধক্য ভাতার টাকায় মিষ্টি দই কিনে খাওয়ান বনগাঁর মৈতোষ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here